অরূপ বসাক,মালবাজার: দিন নেই, দুপুর নেই, রাত নেই৷ যে কোনও সময় হাতির তাণ্ডবের ভয়৷ জলপাইগুড়ির মালবাজারের বনবসতি এলাকার মানুষজন তাই বৃহস্পতিবার সকাল সকাল ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরলেন৷ তারঘেরা বনবসতির ২০/১৮৪ নং বুথে তাই সকাল থেকেই ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা৷ বনকর্মীদের সঙ্গে পাহারায় ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। নিরাপদে বনবসতির বাসিন্দাদের ভোট দিতে সাহায্য করেন তাঁরা৷
বনবসতি এলাকার ২০/১৮৪ এই বুথটি জঙ্গলের ভিতরে অবস্থায় হওয়ায় হাতির ভয় ছিল ভোটারদের মধ্যে। এই অঞ্চলে দুপুরবেলাতেও জঙ্গল থেকে হাতি বেরিয়ে ভাঙচুর চালায় বাড়িতে বাড়িতে৷ নিরাপত্তার জন্য দরজা, জানলা বন্ধ রাখতে হয়৷ ভোটের দিনও হাতি তাণ্ডব চালালে, ভোট দেওয়ায় বিঘ্ন ঘটবে বলে আশঙ্কা ছিল তাঁদের৷ তাই বৃহস্পতিবার সকাল সকাল ভোট দিয়ে দিয়েছেন বনবসতির বাসিন্দারা।
[আরও পড়ুন:সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়াচ্ছেন বাবুল, কমিশনে অভিযোগ ছাত্র সংগঠনের]
জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহেই দিনের বেলায় গ্রামের রাস্তার মধ্যে এক ব্যাক্তিকে শুঁড়ে তুলে আছড়ে মারে একটি দাঁতাল৷ তাই আতঙ্কে ছিলেন ভোটার থেকে ভোট কর্মী-সকলেই৷ ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার আদিত্য দাস বলেন, ‘‘বুধবার রাতেও হাতি এসেছিল এই এলাকায়। সেই থেকে ভয়ে ভয়ে আছি আমরা। তাই তাড়াতাড়ি ভোট পর্ব মেটাতে চাইছিলাম।’’ এব্যাপারে এলাকার বনদপ্তরের বিট অফসার শংকর ওরাঁও বলেন, ‘‘আমরা রাত থেকেই বনকর্মীদের মোতায়েন করে রেখেছি। এই বুথের বিভিন্ন জায়গায় টহল দিচ্ছে আমাদের কর্মীরা। তাছাড়া পাওয়ার ফেনসিং লাগানো রয়েছে এই বুথের চারদিকে। আমরাও চাইছিলাম তাড়াতাড়ি ভোট হয়ে যাক।’’
[আরও পড়ুন: প্রকাশ্য সভায় বিজেপি নেতাকে খুনের হুমকি, কাঠগড়ায় তৃণমূল]
তবে মালবাজারের রাজডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটে এবার দেখা গেল আরও একটি ছবি৷ ভোট দিয়ে খিচুড়ি, চা-বিস্কুট খেয়ে ভোটাররা বাড়ি ফিরেছেন। মেচ বসতি এলাকায় লড়াই মূলত তিনটি দলের – বিজেপি, সিপিএম এবং তৃণমূলের। বেলা একটু বাড়তেই দেখা গেল, তিন দলের আলাদা পোলিং বুথ৷ সেখানে সিপিএম এবং তৃণমূলে কর্মীরা ভোটারদের চা, বিস্কুট খাওয়ানোর আয়োজন করেছেন৷ ভোট দিয়ে বেরিয়ে সেখানে চা, বিস্কুট খাচ্ছেন এলাকাবাসী৷ আর বিজেপি আয়োজন করেছে খিচুড়ি খাওয়ানোর৷ এসব পেয়ে খুশি বহু দূর থেকে ভোট দিতে যাওয়া মানুষজন৷ তাঁরা বলছেন, সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে খিদে পেয়ে গেছে৷ আবার দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে বাড়ি ফিরে তবে খাওয়াদাওয়া৷ কিন্তু ভোট দিয়ে বেরনোর পরই হাতের কাছে চা-বিস্কুট, খিচুড়ি পেয়ে তাঁরা বেশ খুশি৷