সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেড়ানোর আনন্দ মাটি হয়ে গিয়েছিল এক নিমেষে। হাওয়াই ছুটি কাটানোর স্বপ্ন ভেঙেচুরে আপাতত আতঙ্কের প্রহর কাটাচ্ছেন সান ফ্রান্সিসকো উপকূলে আটকে থাকা প্রমোদতরী ‘গ্র্যান্ড প্রিন্সেস’-এর আড়াই হাজার যাত্রী। নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে এখানে। অন্তত ২১ জন যাত্রীর শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ জীবাণু। ফলে আশঙ্কা বাড়ছে অন্যান্য যাত্রীদেরও। সুস্থ যাত্রীরা এখন দিনরাত একটা কথাই ভেবে চলেছেন – কবে জাহাজ থেকে নেমে যে যার ঘরে ফিরতে পারবেন।
প্রতিদিনই ঘুম ভাঙার পর নতুন কিছু খবরের আশা করেন তাঁরা। কিন্তু না মেলে খবর, না মেলে মুক্তি। যাত্রী, ক্রু মেম্বার-সহ জাহাজটিতে এই মুহূর্তে রয়েছেন ২৪৪২ জন। যাঁরা করোনা আক্রান্ত, জাহাজের কেবিনেই তাঁদের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছে। কিন্তু বাকিদের উদ্ধারের কোনও ব্যবস্থা নেই এখনও পর্যন্ত। আর তাতেই তাঁদের ক্ষোভ বাড়ছে ট্রাম্প প্রশাসনের উপর। সরকারের তরফে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের উপর এই সংক্রান্ত বিষয় নজরদারির দায়িত্ব পড়েছে। কিন্তু তিনি ‘গ্র্যান্ড প্রিন্সেস’-এর যাত্রীদের উদ্ধারের কোনও উদ্যোগই নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। কাতর সুরে যাত্রীরা বলছেন, “দয়া করে আমাদের জাহাজ থেকে নামতে দিন। আমরা কেউ প্লেগে আক্রান্ত নই। আমরা অন্য কাউকে বিপদের মধ্যে ফেলব না।”
ক্যারোলিন রাইটস, ৬৩ বছরের মেক্সিকান বৃদ্ধার বহুদিনের শখ ছিল, হাওয়াই দ্বীপে ছুটি কাটানো। শখ পূরণের জন্য তিনি উঠে পড়েছিলেন ‘গ্র্যান্ড প্রিন্সেস’ নামের প্রমোদতরীতে। কিন্তু সান ফ্রান্সিসকোয় আসা মাত্রই করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জাহাজে। সেখানেই থামিয়ে দেওয়া হয় জাহাজটিকে। তারপর থেকেই দুর্বিসহ হয়ে ওঠে তাঁদের যাত্রা। একেকটা ঘণ্টা যেন একেক দিনের মতো দীর্ঘ হচ্ছে। ক্যারোলিনের কথায়, “এর চেয়ে খারাপ বোধহয় কখনও থাকিনি। এখন নিজেকে বোঝাতে শুরু করেছি আমি অন্তত জেলবন্দি নই। আমরা সবাই প্রতীক্ষা করতে করতে মোবাইলে গেম খেলছি, ভিডিও দেখছি। আর কীভাবেই বা সময় কাটাব? সবচেয়ে খারাপ বেড়াতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার জীবনে।” বিলাসবহুল জাহাজ ‘গ্র্যান্ড প্রিন্সেস’ এখন দুঃস্বপ্নের আরেক নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.