Advertisement
Advertisement

Breaking News

কুলগাম

‘আর কাশ্মীর যাব না’, মৃত্যুভয় এখনও তাড়া করছে সাগরদিঘির বাসিরুলকে

পুলিশের তৎপরতায় বহালনগর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসিরুলকে।

Bengal man who survived kashmir attack, narrate horror
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:October 31, 2019 1:45 pm
  • Updated:October 31, 2019 5:23 pm

শাহাজাদ হোসেন ও গৌতম ব্রহ্ম: একের পর এক গুলির শব্দ কানে এসেছে। প্রতি মুহূর্তে অনুভব করেছেন যে, গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীরা। সেই পরিস্থিতি থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরেছেন। কিন্তু মৃত্যু ভয় যেন এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে সাগরদিঘির বহালনগরের বাসিরুলকে। হাসপাতালে থাকতেও রাজি নন তিনি, অগত্যা দাদা ও ভাইপোর সঙ্গে বাসিরুলকে সাগরদিঘি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল হাসপাতাল। ইতিমধ্যেই পুলিশের তৎপরতায় বহালনগরের পথে বাসিরুল। 

বুধবার রাতেই বিমানে কলকাতায় পৌঁছেছেন বাসিরুল। প্রথমে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সেখানে থেকে তাঁকে ইনস্টিটিউট অব সাইক্রিয়াটিক বিভাগে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসকদের দেখতেই বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বাসিরুল। মাকে দেখতে চাইছিলেন তিনি, সেই কারণে তাঁকে সাগরদিঘি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিছুদিন এখন বাড়িতেই রাখা হবে তাঁকে। হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসক প্রদীপ সাহাকে দেখতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিল বাসিরুল। তিনিই চিকিৎসকদের জানিয়েছিন বিভীষিকাময় সেই রাতের কথা। জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতোই মঙ্গলবার কাজ থেকে ফিরে রফিক শেখ, কামরুদ্দিন, মুরসালিম শেখ, নইমুদ্দিন শেখ ও রফিকুল শেখের সঙ্গেই কুলগামের ভাড়া বাড়িতে ছিলেন বাসিরুল সরকার। সন্ধের দিকে ভাত কিনতে গিয়েছিলেন। আর সেই সময়ই ঘটে যায় ভয়ংকর বিপদ। বাসিরুল জানিয়েছেন, ভাত কিনে ঘরে ফিরে তিনি দেখেন কেউ সেখানে নেই। কিছু বুঝতে না পেরে তিনিও ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়েন। সেই সময় এক দোকানদারের কাছে তিনি জানতে পারেন যে, কয়েকজন তাঁর সঙ্গীদের ঘর থেকে টানতে টানতে বের করে নিয়ে গিয়েছে। আতঙ্কে বাড়ির মালিকের ঘরে যান বাসিরুল। সেই সময় কানে আসে একের পর এক গুলির শব্দ। মুহূর্তেই নিশ্চিত হয়ে যান যে, এক ভয়ংকর দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। এরপরই প্রকাশ্যে আসে ৫ শ্রমিকের মৃত্যুর খবর। ক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা বাংলা। তড়িঘড়ি রাজ্যে ফেরানো হয় দেহ। নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় প্রশাসন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কফিনবন্দি হয়ে সাগরদিঘি ফিরল রফিকুলরা, কান্নায় ভেঙে পড়ল গোটা গ্রাম]

গোটা ঘটনার পর দু’দিন পেরিয়েছে। শ্রীনগর থেকে কলকাতার হাসপাতালে ফিরেও যেন দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না বাসিরুল। কার্যত চোখের সামনে সঙ্গীদের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। এই ঘটনায় ভূস্বর্গ কাশ্মীরের নামটাই তাঁর কাছে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আর কোনও পরিস্থিতিতেই কাশ্মীরমুখো হবেন না তিনি। চিকিৎসকদের কথায়, বিরিভমেন্ট স্টেজের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বাসিরুল। সুস্থ জীবনে ফিরতে কয়েকটি দিন চিকিৎসদের তত্ত্বাবধানে থাকা প্রয়োজন তাঁর। তবে তাঁর আগে ট্রমা কাটাতে বাড়ি পাঠানো হল বাসিরুলকে। 

Advertisement

দেখুন ভিডিও:

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ