Advertisement
Advertisement

Breaking News

আইএস-এর মোহভঙ্গ, মায়ের কাছে ফিরতে চায় ‘জেহাদি জ্যাক’

বাড়ি ফিরতে চেয়ে ব্রিটেন সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে এই জঙ্গি৷

 Jihadi Jack wants to Back to UK from Syria
Published by: Tanujit Das
  • Posted:February 24, 2019 11:38 am
  • Updated:February 24, 2019 11:38 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাড়ির জন্য মন খারাপ। বিশেষত মায়ের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে মন। তাঁকে ছেড়ে আর থাকতে পারছে না। তাই বাড়ি ফিরতে চেয়ে ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন করেছে এক যুবক। কিন্তু অনুমতি মিলবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ, আবেদনকারী যুবক যে সে লোক নয়। ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা জঙ্গি। নাম ‘জেহাদি জ্যাক’। ধর্মান্তরিত হয়ে এই ব্রিটিশ যুবক আইএস-এ ভিড়েছিল। কিন্তু এখন মোহভঙ্গ হয়েছে। যেমন হয়েছে আরও বহুজনের। এবার সুবোধ বালকের মতো বাড়ি ফেরার আবেদন জানিয়ে সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে ‘জেহাদি জ্যাক’।

[বরফে খোদাই করা চিরসঙ্গী হওয়ার প্রস্তাব, শিকাগোর প্রেমিককে নিয়ে মাতল নেটদুনিয়া]

Advertisement

আসল নাম জ্যাক লেটস। ২০১৪-য় সিরিয়া পাড়ি দিয়েছিল। পরে ইসলামিক স্টেটের অঘোষিত রাজধানী রাক্কা থেকে পালিয়ে আসে। আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াই চালানো গোষ্ঠী কুর্দিশ ওয়াইপিজি-র হাতে ধরা পড়ে যায়। তারপর থেকে ঠাঁই হয়েছে সিরিয়ার একটি জেলে। চলতি সপ্তাহে সেখানেই ২৩ বছর বয়সি এই যুবকের সাক্ষাৎকার নিয়েছে ব্রিটেনের আইটিভি নিউজ চ্যানেল। তাদের কাছে মনের কথা উজাড় করে দিয়েছে অক্সফোর্ড শহরের এই বাসিন্দা। জেহাদি জ্যাক বলেছে, “কাছের লোক, আত্মীয়স্বজনের অভাব বোধ করি। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে মা-কে। পাঁচ বছর হয়ে গেল তাঁকে দেখিনি। দু’বছর আগে শেষবার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম।” ব্রিটিনের জনপ্রিয় খাবারের টিভি শো ‘ডক্টরস হু’-এর কথা উল্লেখ করে সে৷ ওই শো দেখতে না পাওয়ার দুঃখের কথাও জানিয়েছে জেহাদি জ্যাক। তার আরও দাবি, “আমি ব্রিটিশ। মানসিকতাতেও। ব্রিটেন আমার দেশ। সরকার অনুমতি দিলে সোজা দেশে ফিরব। তবে সেটা সম্ভব হবে কি না, জানি না।”

Advertisement

[‘পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে’, ভারত-পাক কূটনৈতিক টানাপোড়েনে উদ্বিগ্ন ট্রাম্প]

তবে বাবা কানাডার মানুষ হওয়ায় ‘জেহাদি জ্যাক’র দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। অবশ্য কানাডার পাসপোর্ট এখনও বৈধ রয়েছে কি না, জ্যাকের তা জানা নেই। তার চেয়েও বড় কথা, ছেলেকে অর্থ পাঠানোয় ব্রিটেনে মামলা চলেছে জ্যাকের বাবা জন লেটস এবং মা সারা লেটসের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছেলেকে অর্থ পাঠিয়ে আদতে তাঁরা সন্ত্রাসে মদত জুগিয়েছেন। তাঁরা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের পালটা দাবি, ছেলে সিরিয়ায় গিয়েছিল শরণার্থীদের সাহায্য করতে। ছেলের বয়ান কিন্তু তা বলছে না। যে জেলে দু’বছর ধরে বন্দি সেখান থেকে জেহাদি জ্যাক বলেছে, “২০১৫-র প্যারিস হামলার খবর শুনে খুব আনন্দ হয়েছিল। পাঁচ মিনিট অন্তর মার্কিন জোটের নেতৃত্বাধীন বাহিনী আমাদের উপর বোমা ফেলত। রাক্কায় চোখের সামনে শিশুদের জীবন্ত দগ্ধ হতে দেখেছি। মনে হত, আমাদের সঙ্গে যা হচ্ছে, ওদের ক্ষেত্রেই বা হবে না কেন? পরে অনুতাপ হয়েছিল। নিরীহ মানুষগুলির তো কোনও দোষ ছিল না। মনে মনে ওদের প্রতি সহানুভূতি তৈরি হয়।”

[সীমান্তে দাঁড়িয়ে কয়েকশো পণ্যবোঝাই ট্রাক, চরম আর্থিক সংকটের মুখে পাকিস্তান]

জঙ্গিদের অঘোষিত রাজধানীতে ‘অক্সফোর্ড স্ট্রিট অফ রাক্কা’য় বাস করত জেহাদি জ্যাক। এক ইরাকি মহিলাকে বিয়ে করেছিল। তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। জেহাদি জ্যাকের সাক্ষাৎকার নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর। কয়েকদিন আগেই এভাবে দেশে ফিরতে চেয়েছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ‘জেহাদি বধূ’ শামিমা বেগম। ১৫ বছর বয়সে এই স্কুলছাত্রী লন্ডন থেকে পালিয়ে সিরিয়া গিয়েছিল। বর্তমানে ১৯ বছর বয়েস। সিরিয়ার এক আশ্রয় শিবিরে বাস করছে। সঙ্গে কয়েক মাসের সন্তান। কিন্তু গত সপ্তাহে তার নাগরিকত্ব খারিজ করেছেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। যার বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছে শামিমার পরিবার। স্বরাষ্ট্রদপ্তর বলেছে, ব্রিটেনের মানুষের নিরাপত্তা বজায় রাখাই আমাদের প্রাথমিক কর্তব্য। দেশকে রক্ষা করতে কয়েকজনের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব খারিজ করা তাঁর অধিকারের মধ্যেই পড়ে। সমস্ত নথি-সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যক্তিবিশেষে তার তারতম্য করা হবে না। সেই সূত্র মেনে জেহাদি জ্যাকের দেশে ফেরা কার্যত অসম্ভব।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ