সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশাল রুখাশুখা জঙ্গলে পড়ে রয়েছে শয়ে শয়ে হাতির দেহ। আকাশপথে উড়ে যাওয়ার সময় সে দৃশ্য চোখে পড়ায় শিউড়ে উঠেছিলেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আধিকারিকরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বতসোয়ানার (Botswana) জঙ্গলে হাতির মৃত্যুতে সংশ্লিষ্ট বন আধিকারিকদের সতর্ক করা হয়েছিল। জুনের শেষে দেখা গেল, সেই চিত্র আরও ভয়াবহ হয়েছে। গত দু’মাসে সেখানে সাড়ে তিনশো হাতির মৃত্যু হয়েছে। চরম উদ্বিগ্ন বন্যপ্রাণপ্রেমীরা। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, তার শক্তপোক্ত কারণ খুঁজে না পাওয়ায় চিন্তা আরও বাড়ছে। বিষ প্রয়োগ করেই কি হাতিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে চোরাশিকারির দল? এই জল্পনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, বতসোয়ানার জঙ্গলের কাছে ওকাভাঙ্কো বদ্বীপ এলাকায় শয়ে শয়ে হাতির মৃত্যুতে ষড়যন্ত্র দেখছেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষক নিয়াল ম্যাককান। তিনি বলছেন, ”ঘটনা পুরোপুরি ধাঁধায় ফেলেছে। কতজন হাতি মারা গিয়েছে তা গুনতে গিয়ে প্রায় তিনঘণ্টা ধরে আমরা আকাশে চক্কর কেটেছি। সংখ্যা সাড়ে তিনশো। এখন খরা নেই, রোগজীবাণুর সংক্রমণও নেই। তা সত্ত্বেও কীভাবে মৃত্যু, বোঝা যাচ্ছে না।”
রহস্য আছে আরও। আফ্রিকার জঙ্গলে অন্যতম সম্পদ হাতিদের মৃত্যুর কারণ জানতে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল নমুনা। এক সপ্তাহ পরও সেই রিপোর্ট আসেনি। তাহলে কি বিষ প্রয়োগ করে হাতিদের খুন করছে চোরাশিকারির দল? এই জল্পনার কথা পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছে বতসোয়ানা সরকার। প্রশাসনের বক্তব্য, মৃত হাতিদের দাঁত, শুঁড় সবই অক্ষত রয়েছে। দেহের অন্যান্য অঙ্গহানিও হয়নি। চোরাশিকারিরা সাধারণত এসব বহুমূল্য বন্যপ্রাণ সামগ্রী কালোবাজারির জন্যই হাতি, গণ্ডার হত্যা করে থাকে।
আরও একটি আশঙ্কার কথা মনে করা হচ্ছে। আচমকা এই এলাকার মাটি বা জল দূষণ হাতিদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে না তো? এ বিষয়ে তাঁরা আবার মহামারী করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) কথাও উড়িয়ে দিচ্ছে না। কিন্তু জঙ্গল জীবনে করোনার হানা, তাও কি সম্ভব? ম্যাককানের আশঙ্কা, চরিত্র বদল করে বন্যপ্রাণীদের উপরেও এবার করোনা থাবা বসাচ্ছে। তবে কোনওকিছুই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না, পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত। ততদিনে কি আরও কিছু হাতির লাশ গুনতে হবে? চিন্তা যেন কিছুতেই কাটছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.