বাবুল হক, মালদহ: ধর্ষণ নয়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল মালদহের মাঠ থেকে পোড়া অবস্থায় উদ্ধার হওয়া তরুণীকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রকাশ্যে এসেছে এমনই তথ্য। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরও অজানা মৃতার পরিচয়। আদৌ কি পুলিশের তরফে খোঁজ করা হয়েছে তরুণীর পরিবারের? নাকি অশান্তি এড়াতেই পুলিশের তরফে গোপন করা হচ্ছে আসল ঘটনা? শনিবার মালদহে গিয়ে এমনই প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে মালদহের কোতোয়ালি থানা এলাকার বাসিন্দারা ধানতলার এক ফাঁকা মাঠে তরুণীর পোড়া দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। প্রথমে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। এরপর পৌঁছয় মহিলা থানার পুলিশ ও ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথ। ঘটনাস্থলে যান পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তাঁর উপস্থিতিতেই দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ডিএসপি জানান, “বৃহস্পতিবার সকালেই নারকীয় এই ঘটনা ঘটেছে। তরুণীর ঊর্ধ্বাঙ্গ পুড়ে গিয়েছে। যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে গণধর্ষণের শিকার ওই তরুণী। ধর্ষণের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।” ডিএসপির এহেন মন্তব্যের কিছুক্ষণের ব্যবধানেই পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, গোটা ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষ। গণধর্ষণই হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়। শুক্রবার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর কার্যত পুলিশ সুপারের মন্তব্যেই শিলমোহর পড়ে। জানা যায় যে, ধর্ষণ নয় শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছিল ওই তরুণীকে।
[আরও পড়ুন: গালিগালাজের প্রতিবাদ করায় অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি, কাঠগড়ায় পড়শিরা]
ময়নাতদন্তের রিপোর্টের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ঘটনার পর দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কেন ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা। ৪৮ ঘণ্টা পরও কেন অধরা অভিযুক্তরা? কেন জানা গেল না তরুণীর পরিচয়? এহেন একাধিক প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিভিন্ন মহল। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে মালদহে গিয়ে তরুণী হত্যার ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ পরিকল্পনা মাফিক ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। জোর করে চুপ করিয়ে রাখা হচ্ছে মৃতার পরিবারের সদস্যদের। অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সত্ত্বেও এরাজ্যে মহিলারা সুরক্ষিত নন। মালদহে পৌঁছে যে জায়গা থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল শনিবার সকালে সেখানে যান লকেট চট্টোপাধ্যায়। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গে। এরপর অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মিছিলেও পা মেলান নেত্রী। দলের কর্মীদের নিয়ে দেখা করেন পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে।
দেখুন ভিডিও: