Advertisement
Advertisement
পরিযায়ী শ্রমিক

৩৪৯ কিমি পথ হাঁটাই সার, বাড়ির বদলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ঠাঁই পরিযায়ী শ্রমিকদের

নাকা তল্লাশিতেই পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যেতেই বিপত্তি।

Six migrant labourers walks 349 KM, but don't come back home
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 13, 2020 6:05 pm
  • Updated:May 13, 2020 6:11 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: প্রায় টানা চারদিন ধরে দু’রাজ্য পার হয়ে ৩৪৯ কিমি হেঁটেও বাড়ি যাওয়া হল না ছয় পরিযায়ী শ্রমিকের। ঝাড়খণ্ড  লাগোয়া পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের ধবনী নাকা পয়েন্টে মঙ্গলবার পুলিশের নজরে পড়েন তাঁরা। মুর্শিদাবাদের ওই ছয় পরিযায়ী শ্রমিকের ঠিকানা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে।

লকডাউনের বেশ কিছুদিন আগে পেটের টানে মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ এলাকা থেকে এই ৬ শ্রমিক রাজমিস্ত্রির কাজ করতে ওড়িশার কেওনঝড়ে যান। তাঁদের মধ্যে দু’জন নাবালক। কিন্তু অভাবের তাড়নায় কাজের সন্ধানে তাঁদের গ্রাম ছাড়তে হয়। কেওনঝড়ে একটি ঠিকাদার সংস্থার অধীনে নির্মাণ কাজে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। সেখানেই একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। প্রায় হঠাৎ করে লকডাউনে তাঁরা আটকে যান। লকডাউনের প্রথম দিকে ওই ঠিকাদার সংস্থা তাঁদের খাবার দিচ্ছিল। প্রায় সব কিছুই ছিল ঠিকঠাক। কিন্তু গত এক মাস থেকে তাঁরা খাবার দেওয়া বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ। ফলে চরম সমস্যায় পড়েন উপার্জনহীন হয়ে থাকা এই শ্রমিকরা। হাতে যে টাকাপয়সা ছিল তা দিয়েই একবেলা খেয়ে দিন অতিবাহিত করছিলেন। কিন্তু সঞ্চয়ের অর্থ একেবারে শেষ হয়ে যাওয়ায় বাড়ি যেতে তাঁরা হাঁটা পথকেই বেছে নেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: লকডাউনে বিপাকে, সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়ার পথে আটক নেপালের ৮ যুবক]

শেখ নাজমি, রোহিত হক, সাদ্দাম শেখরা বলেন, “হাতে আর কোনও পয়সা নেই। ওখানে থাকলে না খেয়ে মরতে হত। তাই বাড়ি যেতে হাঁটা পথ ছাড়া আর উপায় ছিল না।” তাই গত ৯ মে ভোরে ওড়িশা থেকে রওনা দিয়ে ওই রাজ্য পার হয়ে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছন তাঁরা। গত সোমবার রাতে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার জামশেদপুর ছুঁয়ে এদিন বান্দোয়ানে ঢোকার চেষ্টা করলেই নাকা পয়েন্টে পুলিশের নজরে পড়ে যান তাঁরা। এই চার দিনে কি ছিল তাঁদের খাওয়াদাওয়া? একলাস শেখ, রোহিত হক বলেন, “আমাদের কাছে খাবার বলতে ছিল শুধু মুড়ি। সেই মুড়ি আর জল খেয়ে চারদিন ধরে হেঁটেছি।” এদিন অবশ্য বান্দোয়ানে ঢোকার পথে ঝাড়খণ্ড সীমানায় স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরেই তাঁদের হাতে খাবার তুলে দেয় প্রশাসন। কিন্তু কবে বাড়ি পৌঁছাবেন তা তাঁরা জানেন না। তবে বান্দোয়ান ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, এরপর মুর্শিদাবাদের জন্য বিশেষ সরকারি বাস ছাড়লেই তাঁদেরকে তুলে দেওয়া হবে। সেই অপেক্ষাতেই প্রহর গুনছে ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার।

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনাকে পরাস্ত করে ঘরে ফিরল মা ও সদ্যোজাত, খুশির হাওয়া পরিবারে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ