সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরনে ‘রুরাল ফায়ার সার্ভিসেস’-এর (আরএফএস) সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট। মুখে চুষিকাঠি। দৃষ্টি নিবদ্ধ নিচের দিকে। আর বয়স? মাত্র ১৯ মাস। কিন্তু এই একরত্তিটিই অনুষ্ঠানের মধ্যমণি। তারই হাতে বৃহস্পতিবার উঠল দমকল বাহিনীর তরফে সর্বোচ্চ সম্মান। কারণ, দিন কয়েক আগে হার্ভে কেটন নামে ওই শিশুটির বাবা জিওফ্রে কেটনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে দেশের পূর্বাংশে ছড়িয়ে পড়া ভয়ংকর দাবানল। জিওফ্রে তৃতীয় দমকলকর্মী, অগ্নিদগ্ধ হয়ে যাঁর মৃত্যু হয়েছিল। প্রয়াত বাবার হয়ে, তাঁরই কফিনের সামনে, তাঁর পুত্র হার্ভে গ্রহণ করল দেশের দমকলবাহিনীর তরফে সর্বোচ্চ সম্মান।
বৃহস্পতিবার জিওফ্রের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলসের রয়্যাল ফায়ার সার্ভিসেস কমিশনার ক্রেগ ফিৎজসিমনস। তিনিই পিতৃহারা হার্ভের কাছে এসে হঁাটু গেড়ে বসে, তার শার্টে মেডেল আটকে দেন। উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে তখন হার্ভের মা, জেস হায়েস। সকলের চোখেই জল। আবেগে বাকরুদ্ধ সকলেই। ডিসেম্বরে মৃত্যু হয়েছিল জিওফ্রের। বছর বত্রিশের জিওফ্রে তখন ফিরছিলেন কাজ থেকে। দমকলকর্মী জিওফ্রেদের ট্রাকের উপর এসে পড়ে একটি জ্বলন্ত গাছ। মুহূর্তের মধ্যে ট্রাকে ধরে যায় আগুন। একা জিওফ্রে নয়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় তাঁর এক সহকর্মীরও। প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাংশের নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়ায় দাবানলের জেরে ইতিমধ্যেই আট জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ আরও ১৮ জন।
বৃহস্পতিবারের শেষকৃত্যে জিওফ্রেকে সম্মান জানান তাঁর সহকর্মীরা। সকলে মিলে মরণোত্তর ‘গার্ড অফ অনার’ দেন তাঁকে। পরে পা মেলান তাঁর শেষযাত্রায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, ইতিপূর্বে যাঁর বিরুদ্ধে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়া নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠানের যে ছবি সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, তার একটি আলাদা করে নজর কেড়ে নিয়েছে সকলের। ছবিতে জিওফ্রের কফিনের উপর রাখা আছে একটি কফি মাগ, যার উপর রয়েছে বাবা এবং ছেলের ছবি। সঙ্গে লেখা, ‘‘ড্যাডি, আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।’’ ছবিটি দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.