গৌতম ব্রহ্ম: এরাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা একলাফে বেড়ে গিয়েছে দশ থেকে পনেরো। এই উদ্বেগের পরিসংখ্যানের মধ্যেও আশার খবর আছে। করোনা আক্রান্ত নয়াবাদের প্রবীণের শারীরিক অবস্থার কোনও অবনতি ঘটেনি। গত তিনদিন ধরে তিনি ভেন্টিলেশনে একই অবস্থায় রয়েছেন বলে বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর। আর তাঁর এই পরিস্থিতিই আশা দেখাচ্ছে চিকিৎসকদের। যদি ভেন্টিলেশন থেকে করোনা আক্রান্ত এই প্রবীণকে ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে তা হবে রাজ্যের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক বড় নজির।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন নয়াবাদের ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। সেখানে বিদেশফেরত বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর দেখাসাক্ষাৎ, মেলামেশা হয়। তারপর সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গত ২৩ তারিখ কলকাতায় ফিরে ভরতি হন বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁর ডায়াবেটিস রয়েছে উচ্চমাত্রায়। ফলে অসুস্থতা তাঁকে বেশি কাবু করে ফেলেছিল। পরে রক্ত এবং লালারসের নমুনা পরীক্ষায় দেখা যায়, তিনি COVID-19 পজিটিভ। এরপর সেইমতো তাঁকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়। পরিবারের সদস্যদেরও হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই সাংসদ, সচেতনতার প্রচারে চেতলা বাজারে নুসরত]
গত বৃহস্পতিবার প্রবীণের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে, তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপর থেকে তাঁর পরিস্থিতির কোনও অবনতি হয়নি বলে আশার কথা শুনিয়েছেন চিকিৎসকরা। সে অর্থে তিনি এই মুহূর্তে স্থিতিশীল। হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার সিঞ্চন ভট্টাচার্য বলেন, “নতুন করে তাঁর অবস্থার কোনও অবনতি হয়নি গত তিনদিন ধরে। যদি এরকমই চলে, তাহলে ভেন্টিলেশনের মাত্রা কমিয়ে দেখা হবে।” হাসপাতাল সূত্রে আরও খবর, তাঁর শরীরের ডায়াবেটিসের মাত্রা বেশি হলেও, রক্তচাপ, হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক আছে। আর সেটাই আশা জোগাচ্ছে চিকিৎসকদের। আবার একইসঙ্গে যেহেতু ডায়াবেটিস থাকায় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিক কম, সেই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে। রোগীর প্রতি মুহূর্তের খবরাখবর পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ই-মেল মারফত। কারণ, পরিবারের সদস্যরা সকলেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তাই সরাসরি হাসপাতালে গিয়ে খবর নেওয়ার উপায় নেই আপাতত।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে সঞ্চিত খাবার শেষ, অভুক্ত বৃদ্ধার বাড়িতে রসদ পৌঁছে দিল কলকাতা পুলিশ]
চিকিৎসকদের একাংশের মত, প্রবীণ কোনও ব্যক্তি করোনা পজিটিভ হয়ে একবার ভেন্টিলেশনে চলে গেলে তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। অন্তত এমন নজির এখনও নেই। তাই যদি নয়াবাদের প্রৌঢ়কে ধীরে ধীরে সংকট কাটিয়ে ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে তা এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।