সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রিপোর্টে COVID19 পজিটিভ। করোনা আক্রান্তদের সেবা করতে করতে মারণরোগ বাসা বেঁধেছে তাঁর শরীরেও। অতঃপর জীবন আর মৃত্যুর মাঝে যে তিনি যুঝে চলেছেন, তা রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বুঝতে পেরেছিলেন। কিন্তু এ রোগ যে ছোঁয়াচে, পাছে তাঁর শরীর থেকে আর পাঁচ জনের সংক্রমণ যাতে না ঘটে, তাই ঠান্ডা মাথায় সবার অলক্ষ্যেই আত্মঘাতী হলেন ওই সেবিকা।
মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে ইটালিতে। আত্মঘাতী ওই নার্সের নাম ড্যানিয়েলা ট্রেজি। বয়স ৩৪। ইটালির লম্বার্ডির এক হাসপাতালেই করোনা আক্রান্তদের সেবা করছিলেন ড্যানিয়েল। ডিউটি চলছিল সংশ্লিষ্ট হাসপাতালেরই ইনটেনসিভ কেয়ারে। যাবতীয় সতর্কতা অবলম্বন করেও এড়ানো যায়নি এই ছোঁয়াচে রোগকে। সেখান থেকেই সংক্রামিত হন। দিন কয়েক পরই অক্লান্ত ডিউটির মাঝে করোনা সংক্রমণের নানারকম উপসর্গ দেখা দেয় তাঁর শরীরে। ইটালির ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ নার্সেস-এর তরফে জানানো হয়েছে, মারণ এই ভাইরাস ছড়াতে পারে এই আশংকায় অত্যন্ত স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েই নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
[আরও পড়ুন: করোনার হানা রাজপরিবারেও, প্রিন্স চার্লসের বয়সই ভাবাচ্ছে ব্রিটেনবাসীকে]
করোনার গ্রাসে ইটালির প্রায় সিংহভাগ। প্রতিদিন আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। রাশ নেই মৃত্যু মিছিলেও। যা আর কোনও অঙ্কেই নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। ইউরোপের অন্যতম শিল্প, সংস্কৃতির দেশের প্রতিটি শহর এখন যেন খাঁ খাঁ করছে। ভেনিস, মিলান, রোমের স্থাপত্যের দিকে পর্যটকদের মুগ্ধদৃষ্টি আর নেই। কোনও মানুষই তো রাস্তায় নেই। জনবহুল স্থানগুলোতে যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা। মারণ করোনা ভাইরাসের জুজু সকলকে ঘরবন্দি করে রেখেছে।
চিনের ইউহানের পর এখন করোনার উপকেন্দ্র এখন ইটালি। সেখানে এখন ঝড়ের গতিতে নিজের দাপট দেখাচ্ছে COVID-19 জীবাণু। যার বলি ইতিমধ্যেই ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। রিপোর্ট বলছে, ত শনিবার, এদেশে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ যে পরিমাণে বেড়ে চলেছ, যে পরিসংখ্যান দেখে চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ চওড়া হচ্ছে রাষ্ট্রনেতাদের কপালেও। হাজারও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, নাগরিক পরিষেবা সব কিছুই যেন হার মেনে গিয়েছে মারণ জীবাণুর কাছে। যার জেরে অকালেই ঝরে গেল বছর চৌত্রিশের ওই নার্সের।