BREAKING NEWS

১৫ চৈত্র  ১৪২৯  বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

পঁচাত্তরেও প্রার্থী অজিত কুম্ভকার, বাড়িতে এসে আশীর্বাদ নিয়ে যাচ্ছেন বিরোধীরা

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: April 9, 2018 10:21 am|    Updated: April 9, 2018 10:21 am

West Bengal panchayat polls: 75-years-old TMC candidate files nomination from Purulia

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ছয় ছেলে-বৌমা। বারোজন নাতি–নাতনি। সঙ্গে বছর সত্তরের সহধর্মিনী। এককথায় বলা যায়, একেবার ভরা সংসার। তবুও রাজনীতি ভুলতে পারেননি। তাই বয়সকে তুড়ি মেরে পঁচাত্তর বছরেও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী তিনি। আসলে অজিত কুম্ভকার যে এই বয়সেও ‘তরতাজা যুবক’।

পুরুলিয়ার বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির চার নম্বর আসন থেকে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন অজিত। আর তারপরই ভোটের ময়দানে তিনি যেন এক্কেবারে সেলিব্রিটি! বয়সই যেন জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে তাঁকে। তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে মিছিল করে ভোট চাইবেন কি! এই বয়সে প্রার্থী হওয়ার ‘সাহস’ দেখানোয় বিরোধীরাই তাঁর ঘরে এসে পেন্নাম ঠুকে যাচ্ছেন। নিয়ে যাচ্ছেন আশীর্বাদ। ফলে মনোনয়ন পর্বে রাজ্য জুড়ে অশান্তির মধ্যেও জঙ্গলমহল বলরামপুরের বড় উরমায় পঁচাত্তরের অজিত কুম্ভকার নিয়ে মেতে উঠেছেন সকলেই।

[দেওয়ালে ছড়ায় ছড়ায় ভোটের প্রচার, বিরোধীদের গোল দিচ্ছে তৃণমূলই]

ajit-kumbhakar-2-web

আসলে রাজনীতি যে অজিত কুম্ভকারের অস্থিতে-মজ্জায়। ১৯৯৮ সালে, যে বছর তৃণমূলের জন্ম সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনেই পঞ্চায়েত সমিতিতে থেকে তিনি ঘাসফুলের প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। তারপর আর প্রার্থী না হলেও সবসময় রাজনীতিতেই ডুবে থাকতেন। অতীতে লোকসেবক সঙ্ঘের সমর্থক ছিলেন। চরকা কাটা, চরকাতে সুতো কেটে খাদির জামাকাপড় পরা – এই সংস্কৃতিই তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে কংগ্রেস। পরে তৃণমূলে। সত্তরেও রাজনীতির ব্যাটে ছক্কা হাঁকাচ্ছেন অজিত কুম্ভকার। স্ত্রী অমরবালা কুম্ভকার-সহ ছেলে, বৌমা, নাতি ও নাতনিরাও তাঁর এই সিদ্ধান্তে খুব খুশি। নাতি–নাতনিরা তো বলেই উঠছে, তারাও দাদুর সঙ্গে যাবে প্রচারে।

কিন্তু অজিতবাবু নিজে কী মনে করছেন? তাঁর মতে, জীবনের লড়াই থেকে পিছিয়ে আসতে নেই। লড়াই জিতলে তবেই তো তিনি রাজা। আর লড়াইয়ে হেরে গেলেও তাঁকে মনে রাখবে সবাই। কিন্তু লড়াই থেকে সরে এলে বলবে ‘কাপুরুষ’। তাই দলের বলরামপুর ব্লক সভাপতি তথা বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ–সভাপতি সুদীপ মাহাতো সমিতিতে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিতেই তিনি রাজি হয়ে যান। তাঁর কথায়, “এই সত্তরে যেমন সংসার, নিজেদের ব্যবসা সামলাই, ঠিক তেমনই নিজের প্রচারও সামলে জিতব।” এই বয়সেও প্রতিদিন ভোর পাঁচটায় উঠে হাত-মুখ ধুয়ে গোয়ালঘরের কাজ সারেন। তারপর স্নান করে চা-বিস্কুট খেয়ে নিজেদের কাপড়ের দোকান খোলেন। প্রায় দশটা পর্যন্ত দোকানে কাটিয়ে বাড়ি। তারপর আবার দুপুরের খাবার খেয়ে দোকানে। ছেলেদের দুপুরের খাবার খেতে পাঠিয়ে খানিকক্ষণ বিশ্রাম। সন্ধ্যায় আবার দোকানের হিসাব-নিকেশ। এটাই নিত্যদিনের রুটিন অজিতবাবুর। এবার সেই রুটিনে যুক্ত হবে ভোট প্রচার। সব শেষে বলাই যায়, পঁচাত্তরেও ‘নট আউট’ অজিত কুম্ভকার।

[শান্তিপূর্ণ হোক পঞ্চায়েত ভোট, দামোদরের তীরে গানে গানে প্রচার বাউল পরিবারের]

 

[ছবি: অমিত সিং দেও]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে