সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাহাড়ই ছিল বন্ধু। দুর্গম পথ তাঁকে টানত। ৬ বছর বয়স থেকে পাহাড়কেই পথচলার সঙ্গী করেছিলেন। জীবনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত খাড়াই পাথুরে জমিই আঁকড়েই ছিলেন। সেই পর্বতের চূড়ায় পৌঁছনোর পর নামতে গিয়েই হাত ফস্কে পড়ে গেলেন ৩০০ মিটার নিচে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পর্বতারোহী ব্র্যাড গোব্রাইট, মাত্র ৩১ বছর বয়সে পাহাড়ের ঠিক নিচেই চিরঘুমে তলিয়ে গেলেন।
ঘটনা বুধবারের। উত্তর মেক্সিকোর নুয়েভো লিয়নের পর্বতশৃঙ্গে উঠছিলেন ব্র্যাড এবং তাঁর সঙ্গী জ্যাকবসন। শাইনিং পাথ নামে পরিচিত বন্ধুর রাস্তা ধরেই চলছিল আরোহণ। ২৩০০ ফুট চড়াই-উতরাই বেয়ে চূড়ায় উঠে গিয়েছিলেন দু’জন। জয়পতাকা উড়িয়ে এবার নিচে নামার পালা।আর ঠিক তখনই আচমকা যেন পথ রোধ করে দাঁড়াল সাক্ষাৎ যমরাজ। পাহাড়ের খাঁজ থেকে দড়ি আলগা হয়ে ছিঁড়ে গেল। দু’জনই পড়ে যান। পাহাড়ের একটা খাঁজে আটকে যাওয়ায় প্রাণে বাঁচেন জ্যাকবসন। আর অতল খাদে পড়ে ব্র্যাডের হৃদস্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যায়। জ্যাকবসনকে কোনওক্রমে উদ্ধার করে বেস ক্যাম্পে আনা হয়। তাঁর ডান গোড়ালি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে চোট রয়েছে।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ইজরায়েলী মডেল বিতর্কে এবার মুখ খুললেন ইমরান খান]
ব্র্যাড গোব্রাইট পৃথিবীর অন্যতম এক আরোহী যিনি কোনওরকম বাড়তি নিরাপত্তা ছাড়াই অভিযানে যেতেন। আসলে ছ বছর বয়স থেকে পাহাড়ে চড়ার অভিজ্ঞতা যাঁর, তাঁর কাছে পর্বতারোহণ কোনও কঠিন ব্যাপারই নয়। তাই তিনি মনে করতেন না যে পাহাড়জয়ের জন্য দড়ি ছাড়া অন্য কিছু প্রয়োজন। তবে চমকপ্রদ বিষয় এটাই যে এবার উত্তর মেক্সিকো অভিযানে তাঁর সঙ্গী জ্যাকবসন হওয়ায় এবার বাড়তি নিরাপত্তাই ছিল। যার জন্য জ্যাকবসনের প্রাণ বাঁচলেও, ব্র্যাডের জীবনরক্ষা হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘গাছ রাতে অক্সিজেন দেয়’, মন্তব্যের জেরে নেটদুনিয়ায় হাসির খোরাক ইমরান খান]
ব্র্যাডের মৃত্যুর খবর হাওয়ার গতিতে ছড়িয়ে পড়ে পর্বতারোহী মহলে। এত কম বয়সে এক দুর্দান্ত অভিযাত্রীকে হারানোয় শোকের ছায়া নেমে আসে। আরও অনেক দূর যাওয়ার কথা ছিল যে ব্র্যাডের। আরও অনেকটা উঁচুতে জয়পতাকা ওড়ানোর কথা ছিল।সেই সব সম্ভাবনা এখন পড়ে আছে ৩০০ মিটার নিচের খাদে, মৃত্যুর নীল নির্জনতায়।