Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিচারকের দাওয়াইয়ে কাজ, মিষ্টিমুখে পুনর্মিলন সিউড়ির দম্পতির

একেই বলে মধুরেণ সমাপয়েৎ!

Gap bridged, Suri couple reunited, thanks to judge
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 19, 2018 10:14 am
  • Updated:January 19, 2018 11:53 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডিভোর্স চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিউড়ির এক দম্পতি। সব শুনেটুনে বিচারক দিন তিনেক তাঁদের হোটেলে থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু অর্থের কারণে অপারগতা জানায় স্বামী। বিচারক তখন নিজের পকেট থেকে পয়সা দিয়েই তাঁদের হোটেলবাসের নির্দেশ দেন। অভিনব সে সিদ্ধান্তে চমকে গিয়েছিল গোটা রাজ্য। অবশেষে বরফ গলল। শুক্রবার মামলার শুনানিতে আদালতেই চার হাত এক হল। মিষ্টিমুখে পুনর্মিলন দম্পতির।

ক্ষোভে ফুঁসছে বাসন্তী, চড়াবিদ্যায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ ]

Advertisement

গত মঙ্গলবার বীরভূম আদালত সাক্ষী ছিল সেই অভূতপূর্ব ঘটনার। যেখানে বিচারক নিজের পয়সায় বিবাদমান দম্পতিকে হোটেলবাসের নির্দেশ দিচ্ছেন। বিচারক পার্থসারথি সেনের সে সিদ্ধান্তে চমকে গিয়েছিল গোটা রাজ্য। দাম্পত্যে অশান্তি নৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু তা মাত্রাছাড়া পর্যায়ে পৌঁছাতেই বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন সিউড়ির বাসিন্দা গৌতম দাস। গতবছর মার্চেই অহনার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। কিন্তু দিনকয়েক পর থেকেই ফোঁপরা হতে থাকে সম্পর্ক। শেষমেশ জল গড়ায় আদালতে। শুনানি চলাকালীন বিচারক দু’পক্ষের যুক্তিই ভালভাবে শোনেন। দু’জনেরই অভিযোগের ধরন প্রায় একই। মারধর, অশান্তি তৈরি ইত্যাদির চেনা ছকেই এগিয়েছে দাম্পত্য অশান্তি। সাধারণত এই ধরনের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীকে কিছুদিন একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতে ঝামেলা মিটে গেল তো চুকে গেল। নইলে আইন নিজের পথ ধরে। বিচারক সেনও তাই করেছিলেন। সিউড়ির এক হোটেলে দিন তিনেক থাকার নির্দেশ দেন দম্পতিকে। কিন্তু অর্থসংকটের কথা জানিয়ে তাতে গররাজি হন গৌতম। তখনই বিচারক থেকে একেবারে অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন পার্থসারথিবাবু। জানান, তিনি টাকা দেবেন। টাকা নিয়ে ভাবার কোনও দরকার নেই। এরপরই গুটিগুটি হোটেলমুখো হন দম্পতি। একটি রাত কাটানোর পরই বরফ গলার ইঙ্গিত মিলেছিল। সংবাদমাধ্যমের সামনে অহনা জানিয়েছিলেন, তিনি তো সংসার করতেই চান। তাই লড়াইটা চালাচ্ছেন। একই কথা গৌতমেরও। তিনিও জানিয়েছিলেন, এক রাত একান্তে কাটানোর পরই অনেকটা ঝামেলা মিটেছে। ১৯ জানুয়ারি শুনানির জন্য অপেক্ষা করছিলেন দু’জনেই।

Advertisement

খোঁজ নেয় না অফিসার ছেলে, প্রশাসনের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন বৃদ্ধার ]

শুক্রবার ছিল পরবর্তী শুনানির দিন। এদিন আদালতেও বিচারক পার্থসারথিবাবু ছিলেন অভিভাবকের ভূমিকাতেই। দুই দম্পতির হাতে হাত রেখে একসঙ্গে থাকার প্রতিজ্ঞা করতে বলেন। তাঁরা হাসিমুখে সে নির্দেশ পালনও করেন। তবে ঝামেলা শুধু গৌতম-অহনার মধ্যেই ছিল না। ছিল দুই পরিবারের মধ্যেই। ঝানু বিচারকের তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। এদিন আদালতে তাই ডাক পড়েছিল অভিভাবকদেরও। গৌতমের বাবা অভিযোগ করেন, বউমা বড্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত। সারাক্ষণ ফোনে মুখ গুঁজে থাকেন। বিচারক তখন একেবারে ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমার উদাহরণ টেনে আনেন। সেখানে ফারহান ফটোগ্রাফার হতে চেয়েছিল। কিন্তু বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল অন্যরকম। শেষমেশ নিজের ইচ্ছেতেই অবশ্য জীবনে সফল হয়েছিল ফারহান। দৃষ্টান্ত টেনে বিচারক বলেন, কারও ইচ্ছে দমিয়ে রাখা ঠিক নয়। ছেলে-বউমা যখন নিজেদের বিবাদ মিটিয়ে নিচ্ছেন, তখন অভিভাবকরা যেন পথের কাঁটা না হয়ে ওঠেন। অহনার বাবার বাড়িতে যাওয়া নিয়ে গৌতমের নাছোড় মনোভাব ছিল। মৃদু ধমক দিয়ে বিচারক তাঁকে গোঁ ছাড়তে বলেন। দম্পতির চার হাত এক করেছেন। বিবাদমান পরিবারের সদস্যদেরও হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে বলেছেন। বলেছেন, জীবন তো গোলাপের শয্যা নয়। সেখানে কাঁটাও থাকে। সেই কাঁটা বাঁচিয়েই চলতে হয়। আপাতত তা মেনে নিয়েছে দু’পক্ষই। দেখেশুনে সকলেই বলছেন, একেই বলে মধুরেণ সমাপয়েৎ।

ছবি: বাসুদেব ঘোষ

মৃত্যুতেও রেহাই নেই, বধূর মৃতদেহ থেকে সোনার গয়না গায়েব ডোমের! ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ