সৈকত মাইতি, তমলুক: একদিনেই শুকনো নয়। থাকবে বছরভর। এবারের ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে থিম বোধহয় এরকমই। আর তাই পাটের গোলাপ বানাতে ব্যস্ত নিমতৌড়ি হোমের প্রতিবন্ধীরা। আর শুধু বানানোই নয়, নজরকাড়া এই কুটির শিল্পের পসররা নিয়ে স্টলও দিয়েছেন প্রতিবন্ধী মহিলারাই। ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে নিমতৌড়ি তমলুক উন্নয়ন সমিতি। এই সমিতির প্রতিবন্ধীরাই নিজেদের স্বনির্ভর করে তুলতে একাধিক হাতের কাজের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আর তাদের এই হাতের তৈরি নানান সৌখিন কাজ প্রশংসাও কুড়িয়েছে জেলাপ্রশাসনের। কখনও পাটের তৈরি রাখি, পাখি, কন্যাশ্রী লোগো, কখনও আবার প্রতিমার সাজসজ্জা থেকে শুরু করে নানান রকমারি সৌখিন হাতের কাজে বেশ সাড়া ফেলেছিল পার্বতী, রুনু, সুপ্রিয়ারা।
আর এমন অবস্থায় নিজেদের কর্ম দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রেমিক প্রমিকার মন পেতে পাটের গোলাপ বানানোর সিদ্ধান্ত নেয় নিমতৌড়ির প্রতিবন্ধী আবাসিকেরা। সেই মত আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেম দিবসকে কেন্দ্র করে তোড়জোড় শুরু হয়। খড়, পাট, ঝাটা কাঠি আর আঠা, রঙের ব্যবহারে বানানো হয় কয়েক হাজার পাটের গোলাপ। এদিন নিমতৌড়ি হোমে গিয়ে দেখা গেল মিলন মেলাকে কেন্দ্র করে পাটের রংবেরংয়ের গোলাপের পসরা সাজিয়ে বসে কাজে মগ্ন ছিলেন পম্পা দাস, সুপ্রিয়া সামন্ত, রুনু জানা, মালবিকা বেরারা। তাঁরাই জানালেন, ভ্যালেন্টাইনস ডে-কে কেন্দ্র করে এমন হাজার হাজার গোলাপ বানানো হয়েছে। সেগুলিকে কাচের বক্সের মধ্যে রেখে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
আর শুধু নিমতৌড়ি স্টলেই নয়। দিঘা-সহ জেলার বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের হাতের তৈরি স্টল থেকেও দেদার বিক্রি হয়েছে এই গোলাপ। যা তাদের বেশ কিছুটা স্বনির্ভরতারও পথ দেখিয়েছে। হোমের পরিচালন সমিতির সদস্যা আল্পনা মাইতি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে তাদের হাতের তৈরি পাটের গোলাপ খুব সহজেই অনেকদিন সুরক্ষিত থাকবে। এই উপহার মনের মানুষটির স্মৃতিকে অনেকটাই তাজা রাখবে। তমলুক নিমতৌড়ি উন্নয়ণ সমিতির সম্পাদক যোগেশ সামন্ত বলেন, তাজা গোলাপ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। কিন্তু পাটের তৈরি গোলাপ দীর্ঘদিন রাখা সম্ভব। সে কারণে এর চাহিদাও বেশ রয়েছে। পড়াশুনোর পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের হাতের কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যেই আমাদের এই প্রয়াস।
[ছবি: রঞ্জন মাইতি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.