Advertisement
Advertisement

Breaking News

শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডেও হুঁশ ফেরেনি, ঘাটালে রমরমিয়ে চলছে চোলাই কারবার

টাকা দিলেই মেলে অনুমতি, দাবি চোলাই ব্যবসায়ীদের৷

Hooch trade in Ghatal
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:November 30, 2018 5:43 pm
  • Updated:November 30, 2018 5:43 pm

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বিষমদের কারবার রুখতে পুলিশ ও আবগারি দপ্তরকে শক্ত হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু, কোথায় কী? মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ও শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে ১২ জনের মৃত্যুর পরও হুঁশ ফেরেনি ঘাটালের আবগারি দপ্তরের৷ ঘাটাল ব্লকের মনশুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের বরকতিপুর ও দীর্ঘগ্রামে রমরমিয়ে চলছে চোলাই মদের কারখানা৷ পাইকারি হারে পাচার হয়ে যাচ্ছে লিটার-লিটার চোলাই৷ তা মোটরবাইক বা সাইকেলে চাপিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ভিন জেলায়৷ সব জেনেও হুঁশ নেই আবগারি দপ্তরের কর্তাদের৷ তবে, স্থানীয়দের অভিযোগ বেশ তৎপর প্রশাসনিক কর্তা৷ এলাকায় রমরমিয়ে চলা চোলাই কারবারের অভিযোগ প্রসঙ্গে আবগারি দপ্তরের ঘাটাল ওসি তারক মাহাতো বলেন, “মাঝে-মাঝেই চোলাই কারখানায় হানা দেওয়া হয়৷ গ্রেপ্তারও হয়৷ অভিযোগ এলে ফের অভিযান চালানো হবে৷”

[স্মাগলিংয়ের বিরুদ্ধে পুলিশকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]

তখনও ভোর হয়নি৷ শুক্রবার ঘাটালের মনশুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের বরকতিপুর ও দীর্ঘগ্রাম৷ তখনও দাউদাউ করে জ্বলছে উনুন৷ উনুনে চাপানো হয়েছে বড় হাঁড়ি৷ হাঁড়িতে টগবগ করে ফুটছে পচা গুড়৷ সেই বাষ্প থেকে গড়িয়ে পড়ছে চোলাই৷ টাটকা গরম গরম চোলাই নিমেষে পাচার হয়েও যাচ্ছে মোটরবাইকে৷ হাতে গোনা জনা কুড়ি মোটরবাইক আরোহী দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভাটির কাছে৷ পরে সংখ্যাটি আরও বাড়তে থাকে৷ চোলাই নিতে লাইন পড়ে যায় এক একসময়৷ উৎসবের মরশুম এলেই তা বেড়ে কয়েক গুণ হয়ে যায় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চোলাই ব্যবসায়ী৷ তিনি বলেন, “পুলিশ ও আবগারিকে একটু এইসময় আমরা সমঝে চলতে বলি৷ বিনিময়ে মোটা টাকা দিতে হয়৷ তাতে কোনও ক্ষতি নেই৷ পয়সা উসুল হয়ে যায়৷” 

Advertisement

[সাঁতরাগাছি ওভারব্রিজে পদপিষ্টের ঘটনায় জমা পড়ল তদন্ত রিপোর্ট]

Advertisement

দোলইপাড়া, মণ্ডলপাড়া, খাঁপাড়া, ধাড়া পাড়া, পণ্ডিতপাড়ার প্রায় প্রতিটি ঘরে চোলাই মদের কারখানা চলছে অবাধে৷ একটু দূরেই রয়েছে কালীতলা বারোয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি আইসিডিএস কেন্দ্র৷ রয়েছে বেশ কয়েকটি পুকুর৷ সেই পুকুরের জল মিষকালো৷ উড়ছে মশা মাছি৷ দুর্গন্ধে টেকা দায়৷ তবে, এই রেওয়াজ দু’এক বছরের নয়, চলছে বছরের পর বছর৷ মনশুকার দীর্ঘগ্রামকে বলা হয় চোলাই মদের রাজধানী৷ আবগারি দপ্তর থেকে যে বার কয়েক হানা দেওয়া হয়নি, তা নয়৷ মাঝে মাঝেই হানা দেওয়া হয়৷ এমনকী গ্রেপ্তারও করা হয়েছে কয়েকজন চোলাই ভাটির মালিককে৷ দু’দিন জেলের ভাত খেয়ে গ্রামে ফিরে এসে চলে চোলাই তৈরির কারবার৷

[কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ, ধুন্ধুমার দুর্গাপুর শিল্পতালুকে]

চোলাই নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই দু’গ্রামের বাসিন্দারা৷ স্থানীয়রা জানান, মাঝে-মাঝে গ্রামের মানুষ অতিষ্ট হয়ে চোলাই কারখানায় ভাঙচুর চালায়৷ কিন্তু, ফের গজিয়ে ওঠে চোলাই তৈরির কারখানা৷ ঘাটাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাজি বলেন, “আবগারি দপ্তর কী জন্য রয়েছে বলতে পারেন? ওদের মদতেই তো চোলাইয়ের রমরমা৷ ওরা সব জানে৷ আমরাও খুব উদ্বিগ্ন৷”

ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ