Advertisement
Advertisement

Breaking News

ঘরে জ্বলে না আলো, বাহারি স্মার্টফোন চার্জ দিতে ছুটতে হয় বহু দূর

শিল্পশহর দুর্গাপুরের পাশেই এই অসম ‘উন্নয়ন’।

Electricity still a luxury in this Durgapur suburb
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 12, 2018 12:47 pm
  • Updated:February 12, 2018 12:47 pm

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: হাতের মুঠোয় নামি-দামি স্মার্টফোন। কিন্তু সেই ফোন চার্জ দিতে যেতে হয় দূর গাঁয়ে। যে গাঁয়ে পৌঁছেছে আধুনিকতার আলো! দেশ নাকি ‘ডিজিটাল’ হয়েছে। অথচ এই অসম ‘উন্নয়ন’ দেখা গেল শিল্পশহর দুর্গাপুরের পাশেই। যেখানে স্বাধীনতার এত বছর পরও পৌঁছে দেওয়া যায়নি বিদ্যুৎ সংযোগ।

[ফেসবুক সহায়, মানসিক ভারসাম্যহীন বোনকে ফিরে পেলেন দাদা]

Advertisement

কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের বারোবিঘা গ্রাম। কাঁকসার ‘জঙ্গলমহল’ বলে পরিচিত এই আদিবাসী গ্রাম। কিন্তু স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও এই গ্রামের ঘরে-ঘরে এখনও আসেনি বিদ্যুতের আলো। তবে এখানেই চমকের শেষ নয়। বারোবিঘা গ্রামের বিদ্যুতের এই বৈষম্য নাকি জানাই নেই পানাগড় বিদ্যুৎ বিভাগের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান প্রতিবেদককে। গ্রামে সত্তরটি আদিবাসী পরিবারের বাস। একসময় এখানে ঘরে ঘরে বিদ্যৎ ছিল। স্বাভাবিক পরিচয় বহন করতে পারতেন গ্রামের প্রায় চারশো আদিবাসী বাসিন্দা। ১৯৮০ সালে এই বারোদিঘি গ্রাম বিদ্যুতের স্পর্শ পায়৷ ঘরে ঘরে তখন আলোর রোশনাই৷ বিজ্ঞানের এই অভূতপূর্ব আবিষ্কারের ছোঁয়া পেয়ে তখন পুলকিত গ্রামের আট থেকে আশি। কিন্তু ক্ষণস্থায়ী সেই সুখ ঘন কালো অন্ধকারে ঢেকে যায় ঠিক দুই বছর পরই। গ্রামের একমাত্র ট্রান্সফর্মারটি আচমকা পুড়ে যায়৷ তার সঙ্গে যেন কপাল পোড়ে এই অসহায় মানুষগুলোর। মেরামতি হয়, তবে সবার ঘরে আর আলো পৌঁছায় না। তৎকালীন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতি ঘরে আলাদা করে বিদ্যুতের মিটার বসিয়ে তবেই ফের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। একবার আলোর স্বাদ পেয়ে যাওয়া ‘বোকা’ মানুষগুলো প্রশাসনের এই আশ্বাসকে আর্শীবাদ মনে করে প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে বসে। কিন্তু সেই প্রতীক্ষা এখন দীর্ঘশ্বাসে পরিণত হয়েছে। তবে এরই মধ্যে গ্রামের কিছু পরিবার বারবার তদ্বির করে নিজেদের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ করতে পারলেও, অধিকাংশের ঘরই এখনও আঁধারে ডুবে। গ্রামের বহু আদিবাসী মানুষের কাছে স্মার্টফোন থাকলেও চার্জ দিতে ছুটতে হয় প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে দোমড়ার দোকানে। মোবাইল পিছু চার্জের খরচ দশ টাকা।

Advertisement

[অঙ্কিতের স্মৃতি ফিরল নবদ্বীপে, মাথায় বল লেগে মৃত্যু দৃষ্টিহীন ক্রিকেটারের]

কোল ঘেঁষে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর যখন নিয়নের আলোতে ভাসে, তখন দূর আকাশে সেই আলোর ছায়া দেখে নিজেদের কপালকেই দোষেন বারোবিঘা গ্রামের অশীতিপর দশরথ মাড্ডি কিংবা সুবল সোরেনরা। তাঁদের ঘরের পড়ুয়াদের পড়াশোনা বন্ধ সূর্য ডুবলেই। টিভি নামক মনোরঞ্জনের বস্তুটি এখানে অপ্রাসঙ্গিক। রেশন দোকান থেকে মাসে একবার তিন লিটার করে কেরোসিন দেওয়া হয়। কিন্তু তা যে গ্রাসাচ্ছাদনের পক্ষেও যথেষ্ট নয়। গ্রামেরই প্রবীণ বাসিন্দা জার্মান কিসকুর কথায়, “গ্রামে কিছু ঘরে বিদ্যুৎ আছে। কিন্তু বেশির ভাগ ঘরেই তা নেই। ফলে শিশুদের মধ্যে বৈষম্যের সৃষ্টি হচ্ছে।” এবিষয় কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, “এতগুলো পরিবার যে বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি, তা জানতাম না। বিষয়টি আমাকে জানানোও হয়নি। যত শীঘ্র সম্ভব তাঁরা দরখাস্ত করবেন, তত তাড়াতাড়ি ওই পরিবারগুলিকে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে৷” কিন্তু প্রশাসনের উপরই যে ভরসা কার্যত চলে গিয়েছে ওই পরিবারগুলির। তাই এখন আর দৌড়ঝাঁপের ইচ্ছেও হারিয়েছেন বারোবিঘার বাসিন্দারা।

ছবি: উদয়ন গুহরায়

[বছরভর অটুট থাকবে এই উপহার, ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে ‘সুপারহিট’ পাটের গোলাপ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ