সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: এ যেন অকাল ভাইফোঁটা। শাঁখ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত আকাশ-বাতাস। চলল খোল-করতাল সহযোগে দেদার লাড্ডু বিলি। পথচলতি মানুষ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন সে দৃশ্য। ঘটনাস্থল – অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবার। বজবজ দু’নম্বর ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে সাতগাছিয়া বিধানসভার পাড়ায়-পাড়ায়, রাস্তার মোড়ে বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয়েছিল এই অকাল ভাইফোঁটার। উদ্দেশ্য ছিল একঘেয়েমি কাটিয়ে ভোটারদের কাছে প্রচারে নতুনত্বের স্বাদ পৌঁছে দেওয়া।
[ আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্রের উদাসীনতায় হয়নি ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান’, নাম না করে ভারতীকে খোঁচা দেবের]
বৃহস্পতিবার প্রথম ফোঁটাটি দেওয়া হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। তিনি অবশ্য সশরীরে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তবু এলাকা জুড়ে ছিল তাঁরই উপস্থিতি। সকাল সকাল প্রার্থীর ছবিতে ফোঁটা দিলেন বজবজ দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রীতা মিত্র, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী রুনা দাস সাঁতরা-সহ অনেকেই। যুব তৃণমূল সভাপতির কপালে সকলেই এঁকে দিলেন মঙ্গলতিলক। ধান-দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদও করলেন তাঁরা। ছবিতে তাঁর মুখে ছোঁয়ানো হল লাড্ডু। তারপর সবাই মিলে বেরিয়ে পড়লেন পাড়ায়-পাড়ায়। খোল-করতাল বাজিয়ে মিছিল করে ঘুরলেন দলীয় কর্মী সমর্থকরা। প্রার্থীর নামে চলল জয়ধ্বনি। রাস্তার মোড়ে, পাড়ায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষের কপালে এঁকে দিলেন জয়তিলক। বাদ গেলেন না সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি সমর্থকেরাও। জোড়া ফুল আঁকা লাড্ডু খাওয়ানো হল পথচলতি মানুষ, স্থানীয় দোকানদার সকলকেই। নোদাখালি বাজার থেকে শুরু হয় মিছিল৷ থানাপাড়া, চকবাঁশবেড়িয়া হয়ে এই মিছিল শেষ হয় ধনচেবেড়িয়াতে।
[ আরও পড়ুন: ‘দিলীপ ঘোষ জালি মাল’, বললেন প্রতিদ্বন্দ্বী শিব সেনা প্রার্থী অশোক সরকার]
বজবজ দু’নম্বর ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রচারে বেরিয়ে প্রচুর মানুষের সাড়া পাচ্ছি। সকলেই চান উন্নয়ন। বিজেপি এখানে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তৃণমূল তা প্রতিহত করেছে। সব ধর্মের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাই অকাল ভাইফোঁটার আয়োজন।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রীতা মিত্র বলেন, “মানুষে মানুষে বিভেদ কেন থাকবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে আমরা বিশ্বাসী। তাঁর দেখানো পথেই চলছি আমরা। যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ হিসেবে গত পাঁচ বছরে এলাকা উন্নয়নে যা কাজ করেছেন, তাতে খুশি সকলেই। আশা করছি এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানুষ রেকর্ড ভোটে জেতাবেন। তাঁর কপালে তিলক এঁকে দিয়ে তাই আমরা বেরিয়ে পড়েছি প্রত্যেক ভাইয়ের মঙ্গল কামনায়।” লক্ষ্য যাইই হোক, নির্বাচনী মরশুমের মধ্যে অকালেই বাঙালির চিরন্তন উৎসবক পালনে বজবজের তৃণমূল নেতৃত্ব সত্যিই একটা নজির রাখলেন৷