সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: লকডাউন বেড়ে যাওয়ায় যাতে কাউকে অনাহারে দিন কাটাতে না হয়, সেই কারণে পুরুলিয়ায় ‘ভালনারেবল এরিয়া ম্যাপ’ তৈরির কাজ শুরু করল জেলা প্রশাসন। খাদ্য ও সামাজিক সুরক্ষার দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে এই মানচিত্র তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। জঙ্গলমহলের এই জেলায় একেবারে পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে এলাকা তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন ব্লকের কর্মীরা। সেই এলাকাকে ভিত্তি করেই আগামী বুধবার থেকে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের টিম যাবে গ্রামে গ্রামে। সঙ্গে থাকবে প্রশাসনের জেনারেল রিলিফ ফান্ডও।
কিন্তু কী এই ‘ভালনারেবল এরিয়া ম্যাপ’? মোট তিনটি বিষয়কে মাথায় রেখে এই মানচিত্র তৈরি করা হয়। প্রথমত, সরকারি সাহায্য পৌঁছনোর নিশ্চয়তা। দ্বিতীয়ত, এই সাহায্য প্রদানে কোনওরকম সমস্যা হলে তার চটজলদি সমাধান।তৃতীয়ত, প্রয়োজনীয় সুরক্ষার বাইরে আরও কী দরকার তা জেনে সেই মতো ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে জেলা জুড়ে আদিম জনজাতির সংখ্যা কত, পিছিয়ে পড়া জনজাতি কত রয়েছেন, উপার্জনহীন মানুষজনের সংখ্যাই বা কত, সেই সঙ্গে উপার্জন আছে কিন্তু পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি সেই নিরিখে তালিকা তৈরি করে মানচিত্র সম্পূর্ণ করা হবে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্য একেবারে বাড়ি বাড়ি পৌঁছচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই কাজকে সফল করতেই এই ‘ভালনারেবল এরিয়া ম্যাপ’ তৈরি। মঙ্গলবারের মধ্যে কাজ শেষ হবে।” এই কাজের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহকুমাশাসকদের। এই বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার পুরুলিয়ার মহকুমার ব্লকগুলিকে নিয়ে বৈঠক করবে জেলা প্রশাসন। আসলে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র জেলা পুরুলিয়া। এখান থেকে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক পেটের টানে বাইরে কাজ করতে যান। এখন লকডাউনে সেই দিন মজুররা উপার্জনহীন। ফলে ভিনরাজ্য থেকে তাঁদের পরিবারে কোনও টাকা পাঠাতে পারছেন না। তাছাড়া এই জেলাতেই লকডাউনে কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে আছেন বহু মানুষজন। ফলে তারা যাতে কেউ অভুক্ত না থাকেন সেই লক্ষ্যেই এই কাজ।
ছবি: অমিতলাল সিংদেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.