Advertisement
Advertisement

Breaking News

লটারি বিক্রির টাকায় কুকুরদের খাওয়ানো

অভাবের সংসারে হাঁড়ি চড়ে না, লটারি বিক্রির কমিশনে কুকুরদের মাংসভাত খাওয়ালেন যুবক

স্বামীর পশুপ্রেম দেখে সহযোগিতার হাত বাড়ালেন স্ত্রীও।

Bankura youth spends earning to feed helpless stray dogs
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:January 3, 2020 4:18 pm
  • Updated:January 3, 2020 4:27 pm

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: নিজের অভাবের সংসার। দুয়ারে দুয়ারে লটারি বিক্রি করে কোনও মতে চলে সংসার। কিন্তু সেই লটারি বিক্রির কমিশন পেয়েই নিজের জন্য নয়, ভেবেছেন অবলা প্রাণীগুলোর কথা। যাদের সবাই দূর-দূর করে তাড়িয়ে দেয়, তাদের কথা। নিজের আয় করা টাকা থেকেই কুকুরদের নিজে হাতে মাংসভাত রেঁধে খাওয়ালেন দেবু গড়াই।

বাঁকুড়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গন্ধেশ্বরী নদী। তারই চরে গজিয়ে ওঠা বসতিতে থাকেন এক লটারি বিক্রেতা। আশ্রয় বলতে  একচিলতে ঝুপড়ি। তাতেই বাস করেন দেবু গড়াই। ছাপোষা জীবন। সেই এলাকাতেই ঘুরে ঘুরে লটারি টিকিট বিক্রি করে যা আয় হয়, তাতেই দিনযাপন করেন দেবু। নিজের যেমন করেই দিন যাপন হোক না কেন, একটু রাত হলেই এই কেশিয়াকোলে এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই তাঁকে দেখা যায় কুকুর-বেড়ালকে খাওয়াতে। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: নৈহাটির বাজি কারখানায় প্রবল বিস্ফোরণে উড়ল ছাদের চাল, মৃত্যু অন্তত ৪ জনের ]

সম্প্রতি দেবুর বিক্রি করা লটারি টিকিটে ৫০ লক্ষ টাকার ‘প্রাইজ মানি’ পেয়েছেন এক ক্রেতা। আর সেই জন্যই কেশিয়াকোলের টিকিট বিক্রেতা দেবু গড়াই প্রায় লক্ষাধিক টাকা কমিশন পেয়েছেন। সেই কমিশনের টাকাতেই শুক্রবার সকাল থেকে ভাত এবং মুরগির মাংস  রান্না করে কুকুরদের খাওয়ালেন তিনি। 

Advertisement

লটারি বিক্রেতা দেবুর এই পশুপ্রেম দেখে এরকম উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কেশিয়াকোলের বাসিন্দারা। আর তাই এদিন দেবুকে রান্নায় সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছেন প্রতিবেশী সুজিত সুর। তাঁর কথায়, “ভোলা মনের সহজ-সরল মানুষটি প্রতিদিন রাতে রাস্তার কুকুর-বিড়ালদের খাওয়ান। কাজেই লটারির টাকা পেয়ে নিজের জন্য কিছু করার চেয়ে য়ে মানুষটির কাছে অবলা প্রাণীদের পেটভরে খাওয়ানোটাই বড় হয়ে ওঠে, তাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিয়ে পারলাম না।” 

[আরও পড়ুন: বছরের শুরুতেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি, সিকিম-দার্জিলিংয়ে তুষারপাত ]

দেবুর এই ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টায় আপ্লুত তারা। স্বামীর এহেন পশুপ্রেম দেখে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্ত্রী রিনা গড়াইও। কীভাবে শুরু হল এই দেবু গড়াইয়ের সফর? এই প্রশ্নের উত্তরে রিনা বলেন, “বছর ১২-১৩ আগে রাস্তার একটি কুকুরকে অজ্ঞাত পরিচয় এক মোটর বাইক ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। যন্ত্রণায় কাতর হয়ে রাস্তায় শুয়ে ছিল কুকুরটি। যা দেখে আহত ওই কুকুরটিকে নিজের ঘরে নিয়ে আসেন দেবু। তারপর দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ওই আহত কুকুরকে সেবা করে খাইয়ে-দাইয়ে সুস্থ করে তোলেন তাঁর স্বামী। তখন থেকেই ওঁর মনে পশুপ্রেম। আর সেই থেকেই শুরু হয় দেবুর সফর।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ