সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গাছ-গাছালির নামে ছোট্ট ছোট্ট জনপদ। সময় যত এগিয়েছে, সেই জনপদ ক্রমশ গ্রাম, এমনকী শহর হয়ে উঠেছে। কিন্তু সেই সব জনপদ থেকে হারিয়ে গিয়েছে চেনা গাছগুলিই। পশ্চিমবঙ্গে এমন শহরের সংখ্যা কম নেই। যেমন আসানসোল শহরে আর ‘আসান’ গাছের দেখা মেলে না। পুরুলিয়ার কুসুমবনি গ্রাম থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে কুসুম গাছের বনই। তাই পুরুলিয়ার বনদপ্তরের বনসম্প্রসারণ বিভাগ বনমহোৎসবের (১৪-১৫ জুলাই) আগেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পে এই রকম দশটি জনপদ বা গ্রামে এই কাজ হাতে নিয়েছে।
এই দশটি গ্রামে এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে ৬২৫টি করে বৃক্ষরোপণ করে সেই হারানো গাছগুলিকে ফিরিয়ে আনবে। রবিবারই পুরুলিয়ার মাঠা বনাঞ্চল থেকে এই কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়। এবার বনমহোৎসবেও ‘রি-গ্রিনিং বেঙ্গল’ কর্মসূচিতে রাজ্যজুড়ে সাড়ে তিন কোটি গাছ লাগানো হবে। বনমন্ত্রীর কথায়, “পুরুলিয়ায় বনসম্প্রসারণ বিভাগের এই উদ্যোগ দারুন। এই কাজ আমরা রাজ্যজুড়ে করতে পারি কিনা সেই ভাবনা-চিন্তা চলছে।”
সভ্যতার অগ্রগতি আর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা। এই দুয়ের ফাঁসে নানান গাছের নামে সেই সব গ্রামে ওই বৃক্ষরাশির আজ কোন অস্তিত্বই নেই। অথচ আজ থেকে কয়েক বছর আগেও পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের মহুলবাড়ি গ্রামে মহুল জঙ্গলে ম ম করত ওই ফুল। একইভাবে বরাবাজারের শালবনি গ্রামে শাল জঙ্গলের ছায়ায় ক্লান্ত পথিকরা যেমন বিশ্রাম নিতেন। তেমনই ওই গাছে বাসা বাঁধত টিয়া। এখন সেসব অতীতl পুরুলিয়ার বনসম্প্রসারণ বিভাগের ডিএফও অনুপম খাঁ বলেন, “এই কাজের মধ্য দিয়ে শুধু হারানো গাছকে নয় আমরা সেই সব জনপদ বা গ্রামের নামের মহিমাও ফিরিয়ে আনছি। এই কাজ হবে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে।” তাই রঘুনাথপুরের গামারকুড়ি গ্রামে গামার গাছ, হুড়ার অর্জুনজোড়া গ্রামে অর্জুন গাছ, এই ব্লকেরই জামবাদ গ্রামে জাম, জয়পুরের কাঁঠালতার গ্রামে কাঁঠাল গাছ লাগিয়ে গ্রামের নামানুসারে বৃক্ষরোপণ প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বনদপ্তর।
ছবি- অমিত সিং দেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.