সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরাট কোহলিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তুলে নিয়ে আসাটা ছিল তাঁর মাস্টার স্ট্রোক। কিন্তু এটাই যে আবার জাতীয় নির্বাচক হিসাবে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার কারণ ছিল, সেটা ক’জন জানে? মুম্বইয়ে মারাঠি পত্রকার সংঘের অনুষ্ঠানে যা কবুল করেছেন দিলীপ বেঙ্গসরকর স্বয়ং।
বেঙ্গসরকরের দাবি, অস্ট্রেলিয়ায় ২০০৮-এ ইমার্জিং প্লেয়ার্স টুর্নামেন্টে তিনি ও বাকি নির্বাচকরা তামিলনাড়ুর বদ্রীনাথকে না নিয়ে বিরাট কোহলিকে দলে নিয়েছিলেন। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার উদীয়মান ক্রিকেটারদের এই টুর্নামেন্টে অনূর্ধ্ব ২৩ ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়েছিল ভারত। বিরাট অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ভারতের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। “আমরা বিরাটকে এই দলেও রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” বলেন বেঙ্গসরকর। ইমার্জিং টুর্নামেন্টে সবাই ‘এ’ দল নিয়ে খেলতে নেমেছিল। বিরাট পরে বলেছিলেন, বেঙ্গসরকর অস্ট্রেলিয়ায় পৌছে তাঁকে ওপেন করতে বলেন। মার্টিন গাপ্তিল, কোরি অ্যান্ডারসন ও জেসি রাইডারের নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে নেমে তিনি ১২০ রানে নট আউট থাকেন। বেঙ্গসরকরের তখন মনে হয়েছিল বিরাটের জাতীয় দলে খেলা উচিত। তাছাড়া বিরাটের ব্যাটিং দেখে তখন তাঁর আরও মনে হয়েছিল, ছেলেটা টেকনিক্যালি বেশ সাউন্ড।
২০০৮-এ শ্রীলঙ্কা সফরে যায় ভারতীয় দল। বেঙ্গসরকরের মনে হয়েছিল, বিরাটকে সিনিয়র দলে নেওয়ার এটাই আদর্শ সময়। তিনি নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান। বাকি নির্বাচকরা তাঁকে বলেন, ‘দিলীপ ভাইয়া তুমি যা বলছ তাই হবে।’ কিন্তু ধোনি আর গ্যারি কার্স্টেন এতে আপত্তি তোলেন। আর বিরাটের হয়ে বলতে গিয়ে বেঙ্গসরকর কুনজরে পড়ে যান এন শ্রীনিবাসনের। যার ফলে তাঁকে চাকরিও খোয়াতে হয়েছিল। বেঙ্গসরকরের দাবি, ধোনি-কার্স্টেন আপত্তি তুলেছিলেন বিরাটকে খেলতে দেখেননি বলে। বেঙ্গসরকর তাঁদের বলেন, তিনি দেখেছেন। তাই এই ছেলেটিকে নেওয়া উচিত। তবে তিনি এরপর টের পান, কোথায় যেন অস্বস্তি কাজ করতে শুরু করেছিল এরপর। কেন? বিরাটের জন্য বদ্রীনাথ দলে সুযোগ পাননি। যে বদ্রীনাথ চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলতেন। যে সিএসকের মালিক ছিলেন শ্রীনি।
বেঙ্গসরকরের দাবি, বদ্রীনাথকে টানা বাইরে দেখে শ্রীনি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কখন দলে নেওয়া হবে? বেঙ্গসরকর তাঁকে জানিয়েছিলেন, এমার্জিং ট্রফিতে বিরাটকে খেলতে দেখেছেন। অসাধারণ ব্যাটসম্যান। বেঙ্গসরকরের কথায়, “আমি জানাই, এজন্যই কোহলিকে দলে নেওয়া হয়েছে। শ্রীনি জবাবে বদ্রীনাথের রনজিতে এক মরশুমে ৮০০ রান করার কথা বলেন। আমি বলি, ঠিক সুযোগ পাবে। উনি বলেছিলেন, বদ্রীর ২৯ বছর বয়স। আর কবে খেলবে?” বেঙ্গসরকরের সংযোজন, এরপরই তাঁকে সরিয়ে শ্রীনি নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান করে আনেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.