সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ষবরণের আনন্দে প্রাণ গেল খাঁচাবন্দি একাধিক অবলা প্রাণীর। যেন এক হরষে বিষাদ। নয়া বছর উদযাপনের আনন্দে ওড়ানো ফানুস থেকে বিধ্বংসী আগুন লাগে পশ্চিম জার্মানির এক চিড়িয়াখানায়। খাঁচার মধ্যেই অসহায়ভাবে পুড়ে মৃত্যু হয় বহু জন্তুর। আগুনের তীব্রতা নাকি এতটাই ছিল যে নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। চিড়িয়াখানার কয়েক কিলোমিটার অবধি ফানুস, আতসবাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ থাকলেও কীভাবে আইন অমান্য করে দীর্ঘ দিন এসব চলছে, উঠছে প্রশ্নও।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি সূত্রে খবর, চিড়িয়াখানার অনতিদূরেই এক জায়গায় নিউ ইয়ার উদযাপনের জন্য ফানুস ওড়ানো হচ্ছিল। এর এতেই ঘটে বিপত্তি। কখন সে আগুন ডাচ সীমান্তের কাছে অবস্থিত এই বিখ্যাত বার্লিন চিড়িয়াখানায় পড়ে, তা আর কেউ ঠাহর করতে পারেনি প্রথমটায়। সেই রাতেই ভয়াবহ আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়ে যায় চিড়িয়াখানার একাংশ। বার্লিন চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, সম্পূর্ণ এপ হাউসটাই আগুনে ছাই হয়ে গিয়েছে। বেঁচে নেই একটি জন্তুও।
[আরও পড়ুন: ‘ও খুশি, আর আমি ওকে নিয়ে চিন্তিত’, সাক্ষাৎকারে খোলাখুলি উদ্বেগপ্রকাশ গ্রেটার বাবার]
প্রাণ গিয়েছে গরিলা, ওরাংওটাং, শিম্পাঞ্জি-সহ অন্তত ৩০টি বন্যপ্রাণীর। মৃত জন্তুদের মধ্যে রয়েছে শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং, মারমোসেটস, দুটি গোরিলা, প্রচুর পাখি, বাদুড় ইত্যাদি৷ পুলিশ জানিয়েছে, ফানুস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। যেগুলো চিনা ফানুস বলেই ধারণা। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে জানায়, যে বিষয়ে ভয় ছিল, সেই আশঙ্কাই সত্যি হল! বানরদের খাঁচায় সম্ভবত কোনও প্রাণীই বেঁচে নেই। নিরাপত্তার আশঙ্কায় আগে থেকেই চিনা ফানুস নিষিদ্ধ ওই অঞ্চলে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই এসব ফানুস ওড়ানো হয়।
নর্থ রাইন-ওয়েফ্যালিয়ায় ১৯৭৫ সালে গড়ে ওঠা দু’ হাজার বর্গমিটারের এই চিড়িয়াখানায় পাখি, বাদুড়, বানর ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। ওই চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ গোরিলা কিদোগো এবং তার পরিবার৷ তবে এই বিধ্বংসী আগুনের কোপ থেকে তাদের গোটা পরিবারটাই বেঁচে গিয়েছে, এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্রে্র খবরে। বানর ও গরিলার অংশটি চিড়িয়াখানার মূল অংশ থেকে খানিক দূরে। সেখানেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বর্ষবরণের রাতে। তবে কেন আইন অমান্য করে ফানুস ওড়ানো হয় ওই অঞ্চলে? সেই প্রশ্ন তুলেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা।