ধীমান রায়, কাটোয়া: ব্যাংকে যাওয়ার পথে মাঝরাস্তায় গাড়ি আটকে এক ম্যানেজারকে ‘অপহরণ’। চারলক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায়। বাড়ি ফিরেই পুলিশের দ্বারস্থ ব্যাংক ম্যানেজার। তাঁর সন্দেহ, ঘটনার নেপথ্যে তাঁর গাড়ি চালক। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার (Bhatar)।
অভিযোগকারী শ্যামাশিস হাজরা। ভাতার বাজারে কদমতলা পাড়ার বাসিন্দা তিনি। মঙ্গলকোটের কাসেমনগরে একটি ব্যাংকের ম্যানেজার। জানা গিয়েছে, শ্যামাশিস হাজরা আগে মোটরবাইকে যাতায়াত করতেন। কয়েকমাস আগে তিনি একটি চারচাকা গাড়ি ভাড়া করেন। ওই গাড়িতে যাতায়াত করেন ভাতার বাজারের বাসিন্দা আরও এক ব্যাংক কর্মী। তিনি মঙ্গলকোটের খতিয়ার গ্রামে রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একটি শাখায় চাকরি করেন। দু’জন মিলে ওই ভাড়া গাড়িতে যাতায়াত করতেন। জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ ভাড়া গাড়িতে ভাতার বাজার থেকে বাদশাহী রোড ধরে মঙ্গলকোটের দিকে যাচ্ছিলেন শ্যামাশিসবাবুরা। অভিযোগ, তখন ৬-৭ জন অপরিচিত ব্যক্তি ভাতারের মুরাতিপুরের কাছে গাড়িটি আটকায়। চালক গাড়িটি দাড় করিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিছনের গেট খুলে দুজন গাড়িতে উঠে পড়ে।
শ্যামাশিষ হাজরা বলেন, “দুজন আমার মোবাইল ফোনদুটি কেড়ে নেয়। আমার সামনে বসে থাকা আমার সহযাত্রীর কাছ থেকে তাঁর ফোনটিও কেড়ে নেয়। এরপর চালককে গাড়ি ঘোরাতে বলে। গাড়িটি ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এরুয়ার গ্রামে। এরুয়ার গ্রামে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রাখা হয় আমাকে। সেখানে আমাকে মারধর করা হয়। দশ লক্ষ টাকা দাবি করে ওরা।” শ্যামাশিসবাবু জানান, দশ লক্ষ টাকা দিলে তবেই তাঁকে ছাড়া হবে বলে জানানো হয়। প্রাণ বাঁচাতে আমি চার লক্ষ টাকা দিতে রাজি হই। আমাদের গাড়িটির চালককে ওরা ডাকে। চালক মধ্যস্থতা করে। টাকার ব্যবস্থা করার জন্য ওরা আমাকে ফোনটা একবার দেয়। ব্যাংকে কথা বলি। এরপর গাড়ির চালককে সঙ্গে নিয়ে বাইকে করে একজন ব্যাংকে যায়। চারলক্ষ টাকা তুলে গাড়ি চালকের হাত দিয়ে পাঠানো হয়। টাকা পাওয়ার পর প্রায় দুটো নাগাদ আমাকে ছাড়া হয়। আমি বেড়িয়ে এসে জানতে পারি তার আগে ওরা আমার সহকর্মীকে এরুয়ার বাসস্ট্যান্ডে ছেড়ে দিয়ে যায়।
বুধবার দুপুর দুটো নাগাদ মুক্তি পাওয়ার পর শ্যামাশিসবাবু বাড়িতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সন্ধেয় কিছুটা সুস্থ হয়ে বুধবার রাতে ভাতার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর সন্দেহ, এই অপহরণেরর ঘটনায় ভাড়াগাড়ির চালকও জড়িত। জানা গিয়েছে, অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই অপহরনের ঘটনায় পিছনে পুরনো কোনও রাগ কাজ করছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.