Advertisement
Advertisement

Breaking News

অমর্ত্য সেন

দিল্লির হিংসায় আক্রান্তদের মধ্যে সংখ্যালঘুই বেশি, রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন অমর্ত্য সেন

“ভারতের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তার কারণ আছে।" বলছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।

Amartya Sen is very tensed about the situation of Delhi
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:March 1, 2020 9:47 am
  • Updated:March 1, 2020 9:47 am

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসার আগুনের বলি হয়েছেন বহু মানুষ। দিল্লিবাসীর মনের ভিতর তৈরি হয়েছে বিদ্বেষের গভীর খাদ। রাজধানীর এমন পরিস্থিতি নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন অমর্ত‌্য সেন। শনিবার ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “ভারতের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তার কারণ আছে। দিল্লিতে যা ঘটেছে ভারতবাসী হিসাবে আমি উদ্বিগ্ন।”

শনিবার শান্তিনিকেতনে প্রতীচী ট্রাস্টের বার্ষিক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে সিএএ-র ইস্যুতে দিল্লির হিংসা নিয়ে এ কথাই বলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি খুবই উদ্বিগ। দেশের রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত। সেখানে যদি সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হয়, আর সেই অত্যাচার যদি পুলিশ আটকাতে না পারে বা প্রয়োজনীয় চেষ্টাও না করে, এমন অভিযোগ সঠিক হলে চিন্তা করার নিশ্চয়ই কারণ আছে।” এখানেই থামেননি। সঙ্গে জুড়ে দেন, “এটা তো ঠিকই যাঁরা মার খাচ্ছেন আর যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে মুসলমান ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনেক বেশি। ভারত একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখানে হিন্দু-মুসলমানে পার্থক্য করলে তো চলবে না। অতএব এটা যদি ঘটতেই থাকে তাহলে গর্বিত ভারতীয় নাগরিক হিসেবে নিশ্চয়ই চিন্তার বড় কারণ আছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: মার্চে ৩ দিনের ব্যাংক ধর্মঘট স্থগিত, আন্দোলনকারীদের নয়া ঘোষণায় স্বস্তিতে গ্রাহকরা]

কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। অমর্ত্য সেনের কথায়, “গন্ডগোল হচ্ছে, কিন্তু কী কারণে হচ্ছে, দোষটা কোথায় হচ্ছে, সরকারি চেষ্টার অভাবের জন্য নাকি পুলিশের অক্ষমতার জন্য, সেগুলি আমাদের বিচার করতে হবে। আমি নানা বিচারে বিশ্বাসী। কিন্তু বিচার না করেই জবাব দেওয়ায় বিশ্বাসী নই।’’ দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেন, “এখানে কোনও বচসার জায়গা আছে বলে মনে করি না। যেখানে সামাজিক যুদ্ধ চলছে, সেখানে পরিস্থিতি শান্ত করাটা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু তার সঙ্গে অন্য দলের সমালোচনা করলে তাদের সুবিধা হবে না, এটা মনে করার কারণ দেখি না।

Advertisement

বাংলাদেশি ছাত্রী আফসারা মিমকে ভারত ছাড়ার নির্দেশের প্রসঙ্গও উঠে আসে তাঁর মন্তব্যে। “মাত্র সাড়ে তিন মিনিট খবরের কাগজে এই বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। তবে কাগজে যা পড়লাম, তিনি কোনও প্রতিবাদী মিছিলের ছবি ইন্টারনেটে লাগিয়েছিলেন। তার জন্য তাঁকে দেশ থেকে দূর করে দেওয়ার পক্ষে যুক্তি কতটা শক্তিশালী, সেটা বিচার করা কঠিন। এখনও অবধি যা দেখেছি, তাতে আমি খুঁজে পাইনি, কী কারণ থাকতে পারে যার জন্য তাঁকে দেশ থেকে তাড়ানো হবে? কোনওরকম কারণ নেই, এটা আমি বলছি না। কিন্তু সে কারণগুলো কী তা জানতে আমি উদগ্রীব।” বলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।

দেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা নিয়ে অমর্ত্য সেনের মন্তব্য, “ভারতে গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগের কারণ তো সত্যিই আছে। গণতন্ত্রে দুটো দিক থাকে। মানুষের খোলাখুলি আলোচনার সুযোগ থাকে। যেটাকে জন স্টুয়ার্ট মিল বলেছেন, ডেমোক্র্যাসি ইজ গভর্নমেন্ট বাই ডিসকাশন। এই আলোচনা যদি বন্ধ হয়, তাকে যদি রাজদ্রোহ বলে চাপা দেওয়া হয়, তাহলে নিশ্চয়ই ডেমোক্র্যাসির অভাব হচ্ছে মনে করার কারণ থাকবে। আমি বলছি না যে গণতন্ত্র যায় যায় করছে। বলছি না, গণতন্ত্রের স্বপক্ষে যুদ্ধ করে জেতার সম্ভাবনা নেই। সম্ভাবনা খুবই আছে।”

[আরও পড়ুন: ফের প্রাণভিক্ষার আরজি অক্ষয়ের, নির্ভয়ার চার ধর্ষকের ফাঁসি নিয়ে জটিলতা অব্যাহত]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ