Advertisement
Advertisement

Breaking News

নবমীতে স্ত্রীদের হাতে প্রহৃত হন স্বামীরা, আজব রীতি এখানকার দুর্গাপুজোয়

আদিবাসী ভাষায় চলে চণ্ডীপাঠ।

Husband was beaten by the wife in front of Durga
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:October 18, 2018 8:09 pm
  • Updated:October 18, 2018 8:09 pm

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: নবমীর দিন স্ত্রীদের হাতে প্রহৃত হন স্বামীরা! আদিশক্তির জয়ের বার্তা দিতেই অভিনব এই রেওয়াজ চালু রয়েছে কুলটির আদিবাসী সমাজে।

[এবার পুজোয় আপনিও দুর্গা কিংবা অসুর, জানেন কীভাবে?]

প্রবাদ আছে, এদিনেই স্ত্রীদের সঙ্গে লড়াই বাঁধে স্বামীদের৷ মা দুর্গার রূপ নিয়ে স্ত্রীরা অসুররূপী স্বামীকে যুদ্ধে পরাজিত করেন। নবমীর দিন অভিনব এই কাণ্ড দেখতে পাওয়া যায় কুলটির নিয়ামতপুরের সিংরাই মারাণ্ডির মন্দিরে। কুলটির আদিবাসী সমাজের ধর্মীয় বাবা সিংরাই মারাণ্ডির নির্দেশেই দুর্গা পুজোয় এই রীতি রেওয়াজ চলে আসছে বহু বছর ধরে। মা দুর্গার মূর্তির সামনে এখানে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা হয়। প্রথমে সিংরাই বাবা ও তাঁর স্ত্রী দুলালী অস্ত্র নিয়ে লড়াই শুরু করেন। দুলালীর কাছে পরাস্ত হন সিংরাই। তারপরে আদিবাসী ভক্তরা এক এক করে নেমে পড়েন যুদ্ধে। সিংরাই মারাণ্ডির নির্দেশেই মহিলা ভক্তদের হাতে এদিন প্রহৃত হন পুরুষ ভক্তরা।

Advertisement

সিংরাই মারাণ্ডি নিজের মূর্তি রয়েছে কুলটির নিয়ামতপুরের ওই আশ্রমে। সারা বছর সিংরাইকে শিবের অবতার রূপে পুজো করেন ভক্তরা। অথচ সেই জীবন্ত দেবতা অসুরের রূপ নেয় নবমীর দিন৷

Advertisement

[শহরের পুজোয় নয়া দৃষ্টান্ত, আংশিক দৃষ্টিহীন কুমারী পূজিতা হল সমাজসেবী সংঘে]

বনজঙ্গল প্রকৃতি পুজোয় অভ্যস্ত যে আদিবাসী সমাজ, সেই সমাজেও ঘটা করে হয় দুর্গাপুজো। যার দেখা মেলে কুলটির নিয়ামতপুরে। কুলটির আদিবাসী সমাজের গুরু সিংরাই বাবা নিজে আশ্রম গড়ে হিন্দু দেবদেবীদের পুজোআর্চা করে আসছেন ৩০ বছর ধরে। আদিবাসী দেবতা মারাংবুরুর পুজো হয় ঠিক যে নিয়মে সেই নিয়মেই দুর্গাপুজো হয় কুলটির আদিবাসী পাড়ায়। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীর চার দিনে জমজমাট থাকে নিয়ামতপুরে আদিবাসীদের আশ্রম। দুর্গাপুজোর জন্য কোনও ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতকে ডাকা হয় না। আদিবাসী ভক্তরা নিজেরাই নিজেদের মত পুজো করেন মা দুর্গাকে। পুজোর প্রতিষ্ঠাতা আদিবাসী গুরু সিংরাই বাবা আদিবাসী ভাষায় রূপান্তরিত করেছেন চণ্ডীপাঠ।

[৪৯৯ বছরের পুজোয় প্রতি নবমী নিশিতেই ‘কাঁদেন’ ঘোষবাড়ির দুর্গা]

সাঁওতালি চণ্ডীপাঠেই তিনি সপ্তমীর পুজো শুরু করেন। ভক্তরা ডালি নিয়ে আসেন ও নিজেরাই পুজো করেন চলে যান। দুর্গাপুজোর মধ্যে রয়েছে নানা অভিনবত্ব৷ যা দেখতে ভিড় জমান নিয়ামতপুরের বাসিন্দারা। মা দুর্গার আটচালায় থাকে বিষ্ণু অবতার নরসিংহ। নরসিংহের মূর্তিটি থাকে কার্তিকের পাশেই। আদিবাসী বাবা সিংরাই মারাণ্ডির দাবি মা দুর্গা ও অসুরের লড়াইয়ে হার জিতের বিচার করেন ওই নৃসিংহ অবতার। দুর্গাপুজো প্রচলনের আগে তিনি এরকমই এক প্রতিমার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাই সেভাবেই প্রতিমা তৈরি করিয়েছেন। সিংরাই বাবার স্ত্রী লক্ষ্মী মারান্ডি জানান, এই মন্দিরে সারা বছর মা দুর্গা থাকেন। পঞ্চমীর দিন পুরানো মূর্তি বিসর্জন করে নতুন মূর্তি বসানো হয়। এখানে দশমীর বিষাদ নেই। কারণ মা দুর্গাকে রেখে দেওয়া হয় এক বছর৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ