সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবী জুড়ে করোনা ভাইরাসের দাপট। মহাকাশে অবশ্য তার বালাই নেই। তাই সেখানে এতদিন দিব্যি ছিলেন সকলে। টানা ২০৫ দিন কাটিয়ে শুক্রবার আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে এই করোনা আক্রান্ত পৃথিবীতে ফিরলেন ৩ নভশ্চর। সুরক্ষাবর্ম পরে পৃথিবীর মাটিতে পা রেখেই তাঁরা বিশ্ববাসীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করলেন দুই মার্কিন এবং এক রুশ মহাকাশচারী। সম্পূর্ণ অন্য পরিবেশে থাকা সত্ত্বেও তাঁদের একমাস চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণে রাখবেন, হবে করোনা পরীক্ষাও।
শুক্রবার সকাল ১১.১৬। কাজাখস্তানের দক্ষিণ-পূর্বের জমিতে এসে নামল সয়ুজ ক্যাপসুল। সেখান থেকে নেমে এলেন তিন নভশ্চর – আমেরিকার জেসিকা মেয়ার এবং অ্যান্ড্রু মরগ্যান, রাশিয়ার ওলেগ স্ক্রিপোচকা। পরনে ঘন নীল প্যারাস্যুট, মুখ ঈষৎ গম্ভীর, চিন্তিত। তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি দল। তাঁদের সকলের শরীর এবং মুখ ঢাকা ছিল পিপিই, মাস্কে। সেখানেই হয়ে গেল তিনজনের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা। কাজাখস্তানে মহাকাশ যানের এই অবতরণস্থল থেকে যে যার দেশে ফেরার বিমান ধরেছেন। রাশিয়ার বৈকানুর হয়ে মস্কো ফিরলেন ওলেগ। জেসিকা এবং অ্যান্ড্রুকে বিশেষ বিমানে ফেরানো হয়েছে আমেরিকায়।
[আরও পড়ুন: করোনাকে জব্দ করতে শুরু প্রতিষেধকের ট্রায়াল, বিশ্বকে আশার আলো দেখাচ্ছে চিন]
কিন্তু এঁদের কেন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে অথবা COVID-19 পরীক্ষা হবে? তাঁরা তো পৃথিবীর বাইরে ছিলেন, যেখানে ভাইরাসের সংক্রমণের নামগন্ধও ছিল না। তাহলে কেন? রাশিয়ান স্পেস এজেন্সি রসকসমস সূত্রে খবর, স্পেস কর্পোরেশনে কর্মরত অন্তত ৫০ জনের শরীরে মিলেছে করোনার জীবাণু। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পৃথিবীতে ফেরা নভশ্চরদের রাখা হবে কোয়ারেন্টাইনে। আর আমেরিকায় তো প্রবল দাপট করোনার। ফলে অন্য পরিবেশ থেকে ফিরেই যদি এই মহাকাশচারীরা আক্রান্ত হন, তাই জেসিকা এবং অ্যান্ড্রুকেও একমাস আলাদা রাখা হবে। মেয়ারের কথায়, ” পৃথিবীর এমন আকস্মিক পরিবর্তন দেখে আমরা চমকে গেছি। তবু বলি, মহাকাশ থেকে পৃথিবী এখনও ততটাই সুন্দর দেখতে লাগছে। বোঝার উপায়ই নেই যে একটা মহামারিতে কাঁপছে আমাদের গ্রহ।” তবে মহাশূন্যে ভেসে থাকার পর কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ডও তাঁরা উপভোগ করবেন বলেই মনে করছেন নাসার দুই নভোচর।