পলাশ পাত্র, তেহট্ট: ২৯ এপ্রিল রাজ্যের আর সাতটি কেন্দ্রের সঙ্গে ভোটগ্রহণ কৃষ্ণনগরে৷ শনিবারই শেষ দফার প্রচার ছিল৷ আর এই দিনটাকেই নতুন ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগের জন্য বেছে নিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র৷ কৃষ্ণনগরের দ্বিজেন্দ্র মঞ্চে জেলার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়েছিলেন তিনি৷ তাঁদের কথা শুনে, প্রশ্নের উত্তর দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে একেবারে গাইড হয়ে উঠলেন৷
[ আরও পড়ুন: ইভিএমে প্রতীকের নিচে বিজেপি নাম, বারাকপুরে তৃণমূলের অভিযোগ খারিজ কমিশনের]
যুবক-যুবতীদের হাজারও জিজ্ঞাসা, বিস্ময়ের মাঝে মাইক্রোফোন হাতে স্টেজে দাঁড়িয়ে মহুয়া মৈত্র একের পর এক উত্তর দিতে দিতে কাটালেন এক ঘন্টারও বেশি সময়৷ ভোটাররাও মন দিয়ে শুনলেন তাঁর কথা। চকদিগনগর থেকে আসা নতুন এক ভোটার প্রশ্ন করেন, ‘লোকসভায় ভোটের পর আপনি দিল্লি থাকবেন। তখন আপনাকে পাব কীভাবে?’ জবাবে মহুয়া জানান, ‘সংসদে যখন থাকব, তখন থাকতে পারব না। কিন্তু বাকি সময়ে তো এখানেই থাকব। আমি করিমপুরে বিধায়ক হয়ে ওখানে বেতনভূক কর্মী রেখেছি। ওখানে যেভাবে কাজ করেছি, সেভাবেই এখানেও কাজ করব। তবে এটা লোকসভা৷ মনে রাখতে হবে, এর অধীনে সাতজন বিধায়ক রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে কাজ করতে হবে।’ পাশ করার পর কীভাবে কর্মসংস্থান হবে? এই প্রশ্ন করেন বিপ্রদাস পাল চৌধুরির, শ্রেয়া চট্টোপাধ্যায়রা৷ উত্তরে মহুয়া বলেন, ‘জব ফেয়ার করব। আমার পরিচিত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এনিয়ে কথা বলব। এটা করার দরকার আছে।’ তিনি আরও জানান, ‘তোমরা মনে করিয়ে দিও। আমার সব মনে থাকবে না। অফিসে এসে বলবে।’
রাস্তা, পার্ক-সহ বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলেন নতুন ভোটাররা। কোন প্রকল্পে টাকা বেশি হয়ে যাবে, কোন প্রকল্পে টাকা কত খরচ হবে – এসব বিশদে বলার মধ্যেই তৃণমূল প্রার্থী জানান, ‘মাথা খাটিয়ে টাকা আনব। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, কাজ করব।’ এদিনের প্রশ্নোত্তর পর্বে মহুয়া কথা বলতে বলতে করিমপুরের বিধায়ক হিসেবে নিজের পারফরম্যান্সের বিষয়টি তুলে ধরেন।
[ আরও পড়ুন: ‘দেশের সবচেয়ে বড় বিপদ মোদি সরকার’, পাণ্ডুয়ার প্রচারে তোপ মমতার]
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক নিয়েও তিনি পরামর্শ দেন, ছাত্র রাজনীতি মানে গুন্ডামি নয়। বাবা মায়েরা কত কষ্ট করে পড়াশোনা শেখাচ্ছেন, তা বুঝতে হবে৷ এখনও বিদেশে শিক্ষকদের দেখলে তিনি উঠে দাঁড়ান, সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মহুয়া বলেন, ‘কলেজে গন্ডগোল নিয়ে দলের বদনামও হয়েছে। আমি বলছি, তোমরা খারাপ কিছু করবে না। আমি তোমাদের পাশে থাকব।’ ভোটের আগের শেষ প্রচারে সব প্রার্থী যখন ভোট প্রচারে মগ্ন, তখন মহুয়ার এই অভিভাবকসুলভ আচরণ সকলেরই নজর কাড়ল। সকালে নতুন ভোটারদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব সেরে আবার দুপুরে কৃষ্ণনগরের রাধানগর মাঠ থেকে ব়্যালি করেন মহুয়া মৈত্র৷ করিমপুরের বিধায়ক হিসেবে সাফল্যের পর এবার তিনি দিল্লির রাজনীতিতেও একইরকম সফল হবে বলে বিশ্বাস তাঁর নিজের এবং দলের৷
দেখুন ভিডিও: