Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভিক্ষার চাল বিক্রি করে শৌচাগার নির্মাণ, বহরমপুরে নজির বৃদ্ধার

নিজের ও মেয়ের সম্মান বাঁচিয়ে প্রশংসিত ৮০ বছরের বৃদ্ধা।

Baharampur: Woman construct toilet from alm money
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 10, 2018 8:43 pm
  • Updated:February 10, 2018 8:43 pm

কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: ভিক্ষার চাল বিক্রির টাকায় বাড়িতে শৌচাগার বানালেন এক বৃদ্ধা। দিনের পর দিন ভিক্ষের চাল বাড়িতে জমিয়ে একসাথে বিক্রি করে আড়াই হাজার টাকা পান ৮০ বছরের বৃদ্ধা রহিমা বেওয়া। সেই টাকায় বাড়িতে শৌচাগার বানানোর কাজ শুরু  করে দিয়েছেন তিনি। শেষ বয়সে নিজের ও মেয়ের সম্মান বাঁচিয়ে নজির সৃষ্টি করলেন বহরমপুর ব্লকের নওদা পাড়ার রহিমা বেওয়া।

মুর্শিদাবাদ জেলাকে নির্মল জেলায় পরিণত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রশাসন। বিভিন্নভাবে প্রচার শুরু হয়েছে ব্লক থেকে গ্রামাঞ্চলে। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন এলাকার ছাত্রী থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা। মূলত তাঁদের চেষ্টাতেই গড়ে উঠছে শৌচাগার। দুঃস্থ পরিবারের মানুষও প্রশাসনিক প্রচারে শৌচাগার বানাতে উদ্যোগ নিচ্ছেন। ঘটিবাটি,  কখনও বা গরু ছাগল বিক্রি করে শৌচাগার বানাচ্ছেন জেলার মানুষ। কিন্তু যারা ভিক্ষুক?  ভিটে ছাড়া। যাঁদের বিক্রির কিছু নেই, তাঁরা?

Advertisement

[অনিচ্ছা সত্ত্বেও যাত্রীদের জোরাজুরিতে টোটো চালাল নাবালক, বেঘেরো মৃত ৭]

Advertisement

সমাজকে দূষণ মুক্ত করতে এই শ্রেণির মানুষও যে পিছিয়ে নেই তার প্রমাণ মিলল বহরমপুর ব্লকের প্রত্যন্ত এক গ্রামে। যে গ্রামের রহিমা বেওয়া তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন আজ থেকে প্রায় তিরিশ বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর তিন ছেলে বিয়ে করে ত্যাগ করেন মাকে। অসহায় মা ও  মেয়ে পড়ে যায় অথৈ জলে। শেষমেশ রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করতে হয় বৃদ্ধাকে। গত দশ বছর ধরে ভিক্ষার পর বয়সের ভারে এখন নড়তে পারেন না রহিমা। বর্তমানে তাঁর মেয়ে কমলা বেওয়া ভিক্ষা করে সংসার চালায়। সারাদিন ভিক্ষের চালে পেটে দানা পড়ে মা-মেয়ের। এমনই করেই চলে যাচ্ছিল তাঁদের।

কিন্তু পাড়ার ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা দিনের পর দিন বাড়িতে এসে অনুরোধের বিষয়টি তুললে ফেলতে পারেননি রহিমা বেওয়া। শেষমেশ ভিক্ষার চাল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। এদিন রহিমা বেওয়া জানান, ‘দু’দিন অন্তর পাড়ার ছেলেমেয়েরা বাড়িতে আসছে। কী আর করব বল বাবা? তাছাড়া বুড়ো বয়সে নড়ারও ক্ষমতা নাই। আগে মাঠে যেতাম, এখন আর যেতে না পেরে বাড়ির কোনায় পায়খানা করি। তাই ভেবে ভেবে জমানো চাল বিক্রি করে আড়াই হাজার টাকা পেয়ে ছোট পায়খানা বানাচ্ছি।’

[‘বাবা’ ডাক না শোনায় দু’বছরের শিশুর গায়ে অ্যাসিড ঢালল মেসো]

এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সম্পাদিকা হাবিবা বিবি জানিয়েছেন, দৌলতাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮ নং সংসদের নওদা পাড়ার এই গ্রামটিতে ১২০ টি পরিবার রয়েছে। তাঁদের প্রচারে প্রায় সমস্ত বাড়িতে শৌচাগার হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র সাতটি বাড়ি বাকি ছিল, তাঁরাও শৌচাগার বানাতে শুরু করে দিয়েছে। অন্যদিকে বহরমপুর ব্লকের বিডিও রাখি পাল জানিয়েছেন, ‘গ্রামের মধ্যে রহিমা বেওয়া চাল বিক্রি করে শৌচাগার বানিয়ে বিরল নজির স্থাপন করেছেন। তাঁর জন্য প্রশাসন অবশ্যই ভাববে।’ মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক পি উল্গানাথন জানিয়েছেন, ‘লাগাতার প্রচারের প্রভাবে মানুষ সচেতন হয়েছেন। দৌলতাবাদের রহিমা বেওয়া সমাজকে দূষণমুক্ত করতে এগিয়ে এসেছেন। তার জন্য তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ। রহিমা বেওয়াকে প্রশাসনিকভাবে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে জেলা প্রশাসনের বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।

ছবি- প্রতিবেদক

সৌমেন চক্রান্তের শিকার ও নির্দোষ, কারমেল কাণ্ডে অভিযুক্তর পাশে পরিবার

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ