Advertisement
Advertisement
Hooghly

ভোটের ডিউটি থেকে ‘বাদ’, দেশের কাজ করতে চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষক

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বলে ভোটের ডিউটি থেকে প্রথমে বাদ দেওয়া হয় ওই শিক্ষককে।

Hooghly's teacher with disability wins praise for accepting election duty

শিক্ষক ভানুপ্রকাশ দে। নিজস্ব চিত্র

Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 4, 2024 3:55 pm
  • Updated:May 4, 2024 3:55 pm

সুমন করাতি, হুগলি: বাঁ হাতের কবজি থেকে নেই। তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। নথিপত্র দেখে ভোটের ডিউটি থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। কার্যত ভেঙে পড়েছিলেন ভানুপ্রকাশ দে নামে হুগলির হরিপালের দ্বারহাট্টা রাজেশ্বরী ইনস্টিটিউশনের ইতিহাসের ওই শিক্ষক। সরকারি কর্মী হিসাবে তাঁকে নির্বাচন অর্থাৎ দেশের কাজ থেকে বঞ্চিত না করার আবেদন জানান প্রশাসনের কাছে। তাঁর আর্জি মঞ্জুর করেছে প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের নিয়ে বিশেষ বুথে ভোটকর্মী হিসাবে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তিনি।

নানা কারণে ভোটের কাজ থেকে যেখানে অব্যাহতি চান বহু সরকারি কর্মী, সেখানে ভানুপ্রকাশে এই আগ্রহের প্রশংসা করেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। প্রশাসনের পদক্ষেপে বেজায় খুশি হরিপালের ওই শিক্ষক। তিনি জানান, স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি তিনি যাবতীয় কাজ করেন। মোটরবাইক চালাতে পারেন। নিয়মিত সাঁতার কাটেন, যোগব্যায়াম করেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও কাজেই তেমন সমস্যা হয় না। নিজেকে প্রতিবন্ধী বলে ভাবিও না। তুচ্ছ কারণে নিজেকে গুটিয়ে রাখতেও চাই না। ভোটের দায়িত্ব অন্যদের মতোই পালন করতে পারব।’’

Advertisement

জেলাশাসক মুক্তা আর্য নিজে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে ভানুপ্রকাশকে বাহবা দিয়ে গিয়েছেন। জেলাশাসক জানান, এ বার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা রয়েছে, প্রতি জেলায় অক্ষমতাযুক্ত ব্যক্তিদের (পার্সনস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি) নিয়ে বুথ থাকবে। সেই অনুযায়ী হুগলিতেও এমন একটি বুথ থাকবে। সেই বুথে ভোটকর্মীর দায়িত্ব পালন করবেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সরকারি কর্মীরা। সেখানেই ভানুপ্রকাশ দায়িত্ব সামলাবেন। জেলাশাসকের কথায়, ‘‘যাঁরা পারবেন, তাঁদেরই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘আগে রায়বরেলিতে জিতুন, তার পর…’, আচমকাই কাসপারভের খোঁচা রাহুলকে!]

প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, এই ব্যক্তিরা সমাজের মূলস্রোতেই আছেন। পড়াশোনা করেছেন, সরকারি চাকরি করছেন, সাধারণ জীবনযাপন করছেন। কোনও ক্ষেত্রেই তাঁরা পিছিয়ে নেই। ভোটের দায়িত্ব পালনেও তাঁরা সক্ষম। ভানুপ্রকাশ স্কুলে চাকরি করছেন ২০০৭ সাল থেকে। পশ্চিম মেদিনীপুরে কর্মরত থাকার সময় ৪ বার, ২০১৮ সালে হুগলিতে আসার পরে ৩ বার ভোটের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাদ পড়েন গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে।

তিনি বলেন, ‘‘চতুর্দিকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভোটের ডিউটি করতে যাবেন। আমার স্কুলের প্রায় সকলেই দায়িত্ব পেয়েছেন। সেখানে আমি বাড়িতে বসে থাকব, সেটা মানতে পারিনি। নির্বাচনের কাজকে দেশের কাজ বলেই মনে করি।’’ এবার ভোটকর্মীদের তালিকা থেকে নাম বাদ পড়তেই ভানুপ্রকাশ জেলাশাসকের কার্যালয়ে দরখাস্ত জমা দেন। তাঁকে ওই দায়িত্ব দেওয়ার আরজি জানান। বিষয়টি জেলাশাসকের কানে যেতেই তিনি তৎপর হন। ভানুপ্রকাশ বলেন, ‘‘আমার মতো অনেকেই এই দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা যে পিছিয়ে নেই, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে তা প্রমাণ করে দেব।’’

[আরও পড়ুন: ‘দুঃখ’ মিটল কি? ডেরেকের বাড়িতে বৈঠক শেষে কী বললেন কুণাল?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ