Advertisement
Advertisement
খেজুরি-নন্দীগ্রাম

আমফান ভুলিয়ে দিল পুরনো ‘শত্রুতা’, হাতে-হাত মিলিয়ে ত্রাণ নিলেন খেজুরি-নন্দীগ্রামের মানুষ

তালপাটি খালের পাড়ে হল ত্রাণ বিতরণ।

People of Khejuri and Nandigram came together for Amphan relife
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:June 16, 2020 4:11 pm
  • Updated:June 16, 2020 6:21 pm

দীপঙ্কর মণ্ডল: যেন প্যালেস্তাইনের কোনও গৃহহারার পাশে ইজরায়েলের বন্ধু। ভালবাসার সেই ছবি দেখা গেল খেজুরি-নন্দীগ্রামের সীমানায়। তালপাটি খালের উপর কংক্রিটের সেতুতে।

সর্বনাশা আমফান বাদ-বিচার করেনি। খেজুরি এবং নন্দীগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। রবিবার সকালে কয়েকশো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ পারস্পরিক দূরত্ব রেখে তালপাটি খালের পাড়ে এসে দাঁড়ান। সেতুর উপরে ছোট্ট একটি মাইকে বাজছে ‘আমরা করব জয়।’ বহু বছর আগের ‘দুশমনি’ ভুলে দুই পারের মানুষ পরস্পরের কাঁধে মাথা রাখছেন। কেউ বলছেন আমার পানের বরজ আর নেই। কেউ বলছেন, গাছ পড়ে পুকুরের সব মাছ শেষ। কারও কথায়, খড়ের চাল-মাটির বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বিধ্বংসী ঝড়ে সর্বনাশ হয়ে যাওয়া দুই পাড়ের মানুষ নিজেদের দুঃখ ভাগ করে নিচ্ছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: লকডাউনে আসানসোলের মিউজিশিয়ানদের পাশে বাবুল, আর্থিক অনুদানের জন্য তৈরি হবে ফান্ড]

আপাত অসম্ভব এই সহমর্মিতার ছবি দেখা গেল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের সৌজন্যে। খেজুরির এক এবং দুই নম্বর ব্লকে কয়েকশো পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী, ত্রিপল এবং নতুন কাপড় নিয়ে তাঁরা হাজির। প্রথম শিবির হয় কসাড়িয়া স্কুলের মাঠে। খেজুরি দু’নম্বর ব্লক এর বিডিও রম‍ল সিং বির্দি নিজে মাস্ক, খাবার-দাবার তুলে দেন পরিবারগুলির হাতে। কলকাতার মনীষী চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি শ্যামল মিশ্র করোনা এবং আমফান পরবর্তী যুদ্ধ যুঝতে কোন পথে চলতে হবে সেই রূপরেখা জানান।

Advertisement

Amphan help

খেজুরির জাহানাবাদ, কলাগাছিয়া, বাহারগঞ্জ, কামারদা, দেউলপোতা, ঘোলাবাড় গ্রামের মানুষদের পাশে দেখা গেল নন্দীগ্রামের রানিচকের বহু মানুষকে। খেজুরি একের বিডিও তীর্থঙ্কর ঘোষ ত্রাণ তুলে দিলেন খেজুরি-নন্দীগ্রামের বিভিন্ন গ্রামের মানুষকে। জাহানাবাদ তালপাটি খালের উপর সেতুতে খেজুরি থানার পুলিশ আধিকারিকরাও ত্রাণ বন্টনে অংশ নিলেন। কলকাতা থেকে আসা শিক্ষিকারা গ্রামের মহিলাদের হাতে তুলে দিলেন স্যানিটারি ন্যাপকিন। এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তপন সামন্তর উপস্থিতিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও পালিত হল।

দেউলপোতা গ্রাম্যগোষ্ঠীর তনুজ বেরার প্রতিক্রিয়া, “তালপাটি খালের দুই প্রান্তে খুঁজে দেখলে আপনি এখনও গুলির খোল খুঁজে পাবেন। একটা সময় ছিল যখন এই খালের দুই পাড়ের মানুষের ঘুম হত না। দিনরাত শুধু গুলির শব্দ। আর আজকের এই ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি মিলিয়ে দিল দু’পারের মানুষকে।” খেজুরি বন্দর সৎসঙ্গ আশ্রমের সভাপতি মেঘনাথ মন্ডল বলেন, “তালপাটি খালে একসময় নৌকা চলত। বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের একমাত্র মাধ্যমে ছিল এই খাল। যা এখন মজে গিয়ে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দুই পাড়ের হাজার হাজার কৃষক। একটু জল জমলেই মাঠে ফসল পচে যায়।” বিডিও তীর্থঙ্করবাবু সমস্যার কথা শুনলেন। তিনি জানালেন, মজে যাওয়া খাল পরিষ্কার করতে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

[আরও পড়ুন: ছেলের পর এবার করোনা পজিটিভ পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ, উদ্বিগ্ন শাসকদল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ