অরূপ বসাক, মালবাজার: ডুয়ার্সে বেড়াতে গিয়েছেন। কোনও হোম স্টেতে গিয়ে উঠেছেন। সুন্দর কাঠের বাড়ি পেয়ে দিব্যি মেজাজ বদলে গেল। কিন্তু আপনি কি জানেন যে ঠিকানায় উঠেছেন সেই বাড়ির কাঠ কোথা থেকে এসেছে। ডুয়ার্সে কাঠ পাচারকারীরা এখন পাচারের অন্য রাস্তা ধরেছেন। তার খোঁজেই sangbadpratidin.in-এর অন্তর্তদন্ত।
[শিকেয় সরকারি সুবিধা, অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাতেও দেদার কালোবাজারি]
বদলে গিয়েছে পাচারের ধরন। আগে পাচারের রুট ছিল জঙ্গল পথ থেকে জলপথ। ডিস্কো সাইকেলে চাপিয়ে গন্তব্য গোবর গাড়ি। এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন বনের পাশে কাঠের বাড়ি। যে বাড়ি বানিয়ে পরে তার থেকে কাঠ খুলে বেচে দিচ্ছে চোরা কারবারিরা।
[কেজি প্রতি ভরতুকি, সার কিনতে গিয়ে প্রতারণার ফাঁদে কৃষকরা]
আদতে জঙ্গল থেকে চুরি করে আনা গাছ কেটে তৈরি বাড়িই এখন টার্গেট করছেন কাঠ মাফিয়ারা। স্থানীয় পঞ্চায়েতের বাড়ি তৈরি এবং বাড়ি বিক্রির নো অবজেকশন সার্টিফিকেটকে কাজে লাগিয়ে নতুন কৌশলে চলছে কাঠ পাচার। বেশ কিছুদিন নজরদারির পর এই চক্রের হদিশ পেলেন বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের বেলাকোবা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্ত। ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি বাজার এলাকা থেকে বমাল সহ জালে এসেছে তিন পাচারকারী। বাজেয়াপ্ত হয়েছে বাড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠ এবং দু’টি ট্রাকও। উদ্ধার হওয়া কাঠের বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ লক্ষেরও বেশি। চক্রে বড় মাথাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করছেন বনকর্মীরা।
[সরকার পাঠাচ্ছে খাদ্যসামগ্রী, কোন চক্র উধাও করছে রেশনের চাল-গম?]
সাম্প্রতিক সময়ে নানা অভিযানে কোটি টাকারও বেশি মূল্যের চোরাই কাঠ উদ্ধার করে এনেছেন বৈকুণ্ঠপুর বনবিভাগের বেলাকোবা রেঞ্জের বনকর্মীরা। গ্রেপ্তার করেছেন পঞ্চাশ জনের বেশি কাঠ পাচারকারীকে। বন কর্মীদের অভিজ্ঞতা বলছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাচারের কৌশল বদলে ফেলছে পাচারকারীরা। বর্ষায় ভরা নদীতে গাছ ভাসিয়ে দেওয়া কিংবা ভোররাতে জঙ্গলে সাইকেলে চেপে ঢুকে ফেরার পথে কাঠ বেঁধে পালিয়ে যাওয়া, বিভিন্নভাবে ডুয়ার্সের জঙ্গল থেকে কাঠ পাচার করে চোরাকারবারীরা। এসবে ধরা পড়ার ভয় ছিল। কিন্তু নয়া পন্থা তথা অভিনব কৌশলে কাঠ পাচারের কথা জানতে পেরেছেন বনকর্মীরা।
[চেনার ভুল! দার্জিলিংয়ের কমলা ভেবে আসলে কী কিনছেন জানেন?]
সম্প্রতি ওদলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালায় বেলাকোবা রেঞ্জ। গ্রেপ্তার করা হয় তিন জনকে। ধৃতদের জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। জানা গিয়েছে, জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বাসিন্দাদের দিয়ে জঙ্গলের চুরি করা কাঠ দিয়ে বাড়ি তৈরি করাচ্ছে পাচারকারীরা। বছর খানেক ব্যবহার করার পর সেই বাড়ি কিনে নিচ্ছে তারা। স্থানীয় পঞ্চায়েতকে দিয়ে লিখিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কাঠ। বনকর্মীদের দাবি, একই পদ্ধতিতে ওদলাবাড়ি থেকে চোরাই কাঠ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল শিলিগুড়ি। বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের বেলাকোবা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দও জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি বন দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। চক্রের মাথাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
[ঘিতে মিশছে রাসায়নিক-চর্বি, কীভাবে ভেজাল ধরবেন?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.