সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভ্যাকসিন কবে হাতে পাওয়া যাবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তার আগে বরং করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) দুর্বলতা চিহ্নিত করে তাকে ঘায়েল করা দ্রুততার সঙ্গে হতে পারে। এই পথই দেখিয়ে দিল ভারতীয় বংশোদ্ভুত এক মার্কিন কিশোরী, মাত্র ১৪ বছর বয়সে। করোনা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিকে আলোকপাত করে ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জ’ পুরস্কার জিতে নিল টেক্সাসের ছাত্রী অনীকা শেব্রোলু (Anika Chebrolu)। নগদ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার এল তার হাতে।
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানীমহল। তৈরি হচ্ছে প্রতিষেধকও। কমবয়সি মেধাবী পড়ুয়ারাও তাদের মতো করে নোভেল করোনা বা SARS-CoV-2’কে পরাস্ত করার উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছে। সেভাবেই টেক্সাসের ছাত্রী অনীকা ভাইরাসের দুর্বলতাটি চিহ্নিত করে সেই পথে এগিয়ে বিপদ মোকাবিলার পথ বাতলে দিয়েছে। ইন-সিলিকো মেথডোলজি (In-Silico Methodology) প্রয়োগ করে সে এক প্রোটিনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে, যাকে আশ্রয় করে ভাইরাস কাঁটার মতো আটকে থাকে।
সংবাদমাধ্যমে নিজের আবিষ্কার সম্পর্কে অনীকা জানিয়েছে, ”একটা অণুর মডেল দিয়ে বুঝিয়েছি যে নির্দিষ্ট প্রোটিনের মাধ্যমে কীভাবে এর সঙ্গে আটকে থাকে SARS-CoV-2 ভাইরাসটি। আর এই বন্ধনের জন্য প্রোটিনটি মানবদেহে নিজের কাজ করতে পারে না।” তবে ভাইরাস নিয়ে এমন গবেষণা আজকের মহামারীর সময়ে নয়, অনীকা শুরু করেছে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই। জীবাণু, মহামারী, ওষুধ আবিষ্কারের ইতিবৃত্ত নিয়ে সে ঘাঁটাঘাঁটি করছিলই। তারই মধ্যে আবির্ভূত হল করোনা সংকট। অনীকা জানাচ্ছে, ”কোভিড-১৯ এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠল যে আমি ও আমার মেন্টররা নিজেদের গবেষণার অভিমুখ বদলে ফেললাম, ফোকাস করলাম SARS-CoV-2’র দিকে।”
অনেক কম বয়সেই নিজের লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছিল ভারতীয় বংশোদ্ভুত মেধাবী ছাত্রী অনীকা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষক হওয়ার লক্ষ্যে তখন থেকেই চর্চা শুরু। সবটা সে একা মোটেই পারত না। যেমন, কোভিড নিয়ে গবেষণার সময়ে জীবাণু বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকদের সাহায্য নিতে হয়েছে তাকে। যে প্রোটিনকে আশ্রয় করে SARS-CoV-2 মানবদেহে জাঁকিয়ে বসে, তার মডেলটি সে একা তৈরি করতে পারেনি। বড়রা সাহায্য করেছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত লক্ষ্যভেদ একাই করেছে অনীকা। তাই তো ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতার আয়োজকরা তার দেখানো পথটিকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, মানবদেহের সেই প্রোটিনকে রক্ষা করেই নোভেল করোনা ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা সমাধানে এমন এক যুগান্তকারী দিক উন্মোচন করে যে কত বড় কাজ সে করে ফেলল, তা হয়ত নিজেই বুঝতে পারছে না অনীক শেব্রোলু। কিন্তু তাকে সেলাম জানাচ্ছে বিশ্বের গবেষক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.