Advertisement
Advertisement
Mohun Bagan East Bengal

সবুজ-মেরুন বর, লাল-হলুদ কনে! নদিয়ার এই বিয়ের আসর যেন ডার্বির মাঠ

বিয়ের আসরকে রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্রে বানিয়ে ফেলল এই দম্পতি।

Nadia: An unique marriage between arch rivals Mohun Bagan and East Bengal supporters | Sangbad Pratidin
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:February 5, 2021 11:09 am
  • Updated:February 5, 2021 11:09 am

বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: পাত্র কট্টর মোহনবাগানি। পাত্রী অন্ধ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। দু’জনের বিয়েতে তাই ঘটি-বাঙালের তুমুল যুদ্ধ যে হবেই, তা নিয়ে ধন্ধ কোথায়?

যুদ্ধ বলে যুদ্ধ! পাত্রীপক্ষের বিয়ের প্যান্ডেল লাল-হলুদ কাপড়ের দেখে বউভাতে পাত্রপক্ষ আসর সাজাল সবুজ-মেরুন কাপড়ে। বিয়ের ভোজে পাত্রীপক্ষের আপ্যায়নে ইলিশ। যা দেখে রেগে বরযাত্রীরা ছুঁলেনই না সেই পদ। পালটা দিতে বউভাতের মণ্ডপে ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal) অন্তপ্রাণ নববধূর মাথার পিছনে, চারপাশে মোহনবাগানের পাল তোলা নৌকার প্রতীকে ছয়লাপ করে দিল বরপক্ষ। লাল-হলুদ বেনারসিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন নববধূ। যার জবাবে সবুজ-মেরুন শেরওয়ানি পরে পাশে এসে বসলেন বর। সব মিলিয়ে সে এক ধুন্ধুমার কাণ্ড!

Advertisement

Nadia: An unique marriage between arch rivals Mohun Bagan and East Bengal supporters

Advertisement

মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে ধুন্ধুমার এহেন রণভূমি, থুড়ি বিবাহ বাসর বসেছিল নদিয়ায়। পাত্রী প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক। পাত্র রথিক বিশ্বাস শান্তিপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। প্রিয়াঙ্কার বাড়ি কৃষ্ণনগরের দেপাড়া এলাকায়। আর রথিক শান্তিপুর ২ নম্বর রেলগেট এলাকার বাসিন্দা। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই ক্লাবের এক ডার্বি নিয়ে ঝগড়া করতে গিয়েই দু’জনের পরিচয়। সেই পরিচয় আস্তে আস্তে পরস্পরের প্রতি টান, ক্রমশ প্রেম। দ্রুত প্রেম গড়াল বিয়ের মণ্ডপ পর্যন্ত।

[আরও পড়ুন: চার ম্যাচ নির্বাসনের সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা, ডার্বিতেও স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারবেন না ফাউলার]

পরস্পরকে জীবনসঙ্গী বেছে নিলেও প্রিয়াঙ্কা বা রথিক- দু’জনে প্রথম থেকেই পরস্পরকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, এক ছাদের তলায় ঘর করবেন ঠিক আছে! কিন্তু খেলার মাঠে কোনও ছাড়াছাড়ি নেই। প্রয়োজনে একই বাড়িতে দুজনে আলাদা টিভিতে ডার্বি দেখবেন। জীবনের মাঠে গাঁটছড়া বাঁধলেও ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের (Mohun Bagan) চিরদ্বন্দ্ব যে দু’জনের আমৃত্যু থাকছে, তা মণ্ডপের রং থেকে বর কনের পোশাক, সবেতেই ছিল স্পষ্ট। প্রিয়াঙ্কার বাড়ির বিয়ের মণ্ডপের কাপড়ের রং ছিল লাল-হলুদ। সেই রঙের শাড়ি পরেই প্রিয়াঙ্কা বসেছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে। অন্যদিকে সবুজ-মেরুন শেরওয়ানি পড়ে পাত্র রথিক গিয়েছিলেন বিয়ে করতে। বিয়ের পর খেতে বসে পাতে চিংড়িবিহীন এঁচোড় আর ইলিশমাছ দেখে কট্টর মোহনবাগানের সমর্থক বরযাত্রীদের একটা বড় অংশ তো রেগে আগুন। প্রতিবাদে ছুঁলেনই না সেই ইলিশ।

Nadia: An unique marriage between arch rivals Mohun Bagan and East Bengal supporters

পাত্রপক্ষের পালটা জবাব বউভাতে। সবুজ-মেরুন রঙের কাপড়ের প্যান্ডেল। চারিদিকে মোহনবাগানের পাল তোলা নৌকার প্রতীক। এমনকী, নতুন বউয়ের বসার আসনের মাথার উপরেও সেই পালতোলা নৌকা। ঢোকার মুখে মোহনবাগানের জার্সি পরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল অভ্যর্থনাকারীদের। তবে বিতর্ক এড়াতে খাওয়ার পাতে চিংড়ি বা ইলিশ, কিছুই রাখাই হয়নি। বদলে ছিল চিকেন।

[আরও পড়ুন: মধুর প্রতিশোধ, ছন্নছাড়া এসসি ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে জয়ের সরণিতে সুনীল ছেত্রীরা]

প্রিয়াঙ্কার বাবা গৌতম বিশ্বাসের স্পষ্ট কথা “মোহনবাগানের ঘরে মেয়ের বিয়ে দিয়ে আত্মীয় হলাম ঠিকই! তবে খেলার মাঠে আমরা প্রতিপক্ষ। আমরা জন্মগত ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক। খেলার মাঠে ইস্টবেঙ্গল কী, তা পরতে পরতে চিনিয়ে দেব।” পাত্র রথিক বিশ্বাসের পালটা, “আমাদের আনন্দ-ফুর্তি সব কিছুর সঙ্গেই মোহনবাগান জড়িয়ে। সে ক্ষেত্রে বিয়ের মতো এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তো মোহনবাগান অবশ্যই থাকবে। তাই মোহনবাগানের জার্সির রংয়ে প্যান্ডেল হয়েছে। মণ্ডপসজ্জাতেও সেই ছাপ।” পাত্রী প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস জানিয়েছেন, “সংসার করব, সব কিছু মানিয়ে নেব ঠিকই। ইস্টবেঙ্গল থাকবে কিন্তু আমার মনে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ