Advertisement
Advertisement

Breaking News

ইস্টবেঙ্গল

কোয়েসের সঙ্গে ঝামেলার জের, আগামী মরশুমে আইএসএলে নেই ইস্টবেঙ্গল

কোয়েসের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে এফএসডিএল।

East Bengal FC not to play ISL next Season
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:February 28, 2020 9:32 am
  • Updated:February 28, 2020 10:49 am

দুলাল দে: সামনের মরশুমে ইস্টবেঙ্গল কি আইএসএল খেলতে পারবে? অন্তত ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের তো সেরকমই দাবি। কিন্তু ভারতের বাণিজ্য নগরী (এখন ভারতীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক শহরও বলা যায়) মুম্বইতে পা দিয়ে একটু খোঁজ খবর করে মনে হল, সামনের মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলা শুধু কঠিন নয়, বেশ কঠিন।

কোয়েস আর ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে চুক্তির জট এমন ভাবে আটকে আছে, যা তাড়াতাড়ি খুলে আইএসএল খেলা কিন্তু এখনও বেশ কঠিন মনে হচ্ছে। লাল-হলুদের জন্য এই অন্ধকার পরিস্থিতি কাটানোর ব্যাপারে একমাত্র উদ্যোগী চরিত্র হিসেবে ভূমিকা নিতে পারত ‘এফএসডিএল’ । কিন্তু সেই এফএস ডিএলও জানিয়ে দিয়েছে, কোয়েস আর ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি বিচ্ছেদ এমনকি ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলার ব্যাপারে নিজের থেকে কোনওরকম উদ্যোগী হবে না তারা । এই মুহূর্তে দূর থেকে পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখাটাই শ্রেয় মনে করছে এফএসডিএল।

Advertisement

তাহলে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা কোয়েস থেকে মুক্ত হয়ে সামনের মরশুমে আইএসএল খেলার ব্যাপারে এতটা আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন কি ভাবে? ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের এই প্রবল আত্মবিশ্বাসের পিছনে একটাই হাতিয়ার, কোয়েস সিইও সুব্রত নাগের সই সম্বলিত একটি চিঠি। যেখানে তিনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে জানিয়েছেন, মে মাসের পর কোয়েসের নিয়ন্ত্রনে থাকা ৭০ শতাংশ শেয়ার ফিরিয়ে দেয়া হবে। শেয়ার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অবশ্য কোনও রকম অর্থ দাবি করা হয়নি। কিন্তু মুম্বই তে পা দিয়ে যা বুঝলাম, শেষ ল্যাপে এসে পুরো খেলাটা এখন অন্য স্রোতে বইতে চলেছে। এত সহজ ভাবে ক্লাবের হাতে কোয়েসের সব শেয়ার ফিরিয়ে দেওয়ার মতো উদারমনা কোয়েস কর্ণধার অজিত আইজ্যাক নন। আর তাতেই সামনের মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলা বেশ কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এফএসডিএল কর্তাদের কাছে খোঁজ খবর নিয়ে যা জানা গেল, কিছুদিন আগেই অজিত আইজ্যাক এফএসডিএলের কাছে প্রস্তাব দেন, কোয়েসের কাছে থাকা ৭০ শতাংশ শেয়ার কোনও ইনভেস্টরের কাছে বিক্রি করার জন্য যেন উদ‌্যোগী হয় তারা। প্রস্তাব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ফিরিয়ে দিয়ে এফএসডিএল কর্তারা জানান, শুধু কোয়েস-ইস্টবেঙ্গল সমস্যা মেটানো নয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সবুজ-মেরুনে আই লিগ ট্রফি আসছে ৪ এপ্রিল! যুবভারতী থেকে শোভাযাত্রার ভাবনা সমর্থকদের]

ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলা নিয়েও নিজের থেকে কোনও রকম উদ্যোগী হবে না তারা। এটিকে ইস্যুতে এর আগে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাঁদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। তাই কোয়েস ইস্টবেঙ্গল ইস্যুতে নিজের থেকে আর ঢুকতে চান না তাঁরা। একমাত্র ইস্টবেঙ্গল কর্তারা যদি নিজের থেকে এফএসডিএলের শরণাপন্ন হন, তখনই তাঁরা ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএল খেলানোর জন্য উদ্যোগী হবে। নাহলে দূর থেকে পুরো ব্যাপারটার দিকে নজর রাখবে। একই অবস্থান নিয়েছে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনও। ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএল খেলানোর জন্য নিজের থেকে উদ্যোগী হবে না। ইস্টবেঙ্গল যদি নিজের থেকে আবেদন করে, একমাত্র তখনই ফেডারেশন কথা বলবে এফএসডিএলের সঙ্গে।

ইস্টবেঙ্গল কর্তারা এখনও আশাবাদী, নিজেরাই ইনভেস্টর নিয়ে আসতে পারবেন। আর তা নিজেদের শর্তেই। কিন্তু এখানেও সমস্যা। এখানে খোঁজ খবর নিয়ে যা জানা যাচ্ছে, তা হল অজিত আইজ্যাক ক্লাবকে শেয়ার ফিরিয়ে দিলে বেশ ভাল অর্থ দাবি করবেন। গত দু’বছর ধরে যে টাকা তিনি বিনিয়োগ করেছেন, শেয়ার যাকেই দেবেন, তার থেকেই মোটা অঙ্ক দাবি করবেন। এখানেই মূল সমস্যার ইস্টবেঙ্গল । একে তো ইনভেস্টর পাওয়া সমস্যা। তার উপর বিপুল অঙ্ক ক্ষতিপূরণ দিয়ে কোন ইনভেস্টর আসবেন? সেই কারনেই সুব্রত নাগের আগের চিঠি উল্লেখ করে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা কোয়েসকে চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, ‘‘আশা করব, আমাদের মধ্যে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক হবে।’’ যদিও সেই চিঠির কোনও উত্তর এখনও পর্যন্ত দেয়নি কোয়েস।

ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অবশ্য বলছেন, চুক্তি অনুযায়ী শেয়ার ফেরত দেওয়ার জন্য কোয়েস এভাবে অর্থ দাবি করতে পারে না। সেরকম নিজেদের শেয়ারও অন্য কোনও সংস্থাকে বিক্রি করতে পারে না। চুক্তি অনুযায়ী কোয়েসকে খেলার পুরো অধিকার দেওয়া হয়েছিল । এখন খেলার সেই অধিকার ফেরত চাওয়া হচ্ছে। তার জন্য কোয়েসকে অর্থ কেন দেওয়া হবে? এরপরেও যদি কোয়েস ক্ষতিপূরণ ছাড়া শেয়ার ফেরত না দেয়, তাহলে কোয়েসের বন্ধন থেকে ছাড় পাওয়ার জন্য আইনের পথে যাওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না ইস্টবেঙ্গলের। কিন্তু এসব চলতে থাকলে আইএসএল খেলার জন্য ইস্টবেঙ্গল তাহলে প্রস্তুতি কখন নেবে? সব মিলিয়ে বিরাট জট। যা কাটাতে পারে একমাত্র এফএসডিএল । কিন্তু ইস্টবেঙ্গল নিজের থেকে নমনীয় হয়ে আবেদন না করলে কিছুতেই এগোবে না তারা। ফলে লাল-হলুদের আইএসএল খেলা এখনও বিশ বাঁও জলে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ