নন্দন দত্ত, বীরভূম: ছেলেমেয়ে ছাড়া একাই দেবী দুর্গা আসছেন লম্বোদরপুরে। সিউড়ির উপকণ্ঠে লম্বোদরপুর গ্রামের অন্নপূর্ণা সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি এবার চামুণ্ডার আরাধনা করবে। যে দেবীর পঁচিশ মাথা, পঞ্চাশ হাত। তিনটি সিংহ এবং দু’টি অসুর।
[‘সবথেকে বড়’র লড়াই উত্তরবঙ্গে, কোচবিহারের বাজি ৮০ ফুটের মূর্তি]
এ শরতে দক্ষিণ ভারতের আদলে এই চামুণ্ডা আরাধনা শুধুমাত্র থিম পুজোর অঙ্গ। সপরিবারে দেবী দুর্গার মূর্তি করেও মাতৃবন্দনার আয়োজন করেছেন লম্বোদরপুরের বাসিন্দারা। তবে এমন থিমের প্রতিমা ও ভাবনা, সবই শহর সিউড়ি থেকে আশেপাশের দর্শকদের মণ্ডপমুখী করার উদ্দেশ্যে। দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক শাশ্বত দাস বলেন, গত বছর মোমের ঠাকুর করা হয়েছিল। তার এক বছর আগে তৈরি হয়েছিল মাটির প্রদীপ, ভাঁড় দিয়ে মণ্ডপ ও প্রতিমা। এবার রণংদেহী অবতারে দেবীকে সামনে আনা হয়েছে। মণ্ডপের মুখেই দক্ষিণ ভারতের রীতি মেনে দু’টি সিংহ থাকছে। ভিতরে থাকবে এক পরীর মূর্তিও। তবে মূল আকর্ষণ দুর্গার ২৫টি মুখ, আর তাঁর ৫০টি হাত। শিল্পী অশোক দাস জানান, “দীর্ঘদিন ধরে প্রতিমা করছি। এমন দেবীমূর্তি আমি আগে করিনি।এর জন্য মুর্শিবাদের কান্দি থেকে লম্বোদরপুরে এসেছি প্রতিমা তৈরির চ্যালেঞ্জ নিয়ে। পঁচিশটা মাথা পরপর লাগাতে হয়েছে। পরে সেই অনুযায়ী হাত।”
[মেয়েকে পিঠে নিয়েই মণ্ডপে যাবেন বাগডোগরার ‘উমা’]
অশোকবাবুর সংযোজন, এমন মূর্তিই এবারের লম্বোদরপুরের পুজোর আকর্ষণ। দেবীর সঙ্গে লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী থাকছেন না কেন। এর জবাবে সার্বজনীন কমিটির কর্তারা বলছেন, অসুর নিধনে স্বর্গের দেবতারা দুর্গাকে সৃষ্টি করেছিলেন। নিজেদের অস্ত্রে সুসজ্জিত করে তাঁকে রণক্ষেত্রে পাঠিয়েছিলেন।রণংদেহী দুর্গার সামনে তখন শুধু মহিষাসুর। নানা ছলে, নানা কৌশলে অসুর আসছে মা দুর্গাকে আক্রমণ করতে। তাই মায়ের ক্ষিপ্রতা যেন ২৫টি মাথার মতো ঘুরছে। দশ হাত তখন ৫০ হাতের শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই মণ্ডপে থাকছে দু’টি অসুর। আর তিনটি সিংহ। এভাবেই রণক্ষেত্রে দুর্গার যুদ্ধং দেহী মেজাজটিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হবে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের আশা, এবার অন্যরকম প্রতিমা দেখতে ভিড় উপচে পড়বে।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ