অভিরূপ দাস: বারবার পরিবর্তন নয়, ধুয়ে ফের ব্যবহার করা যাবে পিপিই কিট-এন৯৫ মাস্কও। এমনই মেশিন তৈরি করল ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টক্সিকোলজি রিসার্চ (Indian Institute of Toxicology Research) বা আইআইটিআর। সংস্থার দাবি, “করোনা (CoronaVirus) চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালে যে মোটা টাকা গুনতে হচ্ছে মধ্যবিত্তকে, সেই মুশকিল এবার আসানের পথে। কারণ, এই মেশিনের ব্যবহারে কমবে পিপিই কিট ও মাস্কের খরচ।”
করোনা আক্রান্ত রোগীরা থাকছেন কোভিড ওয়ার্ডে। পিপিই কিট না পরে সেখানে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। ফলে প্রতিদিনই চিকিৎসককে বিশেষ পোশাক পরে আসতে হচ্ছে। যে পোশাকে রয়েছে জুতো ঢাকার গার্ড, চোখ ঢেকে রাখা আই প্রোটেকশন গ্লাস, ছিটকে আসা লালারস আটকাতে ফেস শিল্ড, হেড কভার ও গাউন। দেখা গিয়েছে, চিকিৎসা বাবদ দেড় লক্ষ খরচ হলে ১৪ দিনে পিপিই কিটের জন্য দিতে হচ্ছে বিশ হাজার টাকা! মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, এক পিপিই কিট একদিনের বেশি ব্যবহার করা যায় না। ভাল মানের পিপিই কিটের দাম ১৭০০ থেকে ১১০০ টাকা। রোজ একটা করে পিপিই কিট কিনতে হাসপাতালেরও খরচ অনেক। ডা. অয়ন দাস বলেন, “৮০০ টাকায় যে কিট বিক্রি হচ্ছে তা আদৌ পিপিই কিট নয়। মোটা রেইন কোট মাত্র।” আর এই কারণেই বাড়ছে চিকিৎসার খরচ। তবে নতুন এই মেশিন এখন আশার আলো।
কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছিলেন, আইআইটিআর লখনউ একটি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে গাঁটছড়া বেধে একটি ডিসইনফেকশন মেশিন বানিয়েছে। সম্প্রতি তার ট্রায়ালও শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, এই মেশিন এন৯৫ মাস্ক, পিপিই কিট মুহূর্তে সংক্রমণ মুক্ত করতে পারে। এর ফলে হাসপাতালকে প্রতিদিন নতুন নতুন কিট কিনতে হবে না। রোগীকেও নতুন কিটের টাকা গুনতে হবে না। এতে প্রায় প্রতিদিন ২লক্ষ টাকা করে বাঁচাতে পারবে হাসপাতালগুলি। ২০ টা ওয়ার্ড থাকলে প্রায় ২০০ টা করে পিপিই লাগে রোজ। পিপিই কিট পরে জল খেতে পারেন না চিকিৎসকরা। বারবার তাদের পিপিই কিট পরিবর্তন করতে হয়। নয়া মেশিন এলে সে সমস্যাও মিটবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার জানিয়েছেন, এমন মেশিন এলে স্বাস্থ্যদপ্তরেরও অনেক উপকার হবে। তাঁর কথায়, “এইমসের গাইডলাইনে আছে ৯৬ ঘণ্টা ফেলে রেখে দিলে পিপিই কিট জীবাণুমুক্ত হয়ে যায়। তবে সেটা সময়সাপেক্ষ। এই মেশিন যদি তা মুহূর্তে করে দেয় তবে সেটা করোনা চিকিৎসায় নতুন দিশা দেখাবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.