বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: হোটেল খুলতেই ফের করোনার কোপ দার্জিলিংয়ে। মঙ্গলবার নতুন করে ১০ জন করোনা সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে। আর তাতেই আতঙ্ক আরও জাঁকিয়ে বসেছে শৈলশহরে।
শুনশান পথঘাট। এরই মধ্যে নিয়ম রক্ষায় কিছু হোটেল খোলা। যদিও এদিন শৈলশহরে করোনা সংক্রমিতের খবর মেলেনি। সোমবার দু’জন সংক্রমিত হওয়ার পর থেকে চকবাজারে কেনাকাটা কমেছে। পাহাড় থেকে সমতলে যানবাহন চলাচল করলেও সংখ্যায় ছিল কম। মূলত, পণ্য পরিবাহী ছোট গাড়ি দেখা গিয়েছে। এভাবে কতদিন হোটেল খুলে রাখা সম্ভব হবে? প্রথমদিন থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ট্যুর অপারেটরদের একাংশের দাবি, দ্রুত পাহাড়ের পর্যটনশিল্প স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ মোটেই নেই আপাতত। ভিন রাজ্য থেকে এখনও অনেকের ফিরে আসা বাকি রয়েছে। ওরা ফিরলে সংক্রমণের ছবিও পালটাবে। আর এই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের আশা না করাই ভাল।
মঙ্গলবার পর্যন্ত শুধুমাত্র দার্জিলিংয়ে ২৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছেই। এই পরিস্থিতিতে ১ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দার্জিলিঙের সব হোটেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হোটেল মালিক সংগঠন। এটা হলে অন্তত ১০ হাজার কর্মচারী বিপাকে পড়বে দেখে জিটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হোটেল মালিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতো মঙ্গলবার হোটেল খুলেছে। কিন্তু পর্যটকশূন্য পাহাড়ে এভাবে কি অদৌ চলা সম্ভব হবে! সংগঠনের সভাপতি সাঙ্গে শেরিং বলেন, “বুঝতে পারছি না পরিস্থিতি কেমন করে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে। কর্মীদের বেতনের কথা ভেবে অনেকেরই মাথা খারাপ হয়েছে।”
হোটেল মালিকদের একাংশ এদিনও জানিয়েছেন, শৈলশহরে এই মুহূর্তে পর্যটক আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই হোটেল চালু রাখা অর্থহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং শহর ও সংলগ্ন অঞ্চলে ৩৮০টি হোটেল রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ পর্যটক ভিড় করে এখানে। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে সবই ফাঁকা। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যান অনিত থাপা অবশ্য জানিয়েছেন, পর্যটনশিল্পকে ফের নতুন করে উজ্জীবিত করতে সব রকম চেষ্টা চলছে। কারণ, হোটেল বন্ধ থাকলেও খারাপ বার্তা যাবে। সেই কারণেই সব খোলা রেখে সতর্কভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার আবেদন রাখা হয়েছে।
যদিও সিকিম ট্যুরিজমের উপদেষ্টা রাজ বসু মনে করেন, করোনার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে। পর্যটন শিল্পের সংকট খুব সহজে মিটছে না। করোনা পরিস্থিতির জন্য পাহাড়ের প্রায় ১০ হাজার হোম-স্টে বন্ধের মুখে। কারণ স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রামে পর্যটক ঢুকতে দিতে রাজি নয়। সমস্যা খুব সহজেই কাটছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.