Advertisement
Advertisement
দুর্গা

কাঁধে সংসারের ভার, বৈঠা হাতেই পুজো কাটে দশভুজা সুপর্ণার

পড়াশোনা করেও জোটেনি চাকরি।

How a girl, who is the only earning member of her family spends puja
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:September 25, 2019 7:37 pm
  • Updated:September 25, 2019 9:38 pm

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: এ এক অন্য দুর্গার কাহিনি। অসুস্থ বাবার চিকিৎসা আর ভাইয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে নিত্য এক অদম্য লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে। কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিতে না দিতেই সংসার চালানোর ভার সে তুলে নিয়েছে নিজের কাঁধে। পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ইচ্ছাকে এখন বাধ্য হয়েই দূরে সরিয়ে রেখে বৈঠা হাতে নৌকা চালিয়ে যেতে হয়। জাল ফেলে চূর্ণী নদীর মাছ ধরে জোগাড় করতে হয় সংসার চালানোর খরচ।

নাম তাঁর সুপর্ণা বিশ্বাস। বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার শিবনিবাস হালদারপাড়া গ্রামে। ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘুম ভেঙে যায় সুপর্ণার। শুরু হয়ে যায় তাঁর জীবন যুদ্ধের লড়াই। মাছ ধরার জাল আর হাঁড়ি নিয়ে প্রতিদিন ভোরে তিনি যান চূর্ণী নদীতে। বৈঠাতে টান দেন। এরপর  নদীর বুকে ঘুরে ঘুরে মাছ ধরেন। সেই মাছ বেচে বাবা দীনবন্ধু টাকা আনেন বাড়িতে। এভাবেই হয় দিন গুজরান। দুপুরের পরও সেই এক রুটিন। দু’মুঠো খাওয়ার পর সন্ধ্যায় আবার তাঁকে যেতে হয় মাছ ধরতে। সাঁঝের আলো নেভার পর ঘরে ফেরা হয় তাঁর। 

Advertisement

suparna-durga

Advertisement

[ আরও পড়ুন: পুজোয় নতুন শাড়ি কিনে দিতে পারেনি বাবা, অভিমানে আত্মঘাতী কিশোরী ]

স্নাতক সুপর্ণার চোখে একটা সময় ছিল অনেক স্বপ্ন। চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর স্বপ্ন ভেঙে যায়। সংসারের হাল ধরতে তিনি তুলে নিয়েছিলেন মাছ ধরার জাল আর বৈঠা। কথায় কথায় সুপর্ণা বলছিলেন, “স্নাতক হওয়ার পর চাকরির অনেক চেষ্টা করেছি। সংসারের যা হাল, তাতে আর পড়াশোনা করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। বাবার পক্ষে আর দিনমজুরের কাজ করাও সম্ভব হচ্ছিল না। উপায় না দেখে বাড়ির কাছের চূর্ণী নদীতে মাছ ধরার সিদ্ধান্ত নিলাম।” 

চূর্ণী নদীর ওপরের আকাশে এখন ভেসে বেড়াচ্ছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। নদীর পাড়ে মাথা দোলাচ্ছে কাশফুল। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে, দেবী দুর্গা আসছেন। চারিদিকে আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে। পড়ন্ত বিকালে চূর্ণীর পাড়ের রাস্তা দিয়ে কেনাকাটা করতে যাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই সুপর্ণার। পরিস্থিতি তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছে, দিনলিপির বদল ঘটবে না কিছুতেই। প্রতিবারের মতো পুজো আসবে, পেরিয়ে যাবে নির্দিষ্ট সময়েও। কিন্তু বৈঠা টেনে আর নদীতে জাল ফেলে বছর কেটে যাবে সুপর্ণার। উমা ফিরে যাবে শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু তাঁর শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হবে কি? উত্তর জানেন না হালদারপাড়ার দশভুজা সুপর্ণা।

[ আরও পড়ুন: ছাত্রীদের কটূক্তির প্রতিবাদ, অভিযুক্তদের হাতে আক্রান্ত TMCP-র ৪ সদস্য ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ