Advertisement
Advertisement

Breaking News

Neymar

বাকি দলগুলির থেকে আলাদা ব্রাজিলের প্র্যাকটিস! শিশুদের সঙ্গে ফুটবল খেললেন নেইমাররা

ঠিক কোন কোন দিক থেকে আলাদা তিতের দল?

Neymar's Brazil gearing up for FIFA World Cup 2022 | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:November 21, 2022 12:17 pm
  • Updated:November 21, 2022 2:25 pm

দুলাল দে, দোহা: বিশ্বকাপের অন্যান্য দলগুলির কোচরা যখন সংবাদ মাধ্যমকে ১৫ মিনিটের বেশি প্র্যাকটিস দেখতেই দেন না, সেখানে ব্রাজিলের প্র্যাকটিস একদম খুল্লাম খুল্লা। টানা দেড়-দু’ঘণ্টা যত খুশি দেখুন। কোনও মিডিয়া অফিসার এসে বলবেন না, ‘সময় শেষ। প্লিজ এবার মাঠ ছাড়তে হবে।’

সব দলের নিয়ম একদিকে। ব্রাজিলের কোচরা কেন আলাদা? ব্রাজিল বিশ্বকাপের সময় নেইমারদের প্র্যাকটিস কভার করতে গিয়ে একটা মজার কথাটা শুনেছিলাম। জোকসটা হল- “মাঠের মধ্যে ব্রাজিলের খেলার স্ট্র্যাটেজি প্রতিপক্ষ দলের কোচরাই বুঝতে পারেন না। আর মাঠের বাইরে থেকে সংবাদমাধ্যম দেড় ঘণ্টা দেখে বুঝে ফেলবে? অতঃপর, যতখুশি দেখুন।”

Advertisement

দোহায় লিওনেল মেসিকে (Lionel Messi) যেখানে রোজকার প্র্যাকটিসে প্রায় লুকিয়ে রাখতে হচ্ছে, তিতে সেখানে নেইমারদের দাঁড় করিয়ে দিলেন পুরো সংবাদ মাধ্যমের সামনে। আর সেটাও এক ঘণ্টা নয়, পাক্কা আড়াই ঘন্টা! প্রথম দু’ঘণ্টা প্র্যাকটিস। পরের আধ ঘণ্টা স্থানীয় বাচ্চাদের নিয়ে মাঠের মধ্যে ফুটবল খেললেন। খুনসুটি করলেন। তখন মনে হচ্ছিল, সত্যিই কি হেক্সা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে কাতারে এসেছেন নেইমাররা? নাকি প্রীতি ম্যাচ খেলতে!

Advertisement

[আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনে ভারতের প্রতিনিধি জগদীপ ধনকড়, সাক্ষাৎ করলেন বিশিষ্টদের সঙ্গে]

মেসিরা যেরকম একটা জায়াগাকেই দুর্গ বানিয়ে নিয়ে যেখানে থাকছেন, সেখানেই প্র্যকটিস করছেন, ব্রাজিল (Brazil Football Team) সেরকম নয়। ফুটবলাররা থাকছেন হোটেলে। আর প্র্যাকটিসের জন্য বেছে নিয়েছেন আল আরাবি স্পোর্টস সেন্টারকে। এবার ব্রাজিলের হোটলের পরিবেশে একটা নতুনত্বের ছোঁয়া দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রত্যেক ফুটবলারের রুমে লাগানো হয়েছে, ফুটবলারটির ছোট বেলার ছবি। ব্রাজিলের প্র্যাকটিস মানেই মূল গেটে ঢোকার আগেই হলুদ পতাকায় মোড়ানো দেশ বিদেশের প্রচুর সাম্বা ফ্যান। একটা উৎসব উৎসব ব্যাপার। কাতারে প্রথম দিনের প্র্যাকটিস বলে তিতে ঠিক করলেন, স্থানীয় সব ব্রাজিল ফ্যানদের সঙ্গেই দেখা করবেন ফুটবলারা। তবে প্র্যাকটিসের পর। আর প্র্যাকটিস শুরুর আগে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। অন্যান্য দলের প্র্যাকটিসের সঙ্গে শুধু একটা জায়গাতেই মিল ব্রাজিলের। সবার শেষে মাঠে আসেন তারকা। এদিন যেমন নেইমার। সবার আগে দানি ডিসিলভাকে নিয়ে মাঠে এলেন থিয়াগো সিলভা। সবার শেষ ভিনিসিয়াস জুনিয়রের সঙ্গে গল্প করতে করতে নেইমার।

Brazil1

গ্যালারিতে থাকা ফুটবলারদের সন্তানেরা তখন চিৎকার শুরু করেছে। ফুটবলাররা কাছে গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা করেই মাঠের মাঝে চলে গেলেন। মাঠের সেন্টার সার্কেলে দাঁড়িয়ে তিতে তখন ফুটবলারদের বোঝালেন, আজ কী প্র্যকটিস হবে। দলের কোচিং স্টাফরা পুরো দলটাকে নিয়ে চলে গেলেন মাঠের ডানদিকে বারপোস্টের পিছনে। নেইমার পরলেন কমলা রংয়ের জার্সি। ভিনিসিয়াস জুনিয়র সবুজ রংয়ের। থিয়াগো সিলভারা সাদা রংয়ের। ছোট জায়গার মধ্যে তিন জার্সির ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে বল নিয়ন্ত্রণে রাখার প্র্যাকটিস শুরু করেন। কিছুক্ষণ পরে একই প্র্যাকটিস মাঠের ভিতরে এনে আরও একটু বড় জায়গায় হল। ততক্ষণে অবশ্য নেইমারদের জার্সির রং বদলে গিয়েছে। বল নিয়ন্ত্রণ শেষ হলে অ্যাটাকারদের সঙ্গে ডিফেন্ডারদের পুরো আলাদা করে দিলেন তিতে। চার ডিফেন্ডারকে রেখে দু’দিক থেকে এরিয়াল বল আসতে লাগল। আর সেই বলেই একের পর এক হেড করতে লাগলেন থিয়াগো সিলভা। দানি ডিসিলভার বয়স নিয়ে যতই সমালোচনা হোক না কেন, এদিন কিন্তু প্র্যাকটিসে প্রথম চার ডিফেন্ডারের মধ্যেই দানি ডিসিলভাকে রেখে প্র্যাকটিস করালেন তিতে।

নেইমাররা তখন মাঠের আরেক পাশে সিচ্যুয়েশন প্র্যাকটিস করছেন। পরিকল্পনায় সামান্য ভুল হলেই ছুটে যাচ্ছেন তিতে। বেশ কয়েকবার নেইমার আর ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে একসঙ্গে ডেকে কিছু বোঝালেন ব্রাজিলিয়ান কোচ। তারপর ফের অনুশীলন। আর সব শেষে আলিসনকে গোলে রেখে পেনাল্টি প্র্যাকটিস। প্র্যাকটিস যখন শেষের দিকে, মাঠের ধারে স্থানীয় বাচ্চারা এসে হাজির। সঙ্গে সঙ্গে প্র্যাকটিস থামিয়ে বাচ্চাদের দিকে যাওয়ার জন্য নেইমারদের ইশারা করলেন তিতে। স্থানীয় বাচ্চাদের হাতে তখন ব্রাজিল জার্সি। সবাই নেইমারের অটোগ্রাফ চান। শুধু নেইমার কেন, পুরো দলটা মাঠের ধারে এসে বাচ্চাদের সঙ্গে ছবি তুলল। অটোগ্রাফ দিল। মাঠের পাশেই তখন ছোট করে ব্রাজিলিয়ান তারকারা ফুটবল খেললেন বাচ্চাদের সঙ্গে। সবাই হাসছে, দৌড়চ্ছে, ছবি তুলছে। না দেখলে মনেই হবে না, বিশ্বকাপের জন্য কাতারে এসে প্র্যাকটিস শুরু করেছে ব্রাজিল। হয়তো ব্রাজিল ফুটবল এরকমই। সবার থেকে আলাদা। অন্যান্য দলের প্র্যাকটিসে গেলে কেমন একটা টেনশনের ভাব। সবাই একেবারে তটস্থ। আর ব্রাজিলের প্র্যাকটিসে হাসি, ঠাট্টা, মজা সব চলল। দেখে মনেই হচ্ছিল না হেক্সা জয়ের জন্য সামান্য চাপ রয়েছে। এই জন্যই হয়তো মাঠের ভিতর ফুটবল খেলার মধ্যে দিয়ে ছবি আঁকতে পারেন নেইমরারা। এই কারণেই হয়তো কোনও ব্যাখ্যাতেই মাপা যায় না ব্রাজিল ফুটবলকে।

Anwesha Adhikary

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ