শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: প্রার্থীর নাম ঘোষণা হলেই ভয় দেখানো, মারধর, এমনকী অপহরণের ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। এমনই অভিযোগ তুলে জলপাইগুড়িতে এবার অভিনব কৌশল নিল বিজেপি। আসল প্রার্থীর নাম গোপন রেখে পরিকল্পনামাফিক একাধিক ভুয়ো প্রার্থীর নাম ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এই অভিনব কৌশলে শাসকদলকে বিড়ম্বনায় ফেলা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। জলপাইগুড়ির জেলায় বিজেপির পর্যবেক্ষক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ‘ভুয়ো এক প্রার্থীকে গোপন ডেরায় তুলে নিয়ে গিয়ে শাসানোর পর নিজেদের ভুল বুঝতে পারে তৃণমূলের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী। পরে তাঁকে ছেড়েও দেয়।‘ যদিও পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তাঁর সাফ কথা, ‘আগে সব আসনে প্রার্থী খুঁজে পাক বিজেপি, তারপর তো মারধর-হুমকির প্রশ্ন। সব আসনে প্রার্থী পাচ্ছে না বলেই এই সব অভিযোগ তুলে হাওয়া গরম করতে চাইছে বিজেপি।‘
[ভোটে দরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী, রাজ্যকে চিঠি দিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন]
পঞ্চায়েতে ভোটগ্রহণ এখনও ঢের দেরি। কিন্তু মনোনয়ন পেশকে ঘিরেই তেতে উঠেছে গোটা রাজ্য। অভিযোগ, প্রায় সর্বত্রই বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশে বাধা দিচ্ছে শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা। এমনকী, নাম ঘোযণার পরই প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি মনোনয়ন পেশের শেষদিন পর্যন্ত শাসকদলেক বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। কীভাবে? পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থীর নাম গোপন রাখাই শুধু নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে ভুয়ো প্রার্থীর নাম জড়িয়ে দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলায় বিজেপি প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত। কে কোন আসনে ভোটে লড়বেন, তা চূড়ান্ত। কিন্তু, জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হচ্ছে না। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, প্রার্থীর নাম জানতে পারলেই, তাঁকে হাওয়া করে দেবেন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তাই আসল প্রার্থীর নাম গোপন রেখে প্রতিটি আসনেই একাধিক প্রার্থীর নাম ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ভোটচুরিতে সিদ্ধহস্ত তৃণমূল। এবার প্রার্থী চুরিতেও হাত পাকিয়েছে তারা। গ্রামে গ্রামে এবার চুরি আটকাতে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পরামর্শ মেনে বাঁশের লাঠি তৈরি রাখছি আমরা।‘ অন্যদিকে জলপাইগুড়ি জেলায় বিজেপি পর্যবেক্ষক দীপ্তিমান সেনগুপ্তের বক্তব্য, ‘অন্য কোনও পথ নেই। সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভয় পাচ্ছে তৃণমূল। হলদিবাড়িতে মনোনয়ন পত্র তুলতে যাওয়ায় মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ব্লক সভাপতির। প্রতিটি ব্লকেই একই ঘটনা ঘটছে।‘
[খবর সংগ্রহে গিয়ে আক্রান্ত সংবাদমাধ্যম, কোচবিহারে বেধড়ক মারে আহত ৫ সাংবাদিক]
তবে বিরোধীরা যাই বলুন না কেন, পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পেশকে ঘিরে সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘আগে সব আসনে প্রার্থী খুঁজে পাক বিজেপি, তারপর তো মারধর-হুমকির প্রশ্ন। সব আসনে প্রার্থী পাচ্ছে না বলেই এই সব অভিযোগ তুলে হাওয়া গরম করতে চাইছে বিজেপি।‘
[আসন ৩৮, দাবিদার ১২৪! প্রার্থী বাছতে মাথায় হাত পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের]