তন্ময় মুখোপাধ্যায়: তর্ক শেষ। রসগোল্লা মানেই বাংলার। জিআই ট্যাগ এসেছে বলে আহ্লাদ লাগামছাড়া। এই আবহে আরও এক নজির বঙ্গের। বিশ্বের ‘সবথেকে বড়’ রসগোল্লার ঠিকানাও এখন বাংলার। ফুলিয়ায় তৈরি হল ১০ কেজি ওজনের পেল্লাই রসগোল্লা।
[বিশ্বের সবথেকে বড় রসগোল্লা, ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে ফুলিয়া]
নবীনচন্দ্র দাশ আধুনিক রসগোল্লার কলম্বাস হলে ‘আদি’ রসগোল্লার স্রষ্টা ফুলিয়ার হারাধন ময়রা (মণ্ডল)। সেই হারাধন ময়রার কর্মভূমিতে সৃষ্টি হল এই রেকর্ড। বাংলার রসগোল্লা যখন জাতে উঠেছে তাকে আরও অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে ফুলিয়ার দুই সংগঠন চিন্তাভাবনা শুরু করে। স্থানীয় আলবেকা ফাউন্ডেশন এবং জুনিয়র ওয়ান হান্ড্রেড ক্লাবের সেই পরিকল্পনার ফসল বিশ্বের ‘সবথেকে বড়’ রসগোল্লা। রবিবার বিকেল পাঁচটা থেকে ফুলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বসে যায় ভিয়েন। চলে আসেন স্থানীয় পাঁচ ময়রা এবং তাঁদের ২৫ জন সহযোগী।
প্রায় সাড়ে পাঁচ কেজি ছানা, তিনশো গ্রাম ময়দা, ১৫০ কেজি চিনি এবং ৯০ লিটার জল দিয়ে শুরু হয়ে যায় কর্মকাণ্ড। তবে প্রথমবার রসগোল্লা বানানো হলেও কোনও কারণে তা ফেটে যায়। আবার নতুন উদ্যমে শুরু হয় ‘সবথেকে বড়’ রসগোল্লার চ্যালেঞ্জ। রাত দশটায় কাজ হাসিল। বিশালকার কড়াইয়ে চিনির রসে তখন গড়াগড়ি খাচ্ছে পেল্লাই গোল্লা। একেবারে তুলতুলে। ঘ্রাণে অর্ধেক ভোজনের লোভে তখন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তিল ধারণের জায়গা নেই। রসগোল্লার মৌতাতে মিষ্টিবিলাসীদের পায় কে।
[কোন পথে জয়যাত্রা শুরু হল বাংলার রসগোল্লার?]
তাদের অবশ্য হতাশ হতে হয়নি। আয়োজকদের তরফে অভিনব বসাক জানান, ‘‘এক হাজারেরও বেশি মানুষকে মিষ্টিমুখ থুড়ি রসগোল্লা মুখ করানো হয়।’’ কীভাবে ফুলিয়া এই রেকর্ড করল? অভিনবের ব্যাখ্যা, ‘‘বাংলাদেশের ঢাকায় আড়াই কেজি রসগোল্লা তৈরি হয়েছিল। যা এ পর্যন্ত দুনিয়ার বৃহত্তম। ঢাকাকে এযাত্রায় অনেকগুলো গোল দিয়েছে ফুলিয়া।শুধু রেকর্ড নয়, হারাধন ময়রাকে সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ বলে আয়োজকরা জানান। পাশাপাশি এদিন বাংলার অন্যতম মিষ্টান্ন গবেষক তাপস কুমার বন্দোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। প্রসঙ্গত, তাপসবাবুর তথ্য সম্বলিত পুস্তক বাংলার রসগোল্লার জিআই-এর দাবিকে জোরালে করে। ফুলিয়ায় মিষ্টিযজ্ঞে যোগ দিয়ে এই মিষ্ট গবেষক জানিয়ে দেন সারা দুনিয়া যা করতে পারেনি তা দেখিয়ে দিয়েছে ফুলিয়া। হারাধন মণ্ডলের নামে ফুলিয়ার একটি রাস্তার নামকরণে তিনি আবেদন জানান।’’ কেষ্ট পাল, মিঠাই পালের মতো ময়রারা এমন কর্মকাণ্ডে যোগ দিতে পেরে গর্বিত। একটা টাকা তারা পারিশ্রমিক নেননি। হারাধন ময়রার তাঁরা যে উত্তরসূরী!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.