Advertisement
Advertisement

Russia- Ukraine War: রুশ গোলায় কিয়েভ যেন মৃত্যুপুরী, যুদ্ধের মাঝে শরণার্থীদের আগলে রাখছেন ভারতীয় রেস্তরাঁর মালিক

এই রেস্তরাঁই এখন অনেক মানুষকে আশ্রয়, নিরাপত্তা দিচ্ছে,।

Indian Restaurant Owner Creates Shelter for War Hit People | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 2, 2022 1:46 pm
  • Updated:March 2, 2022 4:45 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনেক স্বপ্ন পুঁজি করে দেশ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর ইউক্রেনে (Ukraine)। সেখানে গিয়ে শুরু করেছিলেন নতুন ব্যবসা। তাঁর ইচ্ছা ছিল বিদেশের মাটিতে গিয়েও দেশের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা। সেই উদ্দেশ্যেই খুলেছিলেন একটি ভারতীয় রেস্তরাঁ। সেই রেস্তরাঁই এখন যুদ্ধের মরুভূমির মধ্যে মরুদ্যানের মতো জেগে রয়েছে। লড়াইয়ের ভয়াবহতার মধ্যেই আশ্রয় দিচ্ছে বহু মানুষকে। 

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে (Kyiv) রয়েছে রেস্তরাঁটি। সেখানে ভারতীয় রেস্তরাঁ ‘সাথিয়ার’ মালিক মণীশ দাভে। তিনি বলছেন,”যতদিন পারব ততদিন সাহায্য করে যাব। সবাইকে খাবার আর আশ্রয় দেব।” এখনও তাঁর রেস্তরাঁয় অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বয়স্ক মানুষ থেকে শুরু করে শিশু, সন্তানসম্ভবা মহিলা, পড়ুয়া সকলেই রয়েছেন সাথিয়া রেস্তরাঁতে। ১৩২ জন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মণীশ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: WB Civic Polls 2022 Result: গড় রক্ষা করতে ব্যর্থ শিশির-শুভেন্দু, চার দশক পর কাঁথি পুরসভায় সবুজ ঝড়]

২০২১ সালে গুজরাট থেকে ইউক্রেনে চলে আসেন মণীশ। ইউক্রেনে পড়তে আসা ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্যই খুলেছিলেন এই রেস্তরাঁ। মাত্র দু’মাস আগেই শুরু হয় এই রেস্তরাঁর পথ চলা। বোগোমেলেৎস ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির হস্টেলের কাছেই অবস্থিত এই রেস্তরাঁ। সবকিছু বেশ ভালই চলছিল। কিন্তু হঠাৎই পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। মণীশ জানিয়েছেন, “সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এত বোমা, আগুন, বিস্ফোরণ দেখে সকলেই খুব ভয় পাচ্ছেন।” এহেন পরিস্থিতিতে মণীশ বুঝতে পারেন এইসময় মানুষের আশ্রয়ের প্রয়োজন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর রেস্তরাঁটি ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। রেস্তরাঁর বেসমেন্টেই শরণার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করে ফেলেন।

Advertisement

কিন্তু কীভাবে শরণার্থীরা জানতে পারলেন এই নিরাপদ আশ্রয়ের কথা? মণীশ জানালেন, “প্রথমে আমার দোকানে যারা খেতে আসত তাদেরকেই আমার এই উদ্যোগের কথা জানাই।” তারপর সাহায্য নেন সোশ্যাল মিডিয়ার। মণীশ পোস্ট করেন, “যদি কেউ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন, তাহলে এই ঠিকানায় আসুন।” নিজের রেস্তরাঁর ঠিকানাও দেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছেন শরণার্থীদের। দেশ জাতি নির্বিচারে সকলকেই আশ্রয় দিচ্ছেন মণীশ।
যুদ্ধের মধ্যেই এমন মানবিকতার উদাহরণ দেখে আপ্লুত খাস কিয়েভের নাগরিকরাও। নাতালি আন্তন্তসেভা নামে এক ইউক্রেনীয় নাগরিক আশ্রয় নিয়েছিলেন সাথিয়া রেস্তরাঁয়। তিনি জানিয়েছেন, “একটি পরিস্কার, উষ্ণ ঘরে ঢুকে ভারতীয় মশলার গন্ধ পাওয়ার পর কত খুশি হয়েছিলাম, তা বলে বোঝাতে পারব না।” আরও অনেক ইউক্রেনীয় মানুষ এসে আশ্রয় নিয়েছেন এই রেস্তরাঁয়। সকলেই দাভে এবং তাঁর রেস্তরাঁর কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এদিকে, ভারতে মণীশের পরিবারের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। তবুও আপাতত ইউক্রেনেই থাকতে চান তিনি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তবেই ইউক্রেন ছাড়ার কথা ভাবছেন তিনি। তবুও মণীশ চান না তাঁর এই আশ্রয় শিবির বন্ধ হয়ে যাক। যদি যেতেই হয়, তখন রেস্তরাঁর কর্মীদের হাতে চাবি দিয়ে যাবেন বলেই মনস্থির করেছেন তিনি। কূটনীতি, যুদ্ধ, হিংসা- তার মধ্যেও মণীশ দাভের মতো মানুষ আছেন। তাঁদের মতো মানুষের কারণেই আজও বেঁচে আছে মানবিকতা। আজও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে শোনা যায় জীবনের জয়গান।

[আরও পড়ুন:মেডিক্যাল পড়া অসমাপ্ত রেখে ইউক্রেন ফেরত বাংলার পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কী? সংসদে প্রশ্ন তুলবে TMC]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ