সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গণবন্টনে নিজের কুকর্ম ঢাকতে ‘মাওবাদী’ তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন। অভিযুক্ত রেশন ডিলারকে শোকজ করল পুরুলিয়া জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর। শোকজ করা হয়েছে আরও এক রেশন ডিলারকে। জেলার ১০ জন রেশন ডিলারকে সাসপেন্ডও করেছে খাদ্য দপ্তর। রাজ্য সরকারের কড়া পদক্ষেপে নড়েচড়ে বসেছেন পুরুলিয়ার রেশন ডিলার ও গণবন্টনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা।
রাজ্যে গণবণ্টন ব্যবস্থায় অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেশন দোকানে নজরদারি চালানোর জন্য আবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দায়িত্ব দিয়েছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই জেলাজুড়ে অসাধু রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে জেলা খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। তারই ফল মিলল হাতেনাতে।
রাতের অন্ধকারে হানা দিয়ে মাওবাদী রেশনের সামগ্রী লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তাই জনগণকে পরিমাণ মতো সামগ্রী দেওয়া যাচ্ছে না। জেলার খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা যখন পুরুলিয়ার ঝালদায় গিয়েছিলেন, তখন এমনই অভিযোগ জানিয়েছিলেন ঝালদার খামার এলাকার রেশন ডিলার শক্তিপদ মণ্ডল। এমনকী, মাওবাদী তোলা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে অসঙ্গতি মেলে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের বক্তব্য, পরিমাণমতো সামগ্রী না দেওয়া, দোকান না খোলার মতো বেনিয়ম ঢাকতেই ‘মাওবাদী’ তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন ওই রেশন ডিলার। প্রাথমিক তদন্তের পরই অভিযুক্ত রেশন ডিলারকে শোকজ করে পুরুলিয়া জেলা খাদ্য দপ্তর। শেষপর্যন্ত শোকজ করা হল ঝালদার খামার এলাকার রেশন ডিলার শক্তিপদ মণ্ডলকে। শোকজের মুখে পড়েছেন আড়শার পুয়াড়ার সুভাষ চন্দ্র মাহাতোও। পুরুলিয়ার সুন্দরাডি, বেলকুঁড়ির শ্রীপতি গোপ, পোদলাড়া গ্রাম-সহ দশটি এলাকার রেশন ডিলারদের খাদ্য দপ্তর সাসপেন্ড করেছে বলেও জানা গিয়েছে।
পুরুলিয়ার মহকুমা খাদ্য নিয়ামক বিশ্বজিৎ বর্মন বলেন, “এই সাসপেন্ড হওয়া রেশন ডিলাররা যে স্রেফ কম পণ্য দিচ্ছেন, তা কিন্তু নয়। নিয়মিত দোকান না খোলা, কাগজপত্র ঠিকঠাক না থাকা, মজুতে গরমিলের কারণে তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.