সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রিকেট যদি ‘জেন্টলম্যান্স গেম’ হয়, তবে রবিবাসরীয় লর্ডসে সেই গেমের জেন্টলম্যান নিঃসন্দেহে কেন উইলিয়ামসন। ফাইনালের মেগা ম্যাচে তিনি হারেননি। হারেনি তাঁর দলও। কিন্তু আটের গেরোয় আটকেই অধরা রয়ে গেল ইতিহাস। আট বছরে দু’বার ফাইনালে পৌঁছেও চ্যাম্পিয়ন হওয়া হল না নিউজিল্যান্ডের। হোম ফেভরিটদের হাতে ট্রফি উঠল ঠিকই। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীদের মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নিলেন উইলিয়ামসনই।
মহেন্দ্র সিং ধোনি যদি হন ক্যাপ্টেন কুল, তাহলে উইলিয়ামসন সুপার কুল অধিনায়ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবেই প্রশংসা কুড়োলেন নিউজিল্যান্ড দলের নেতা।একধাপ এগিয়ে অনেকে আবার বলেছেন, যে বিচক্ষণতা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন কেন, তাতে তাঁকেই দেশের প্রেসিডেন্ট করে দেওয়া উচিত। নেটিজেনদের একাংশের দাবি, কিউয়িদের সঙ্গে অবিচার করা হল। ম্যাচ টাই করেও জিতে গেল ইংল্যান্ড। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে যে আবেগের কোনও স্থান নেই। তাই তো মাত্র আটটা বাউন্ডারি বেশি মারার সৌজন্যে প্রথমবার বিশ্বকাপ ঘরে তুলল ইংল্যান্ড (২৪)।
[আরও পড়ুন: বিশ্বজয় করেও উইলিয়ামসনের কাছে ক্ষমা চাইলেন ম্যাচের সেরা স্টোকস]
তবে ফল যাই হোক না কেন, অধিনায়ক হিসেবে কঠোর সত্যিটা মেনে নিয়ে সতীর্থদের সান্ত্বনা দিলেন অধিনায়কই। পাঁচ আঙুলের নিচে হতাশা লুকিয়ে ঠোঁটের কোণে টানলেন সৌজন্যের হাসি। ম্যাচ শেষে অথবা সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কোথাও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন না উইলিয়ামসন। জিজ্ঞেস করলেন না, কেন প্রথম বলেই জেসন রয়ের আউটটা দেওয়া হল না? কেন শেষ ওভারে স্টোকসের ব্যাটে ভুল করে লেগে বল বাউন্ডারিতে গেলে ছ’রান দেওয়া হয়? তিনি তো জেন্টলম্যান। তাই এসব প্রশ্নকে মনের কোণে জায়গা দেননি। বরং ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্সেরই প্রশংসা করে অবলীলায় বলে দেন, “রাগ নয়। শুধু দুঃখই হচ্ছে।” এমন সহজ মনের মানুষটিকে সম্মান না জানিয়ে কি থাকা যায়? তাই তো ম্যাচ শেষে ঐতিহাসিক লর্ডসে উপস্থিত হাজার হাজার দর্শক উইলিয়ামসন ও গোটা নিউজিল্যান্ড দলের জন্য দাঁড়িয়ে হাততালি দিলেন।
টুর্নামেন্টের সেরার নাম ঘোষণার সময়ও কিউয়ি অধিনায়কের প্রতিক্রিয়া ছিল দেখার মতো। টুর্নামেন্ট সেরার তকমা যে তিনিই পাচ্ছেন, বিশ্বাসই করতে পারেননি। নিজের নামটা শুনেই অবাক নয়নে জিজ্ঞেস করেন, ‘আমি?’ আর এখানেই জিতে গিয়েছেন তিনি। গোটা টুর্নামেন্টে ভাল খেলে সেমিফাইনালে ফেভরিট ভারতকে হারিয়ে ফাইনালের সুপার ওভারেও টাই করে হার মেনে নেওয়া কোনও দলের পক্ষে সত্যিই কঠিন। তবে ট্রফিতে সোনালি অক্ষরে মর্গ্যানবাহিনীর নাম লেখা হলেও গোটা দুনিয়ার ক্রিকেটভক্তদের ভালবাসা উপহার পেলেন বিশ্বকাপের ট্র্যাজিক নায়কই।
[আরও পড়ুন: হাড্ডাহাড্ডি ফাইনালে হার মানলেন ফেডেরার, উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হলেন জকোভিচ]
“There’s a lot of disappointment. The guys are feeling it” – #KaneWilliamson #CWC19 | #CWC19Final pic.twitter.com/Nc3Viobcd9
— Cricket World Cup (@cricketworldcup) July 14, 2019