ফাইল ছবি
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: হুগলির (Hooghly) সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে (Locket Chatterjee) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বর্ধমান বিভাগের। আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের দায়িত্ব কলকাতার। আবার হাওড়ার এক নেতা পেয়েছেন মেদিনীপুর বিভাগের দায়িত্ব। অন্যদিকে কলকাতার এক নেতাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গ জোনে। নয়া রাজ্য কমিটি থেকে পুরনো নেতাদের বাদ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ-বিদ্রোহ তো চলছেই। এবার সামনেই যখন পুরসভাগুলির নির্বাচন, তখন জোন ও বিভাগের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তরা কতটা পুরভোটের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে গেরুয়া শিবিরের (BJP) অন্দরে।
২২ জানুয়ারি চার পুরসভার ভোট। তারপর ফেব্রুয়ারিতে বকেয়া থাকা রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলির নির্বাচন। তার আগে জেলা ও বিভিন্ন জোনের দায়িত্বে যাঁদের আনা হয়েছে তাঁদের অধিকাংশেরই সংশ্লিষ্ট জেলার সঙ্গে ভালভাবে পরিচিতিই নেই। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে প্রশ্ন, জেলার ভূগোলই যাঁরা ভাল করে জানেন না, তাঁরা কীভাবে পুরভোট সামলাবেন! দলের একাংশ মনে করছে, জেলার ভূগোল বুঝতেই তো ভোট পার হয়ে যাবে। রাজনৈতিক ইতিহাস তো বহুদূর।
দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও সংগঠন সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীরা যে নতুন রাজ্য কমিটি করেছেন তা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ চরমে। পাশাপাশি বিভিন্ন জোন বা বিভাগের ইনচার্জ করা নিয়েও দলের অন্দরে অভিযোগ ও ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। পুরভোটের জন্য পাঁচ সদস্যকে নিয়ে রাজ্যের তরফে কমিটির আহ্বায়ক সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
চন্দননগর পুরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক, তমলুক জেলার প্রাক্তন সভাপতি নবারুণ নায়েককে। নবারুণ পরিশ্রমী নেতা। কিন্তু চন্দননগর একেবারেই নতুন নবারুণের কাছে। হুগলি ও মেদিনীপুরের জোন ইনচার্জ বিধায়ক দীপক বর্মন ও রাজ্য নেতা মনোজ পাণ্ডে। এই দুই নেতার কাছে হুগলি ও মেদিনীপুর জোন সম্পর্কে সম্যক কোনও ধারণা নেই বলে ওই জেলার নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য। জেলার ইতিহাস-ভূগোল, রাজনৈতিক অংক বুঝতেই বেশ কিছুটা সময় লাগবে তাঁদের।
আবার কলকাতা জোনের ইনচার্জ হয়েছেন আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্বে জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা দু’জন যথাক্রমে কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কখনও সংগঠনই করেননি। শিলিগুড়ির জোন ইনচার্জ হয়েছেন কলকাতার নেতা সঞ্জয় সিং। দক্ষিণবঙ্গে রাজনীতি করলেও উত্তরবঙ্গে কখনও দায়িত্বে ছিলেন না সঞ্জয়। বিভাগ ইনচার্জ নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে দলের মধ্যে। উত্তর ২৪ পরগনা বিভাগের ইনচার্জ করা হয়েছে বিধায়ক অশোক দিন্দাকে। হুগলি বিভাগের ইনচার্জ প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। আবার হাওড়া-মেদিনীপুর জোন থেকে অনুপম মল্লিককে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরুলিয়া বিভাগে। এদিকে হাওড়ার আরেক যুব নেতা উমেশ রাইকে দলের মেদিনীপুর বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এর আগে উপনির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটিতে অন্য জেলার নেতা ও বিধায়কদের রাখা হয়েছিল। প্রত্যেকটা উপনির্বাচনেই বিপুল ভোটে হারতে হয় বিজেপিকে। এরপর কলকাতা পুরসভার ভোট পরিচালনার জন্য যে কমিটি করা হয় সেখানেও কলকাতার বাইরের জেলার নেতাদের রাখা হয়েছিল। এবারও একই ধরনের পদক্ষেপে প্রশ্নের মুখে দলীয় সিদ্ধান্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.