সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কাই সত্যি হল। জাপান উপকূলে আটকে থাকা প্রমোদতরীতে দুই ভারতীয়র শরীরে মিলল মারণ করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি। খবরটি নিশ্চিত করেছে জাপানের ভারতীয় দূতাবাস। পেশায় পাচক রায়গঞ্জের বাসিন্দা বিনয় কুমার সরকার এবং নিরাপত্তা আধিকারিক তরুণী সোনালি ঠাকুর করোনায় আক্রান্ত।
বিনয় আগেই ফিরতে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘যে কোনওভাবে আমাদের রক্ষা করুন। আমি ভারত সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, মোদিজি, দয়া করে আমাদের আলাদা রেখে ও নিরাপদে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’ পরে জাহাজ থেকে আন্তর্জাতিক বিপদ সংকেত (এসওএস) পাঠিয়েছেন সোনালিও। দ্রুত বাড়ি ফেরার জন্য ভারত সরকারের সহযোগিতা চাইলেন তিনি। তাঁর বার্তা, ‘‘আমরা ভয় পাচ্ছি, যদি সংক্রমণ দ্রুত ছড়ায়। তা হলে, আমরাও আক্রান্ত হতে পারি। আমরা তা চাই না। আমরা শুধু বাড়ি ফিরতে চাই। আমরা চাই, ভারত সরকার আমাদের এখান থেকে আলাদা করুক আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করুক। না হলে অন্তত চিকিৎসকদের পাঠান।’’ সোনালির কথায়, ‘‘পরিবার আমার জন্য উদ্বিগ্ন। ওরা দিনরাত আমার জন্য প্রার্থনা করছে। ওদের বলব, শক্ত হও। তোমাদের মেয়ে তোমাদের কাছে দ্রুতই ফিরে আসবে।’’
[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে কাঁপছে বিশ্ব, সংক্রমণে শঙ্কায় বাতিল মোবাইল ট্রেড ফেয়ার়]
গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে আটকে রয়েছে প্রমোদতরী ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’। তাতে অন্তত ৩,৭০০ জন যাত্রী রয়েছেন। জানুয়ারিতে হংকং থেকে এক যাত্রী ক্রুজ শিপটিতে ওঠেন। তাঁর শরীরের করোনার উপস্থিতি ছিল। আর সেখান থেকেই জাহাজের বাকি যাত্রীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায়। প্রমোদতরীটির ৩,৭১১ জন যাত্রীর মধ্যে ১৩৮ জনই ভারতীয়। এক বিবৃতিতে জাপানের ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত জাহাজের ১৭৪ জনের শরীরে মিলেছে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি। আর এই সংক্রমণের কারণেই জাহাজটিকে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাপানে আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ এড়াতে সমস্ত যাত্রীকে কেবিনের ভিতরে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁদের মাস্ক পরে থাকতে বলা হয়েছে এবং পরস্পরের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। থার্মোমিটার দেওয়া হয়েছে নিয়মিত নিজেদের দেহের উষ্ণতা পরীক্ষা করার জন্য।