ছবি: প্রতীকী
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন,করোনার অজুহাতে উন্নয়নের কাজ (Developmental Work) যেন থমকে না যায়। অথচ বাস্তবে তেমনটাই ঘটছে। কোভিডের থাবায় আটকে অর্থ, জরুরি কাজ ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পের সবটাই থমকে গিয়েছে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে (Purulia Zilla Parshad)।
লকডাউনের জেরে মার্চের শেষ দিক থেকেই এই কাজ প্রায় বন্ধ রয়েছে। ফলে গত আর্থিক বছর (২০১৯-২০) শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ২০ কোটি টাকা আটকে গিয়েছে। কিছু প্রকল্পের কাজ ওই আর্থিক বছর (২০১৯-২০) পেরিয়ে চলতি আর্থিক বছরে (২০২০-২১) শেষ করলেও সেই রূপায়ণকারী সংস্থাগুলি কোনও টাকা পাচ্ছে না। তাই জেলা পরিষদ থেকেই বলে দেওয়া হয়েছে, কাজ মাঝপথে বন্ধ রাখতে। না হলে কাজ সম্পন্ন করার পরেও টাকা মিলবে না।
তবে আটকে থাকা টাকা যাতে দ্রুত পাওয়া যায় তাই পুরুলিয়া জেলা পরিষদ পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছে। অনুমোদনের জন্য ওই বিভাগকে চিঠি লিখেছে। ওই বিভাগ অর্থদপ্তর থেকে অনুমোদন পেলেই আটকে থাকা টাকা খরচ করতে পারবে এই জেলা পরিষদ। সম্প্রতি অর্থ স্থায়ী সমিতির বৈঠকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। অর্থদপ্তর থেকে যাতে টাকা দ্রুত মেলে সেই বিষয়ে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত ও গ্রামন্নেয়ান বিভাগের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে। সভাধিপতির কথায়, “কোভিড পরিস্থিতিতে গত আর্থিক বছরের প্রকল্পগুলির কাজ শেষ করা যায়নি। তাই বিধি মোতাবেক ওই আর্থিক বছরের টাকা আটকে গিয়েছে। আমরা এই বিষয়ে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছি। আমি প্রয়োজনে বিভাগীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। তবে অর্থদপ্তর অনুমোদন দিলেই টাকা নিয়ে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।”
চলতি বছরে নতুন বিধি অনুযায়ী এক আর্থিক বছরের টাকা সেই আর্থিক বছরে খরচ করতে না পারলে তা ফেরত দিতে হবে। তারপর প্রয়োজনের ভিত্তিতে নতুন করে টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা। আগে সংশ্লিষ্ট আর্থিক বছরে সেই টাকা খরচ করতে না পারলে তা পরের আর্থিক বছরে খরচ করা যেত। এই নতুন নিয়মের পরেও পুনরায় টাকা বরাদ্দের ঝামেলায় তাছাড়া বকেয়া থাকায় ফেরত না দিয়ে পুরুলিয়া জেলা পরিষদ অনুমোদনের জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের দ্বারস্থ হয়। সাধারণত এরকম ক্ষেত্রে আর্থিক বছর শেষ হওয়ার মাসখানেকের মধ্যেই অনুমোদন মিলে যায়। কিন্তু এবার কোভিড পরিস্থিতিতে অর্থের অভাবে অনুমোদনই মিলছে না।
পুরুলিয়া জেলা পরিষদ সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, আটকে থাকা ২০ কোটি টাকার মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পের টাকা গত আর্থিক বছরের জানুয়ারি মাসে আসে। ফলে তিন মাসের মধ্যে দরপত্র আহ্বান ও কাজ শেষ করে অর্থ খরচ করা যায়নি। তাছাড়া মার্চের শেষ থেকে কোভিডের জন্য দীর্ঘ লকডাউনে কাজই বন্ধ হয়ে যায়। আটকে থাকা প্রকল্পগুলি হল – চতুর্থ অর্থ কমিশন, রাস্তার জন্য স্টেট ফান্ড ও তৃতীয় অর্থ কমিশন। পুরুলিয়া জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচনের বছর বা তার আগের বছর বিভিন্ন প্রকল্পে প্রচুর টাকা আসে। কিন্তু এবার কোভিড পরিস্থিতিতে সেই ছবিটা আমূল বদলে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.