Advertisement
Advertisement

Breaking News

চালে ভেজাল

রেশনের চালে ভেজাল মেশানোর অভিযোগ, CBI তদন্তের দাবি রানাঘাটের সাংসদের

বিনামূল্যে চাল না পেয়ে মিথ্যে অভিযোগ করছে বিজেপি, কটাক্ষ তৃণমূলের।

BJP MP accused tmc for adulterated rice distribution from ration

সাংবাদিক বৈঠকে জগন্নাথ সরকার

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:May 6, 2020 10:06 pm
  • Updated:May 6, 2020 10:06 pm

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: বিভিন্ন সেন্টার থেকে সরকারি চাল চোরাপথে কিনে তার মধ্যে কাঁকর জাতীয় বিভিন্ন রকমের ভেজাল মেশানো হচ্ছে। তারপর সেই চালই আবার সরকারকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন নদিয়া জেলার রানাঘাট লোকসভার সাংসদ জগন্নাথ সরকারl

বুধবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ভেজাল মেশানো ওই চাল সরকারকে বিক্রি করে দেওয়ার পর পৌঁছে যাচ্ছে রেশন দোকানে। সেখানে নিম্নমানের চাল পেয়ে মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এটা বড় দুর্নীতি। চারিদিকে রেশনের যা কেলেঙ্কারি এবং বিক্ষোভ হচ্ছে, তার পেছনে রয়েছে এই সরকারের দুর্নীতি। আমি প্রয়োজনে আদালতে যাব। জনস্বার্থ মামলা করব সিবিআই তদন্ত চেয়ে।’

Advertisement

[আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত বৃদ্ধাকে ঘরছাড়া করলেন বাড়িওয়ালা, কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে কাটল জট ]

তিনি আরও বলেন, ‘রানাঘাটের হবিবপুরের একটি রাইস মিল কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে FCI-এর চাল কিনে লরি ভরতি করে তার মিলের গোডাউনে ঢুকিয়েছেl বলা হয়েছে, বর্ধমান থেকে ওই চাল কেনা হয়েছেl কিন্তু, দুটি ফলস চালান ব্যবহার করা হয়েছেl অনেক টাকার লেনদেন হয়েছেl তদন্ত করলে সব ধরা পড়ে যাবেl’

Advertisement

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে হবিবপুরের ওই রাইস মিলে বাইরে থেকে লরি ভরতি চাল ঢুকতে দেখে মিলের সামনে বিক্ষোভ দেখান প্রচুর মানুষl ছিলেন বিজেপি কর্মীরাওl ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন স্থানীয় সাংসদ জগন্নাথ সরকারওl বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ছিল, ‘কোনও রাইস মিলে বাইরে থেকে লরি ভরতি চাল ঢুকতে পারে নাl ঢুকতে পারে কেবলমাত্র ধানl অথচ ওই মিল কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে চাল লরি ভরতি করে নিয়ে এসে নিজের মিলে ঢুকিয়েছিল চালে ভেজাল মেশানোর জন্যl’

যদিও পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবং ওই মিল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সরকারকে যে পরিমাণ চাল তাদের দেওয়ার কথা, সেই পরিমাণ চাল দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল। তাই বর্ধমান থেকে লরি ভরতি করে চাল কিনে এনেছিল ওই মিল কর্তৃপক্ষ। এমনকী ওই মিলের মালিক কৃষ্ণ সাউ পুলিশের কাছে সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নামে লিখিত অভিযোগ করেন, ‘লোকজন নিয়ে সাংসদ বেআইনিভাবে তাঁর মিলের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন লকডাউনের মধ্যে। তাঁকে অযথা ভয় দেখানো হয়েছে।’

সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে কেস রুজু করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছেl যদিও সেই অভিযোগ ঠিক নয় বলে জানিয়ে সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘বিক্ষোভের দিন কয়েকজন বিজেপি কর্মী ছিল ঠিকই। তবে বেশিরভাগই ছিল ওই মিলের মালিকের লোকজন। আমিও লকডাউন ভাঙার মত কাজ করিনি। মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে।’ এমনকী পালটা অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও তাঁর অভিযোগ এখনও পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করা হয়নি বলে জগন্নাথ সরকার জানিয়েছেন।

[আরও পড়ুন: কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের বদলে কেরল ফেরত যুবককে আটকে রাখা হল স্কুলে! চাঞ্চল্য ফরাক্কায়]

পাশাপাশি বুধবার তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘হবিবপুরের ওই মিলের মালিক তিনি আদৌও বর্ধমান থেকে চাল কেনেননি। যে গাড়িতে করে চাল নিয়ে আসা দেখানো হয়েছে, সেটা বর্ধমানে যায়নি। ফলস চালান ব্যবহার করা হয়েছে। যে জিএসটি নাম্বার দেখানো হয়েছে, সেই নম্বর আদৌ চালু নয়। আসলে ওই রাইস মিলের মালিক বাদকুল্লার একটি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাল কিনেছেন ৫০০ বস্তাl সেই চাল মিলের মধ্যে নিয়ে তাতে কাঁকর জাতীয় ভেজাল বা খুদ মিশিয়ে বস্তাবন্দি করে আবার তা সরকারকে বিক্রি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। গোটা রাজ্যে এই ধরনের দুর্নীতি চলছেl বিভিন্ন সেন্টার থেকে চোরাপথে চাল কিনে সেই চালের সঙ্গে কাঁকর জাতীয় ভেজাল মিশিয়ে আবার তা সরকারকে বিক্রি করা হচ্ছেl সেই চাল মানুষ পেয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেনl কোনও রাইস মিল কর্তৃপক্ষ ধান কিনতে পারে ঠিকই কিন্তু, চাল কিনতে পারে নাl অথচ প্রশাসন বিভিন্নভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেl এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে তৃণমূলের লোকজনওl’ তিনি ফলস চালান দেখানো এবং চালু নয় এরকম জিএসটি নম্বর ব্যবহার করার প্রমাণ দেখাতে পারবেন বলেও দাবি করেছেন।

যদিও হবিবপুর রাইস মিলের বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে রানাঘাট এক নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সঞ্জিত সরকার জানিয়েছেন, ওই মিল কর্তৃপক্ষকে যে চালের টার্গেট দেওয়া হয়েছিল ওরা তা পূরণ করতে পারেনিl টার্গেট পূরণ না করতে পারলে বাইরে থেকে চাল কিনতে না পারার কিছু নেই তো। তবে এফসিআই থেকে চাল কেনার যে অভিযোগ এসেছিল, সেই অভিযোগ ঠিক নয়l ওই মিল কর্তৃপক্ষ বাদকুল্লার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাল কিনে ছিলl সেই ব্যবসায়ী বর্ধমান থেকে চাল এনেছিলl আমাদের কাছে সব কাগজপত্র রয়েছেl ইতিমধ্যেই মহকুমা খাদ্য নিয়ামককে নিয়ে তদন্ত হয়ে গিয়েছেl’ অভিযোগ এরপরও জগন্নাথ সরকার চাল কেনাবেচার বিষয়ে তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। সেই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রানাঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন তদন্ত করছেl কোনও দুর্নীতিকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রশ্রয় দেয় না। তবে ওই মিল কর্তৃপক্ষের কাছে বিজেপির লোকজন বিনামূল্যে চাল দেওয়ার দাবি করেছিল। তাতে রাজি না হওয়ায় ওরা মিথ্যা অভিযোগ জানিয়েছেl’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ