জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সিএএ (CAA) নয়, ‘নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫’-এর আওতায় ভিনদেশি অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। গুজরাট নির্বাচনের (Gujarat Election) আগে চমকপ্রদ পদক্ষেপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। এতে মতুয়া, নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের সুবিধা হবে বলে দাবি বঙ্গের গেরুয়া শিবিরের। তবে এতে মতুয়ারা আদৌ কতটা সুবিধা পাবেন, তা নিয়ে নিজেরাই দ্বিধাবিভক্ত। এমনকী মতুয়া (Motua) মহাসংঘ ঠাকুরবাড়ির অন্দরেও এ নিয়ে ঐক্যের ছবি ধরা পড়ল না।
গুজরাটের আনন্দ ও মেহসানার জেলাশাসকদের বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা মুসলিম ব্যতীত ৬ ধর্মের শরণার্থীদের (Refugee) নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বঙ্গ রাজনীতিতেও এর আঁচ পড়েছে। তৃণমূল-বিজেপি যুযুধান দু’পক্ষের নেতারা এনিয়ে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন। এই বিষয়ে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) বক্তব্য, ”ভারতীয় জনতা পার্টি CAA কার্যকর করার জন্য দায়বদ্ধ। সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা ও করোনা কালের জন্য সেটা সম্ভব হয়নি। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্য সরকারের মতামত গুরুত্বপূর্ণ, তাই আমাদের রাজ্যে তা চালু করার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু গুজরাটের রাজ্য সরকার ভারতীয় জনতা পার্টি দ্বারা পরিচালিত এবং কেন্দ্রীয় সরকারও জনতা পার্টিরই, সেই কারণে এই নির্দেশ কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে। আমরা আনন্দিত এবং আমরা আশাবাদী আগামীতে পুরো দেশের পাশাপাশি এ রাজ্যেও CAA কার্যকর হবে।’’
মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ”গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব। কী প্রমাণপত্রের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে আমরা ঠিক স্পষ্ট নই। সেটা জানার পরেই আমরা সঠিকভাবে বলতে পারব।”
প্রসঙ্গত, প্রতিশ্রুতি মতো সিএএ (CAA) প্রয়োগ এবং নাগরিকত্ব সংশোধন আইন চালু নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের গড়িমসিতে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমছিল রাজ্যের মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে। রবিবার ঠাকুরবাড়িতে দাঁড়িয়ে রাজ্য বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের উপর নিজের অসন্তোষ খুল্লামখুল্লা জানিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। পাশাপাশি এই ইস্যুতে রাজ্য বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে খোঁচা দিতেও কসুর করেননি তিনি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে মতুয়া সম্প্রদায়ের সমর্থনের পাল্লা কোন দিকে ঝুঁকবে, সে প্রশ্নের মুখে শান্তনু জবাব, ‘‘এর উত্তর ভাল দেবেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। কী চলছে আর কী চলছে না, আমি সত্যিই কিছু জানি না। রাজ্যের নেতাদের জিজ্ঞাসা করা হোক। তাঁরাই বলতে পারবেন।’’ আর সোমবারের পর থেকে তাঁর দাবি, মতুয়ারা খুশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.