সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশের পর থেকেই অশান্ত উত্তর-পূর্ব ভারত। ভূমিপুত্রদের অধিকার ক্ষুণ্ন হবে, এর জেরে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। বুধবার রাত থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি অসমে। হিংসায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯ (ক্যাব) নিয়ে সরব হল রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন, ‘আমরা এটা জানি যে ভারতীয় সংসদের নিম্ন ও উচ্চকক্ষে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। তারপর যা যা ঘটনা হয়েছে গোটা বিষয়ের উপর আমরা কড়া নজর রাখছি। আইননুগ বিষয়গুলিও আমরা মাথায় রাখছি।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যসভায় বিল পাশ হতেই বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রপতির সিলমোহর পড়ল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯-এ (ক্যাব)। বৃহস্পতিবার সরকারিভাবে রামনাথ কোবিন্দ বিলে স্বাক্ষর করে এটিকে আইনে পরিণত করলেন। মধ্যরাত থেকে আইনে পরিণত হল বিলটি। এর ফলে, প্রতিবেশী তিন দেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত সরকার। স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এদেশে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই আইনের মাধ্যমে।
[আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিক্ষোভের জের, বাতিল জাপানের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর]
এদিকে, ক্যাব পাশের প্রতিবাদে উত্তাল অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্য। বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন হাজার হাজার মানুষ। দোকান, গাড়ি, বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগাল জনতা। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত উত্তেজনায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। সরকারি সূত্রে অবশ্য তিন জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। তিনসুকিয়ায় আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন নারায়ণ নামে এক প্রৌঢ়। বিহারের বাসিন্দা নারায়ণ হিজুগুড়ি এলাকায় একটি বাঙালি হোটেলে কাজ করতেন। বিক্ষোভকারীরা হোটেলে আগুন লাগানোয় তাঁর মৃত্যু হয়। গুয়াহাটির লাচিতনগরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দীপাঞ্জল দাস নামে সেনা ক্যান্টিনের কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। গুয়াহাটিরই হাতিগাঁও শংকর পথে পুলিশের গুলিতে একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। যদিও বেসরকারি সূত্রের দাবি, শংকর পথে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বশিষ্ঠ নতুন বাজার এলাকাতেও এক জন পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন।